সাক্ষাৎকারে লেবাননের কোচ
‘আমাদের জন্য কঠিন হবে জেতা’
অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৭-০ গোলে হারের ক্ষতে প্রলেপ দিতে তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশ। তবে জামাল ভূঁইয়াদের সেই ক্ষত আরও বাড়াতে চাইছে ফিলিস্তিনের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে ঢাকায় আসা লেবানন। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় দুই দল মুখোমুখি হবে ২১ নভেম্বর। ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে দুই দলেরই এটি দ্বিতীয় ম্যাচ। সেই ম্যাচের আগে গত পরশু বিকেলে উত্তরা আর্মড পুলিশ লাইনস মাঠে অনুশীলনের পর প্রথম আলোর মুখোমুখি হন লেবাননের ক্রোয়েশিয়ান কোচে নিকোলা ইয়ুরচেভিচ-
প্রশ্ন: বাংলাদেশে প্রথম এসে কেমন লাগছে?
ইয়ুরচেভি: বেশ ভালো। সবকিছু ঠিক আছে। শারজা থেকে এসে কিছুটা ক্লান্ত ছিলাম। এখানে এসে প্রথম দিন হোটেলেই বিশ্রাম নিয়েছি। কালই (পরশু) প্রথম অনুশীলন করলাম। আমরা এখন বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের অপেক্ষায় আছি।
প্রশ্ন: লেবানন দলের সঙ্গে বেশি দিন হয়নি আপনার। সবকিছু গুছিয়ে নিতে পেরেছেন?
ইয়ুরচেভিচ: সেভাবে পারিনি এখনো। মাত্রই গত ১ অক্টোবর দায়িত্ব নিয়েছি। ১২ ও ১৭ অক্টোবর দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছি। দুটিতেই হেরেছে লেবানন। মন্টেনেগ্রোর সঙ্গে ৩-২ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ২-১ গোলে। ১৬ নভেম্বর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে প্রথম ম্যাচ খেলেছি শারজায়। ফিলিস্তিনের সঙ্গে সেই ম্যাচ অবশ্য গোলশূন্য ড্র হয়েছে।
প্রশ্ন: ফিলিস্তিনের সঙ্গে ড্র করায় বাংলাদেশের বিপক্ষে তো জিততেই হবে আপনাদের...
ইয়ুরচেভিচ: এটাকে ঠিক চাপ বলব না, তবে আমাদের জিততে হবে। আসলে ফিলিস্তিনের সঙ্গে ম্যাচটা কঠিন ছিল। দুই দলই একই মানের। বাংলাদেশের সঙ্গে ম্যাচ এখন আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের কোনো ম্যাচ কী দেখেছেন? দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে তো মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭-০ গোলে উড়ে গেছে বাংলাদেশ...
ইয়ুরচেভিচ: জানি, আসলে অস্ট্রেলিয়া অনেক শক্তিশালী দল। তারপরও ওরা খেলেছে ঘরের মাঠে। সে কারণেই অমন হার বাংলাদেশের। এর আগে মালদ্বীপের সঙ্গে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম রাউন্ডে বাংলাদেশের ম্যাচ দুটি দেখেছি। দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে মালদ্বীপ-বাধা পেরোনার বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের সামনে। ম্যাচ দুটিতে বাংলাদেশ ভালো খেলেই জিতেছে। বাংলাদেশ জমাট একটা দল। সবাই মিলে খেলে, ভালো প্রেসিং করে। প্রতি–আক্রমণেও চোখ কাড়ে। আমাদের জন্য সহজ হবে না বাংলাদেশ ম্যাচ।
প্রশ্ন: ফিফা র্যাংকিংয়ে লেবানন ১০৪, বাংলাদেশ ১৮৩। ৭৯ ধাপ এগিয়ে থাকা আপনার দলেরই তো জেতার কথা...
ইয়ুরচেভিচ: র্যাংকিংয়ে আমরা এগিয়ে থাকলেও ওটা কোনো ব্যাপার নয়। মাঠের লড়াইটাই আসল। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ দেশের মাটিতে খেলছে। দেশে তারা ভালো খেলে। যে কারণে আমাদের জন্য সহজ হবে না এই ম্যাচ, কঠিন হবে জেতা। বাংলাদেশকে আমরা সমীহ করি। আর ফুটবলে কী ঘটবে বলা যায় না।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ দলে এমন কোনো ফুটবলার কী আছেন, যাঁকে বিপজ্জনক মনে করছেন?
ইয়ুরচেভিচ: বাংলাদেশ দলে ২-৩ জন খেলোয়াড় আছে, যারা খুব দ্রুতগতির। বিশেষ করে ওপরের দিকে, তবে নাম মনে করতে পারছি না।
প্রশ্ন: মালদ্বীপের বিপক্ষে একটি ও মেলবোর্নে একটি হলুদ কার্ড পাওয়ায় রাকিব ও ডিফেন্ডার সাদ উদ্দিন লেবাননেন বিপক্ষে খেলতে পারবেন না। এটা সুবিধা দিতে পারে আপনার দলকে?
ইয়ুরচেভিচ: আমি ঠিক জানি না বাংলাদেশ দলে কে খেলতে পারবে বা পারবে না। আমি শুধু বুঝি যে ২১ নভেম্বর আমাদের সেরা ফুটবলই খেলতে হবে। সেই লক্ষ্যে যতটা সম্ভব প্রস্তুতি নিচ্ছি।
প্রশ্ন: লেবাননের ফুটবলের কী অবস্থা এখন?
ইয়ুরচেভিচ: ভালো নয়। সেখানে ফুটবলীয় অবকাঠামোর সংকট আছে। লেবাননে কয়কটি ভালো ক্লাব আছে। কিন্তু মাত্র একটা ক্লাব খেলে ঘাসের মাঠে। বাকি সব কৃত্রিম মাঠ। লেবাননে ঘাসের মাঠ নেই বলে আমরা দেশে খেলতে পারছি না। দেশে কৃত্রিম মাঠে অনুশীলন করে জাতীয় দলকে দেশের বাইরে গিয়ে খেলতে হচ্ছে ঘাসের মাঠে। এটা একটা বিরাট সমস্যা। আমাদের ঘাসের মাঠের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। কেননা, কৃত্রিম ঘাস থেকে এসে ঘাসের মাঠে খেলা কঠিন।
প্রশ্ন: লেবাননের এই দলটার কতজন দেশের বাইরে খেলছেন?
ইয়ুরচেভিচ: চারজন। ইন্দোনেশিয়ায় দুজন, মালয়েশিয়ায় একজন। ওরা তিনজন এসেছে ঢাকায়। থাইল্যান্ডে খেলে আমাদের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড, নাম্বার টেন, যে কিনা খুব গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। চোটের কারণে সে আসতে পারেনি। এটা আমাদের জন্য বিরাট ক্ষতি।