পরিবারের সঙ্গে কেমন সময় কাটছে?
সাকিব আল হাসান: আলহামদুলিল্লাহ ভালো সময়ই কাটছে। সবার যেমন কাটে, আমারও তেমন কাটছে।
নানা কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে আছেন। এর মধ্যে আপনার বোলিং অ্যাকশন নিয়েও প্রশ্ন উঠল। সমস্যাটা কেটে যাওয়ায় একটু কি স্বস্তিতে আছেন?
সাকিব: অবশ্যই, স্বস্তিরই তো বিষয়। এটা ভেবে ভালো লাগছে যে আমার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে আর কোনো সমস্যা নেই।
১৫–১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এই প্রথম এমন প্রশ্ন। আপনার বোলিং অ্যাকশন ত্রুটিপূর্ণ, এটা শুনে প্রথমে কেমন লেগেছিল?
সাকিব: কেমন আর লাগবে! আমার মনে হয়েছে, গাড়িরও তো মাঝেমধ্যে পার্টস নষ্ট হয়। সেগুলো ঠিক করা লাগে। ও রকমই একটা কিছু আমারও হয়েছে, যেটা ঠিক করা লাগবে। এমন তো নয় যে সব সময়ই এই সমস্যা ছিল। কোনো কারণে এ রকম হতেই পারে। ওটা ঠিক করলেই সব ঠিক হয়ে যাবে, এই বিশ্বাসটুকু সব সময় ছিল। ওই কারণেই অত বেশি চিন্তা করিনি।
একটু কি অবাক লাগেনি...হঠাৎ কেন এত বছর পরে?
সাকিব: না, অবাক লাগেনি। কারণ, যখন ওরা ওই ভিডিও আমাকে দেখিয়েছে, আমার কাছেও মনে হয়েছে...আসলেই সন্দেহজনক অ্যাকশন।
ঠিক কী কারণে অ্যাকশনটা বদলে গিয়ে থাকতে পারে? যতটুকু মনে পড়ে, সারের হয়ে ওই ম্যাচে বোলিং একটু বেশিই করেছিলেন আপনি...
সাকিব: এ রকম হতেই পারে। আঙুলে অনেক ব্যথা ছিল, অনেক ঠান্ডা ছিল। আর আমার জীবনেই তো আমি একটা টেস্টে বা প্রথম শ্রেণির একটা ম্যাচে কোনো দিন ৭০ ওভার বোলিং করিনি। মনে পড়ে না এত বোলিং আমি কোনো দিন করেছি। এই সময়ে এসে এত ওভার বোলিং, তার আগে পাকিস্তানে টানা দুই টেস্ট খেলে আসা...ওখানেও অনেক বোলিং করতে হয়েছিল। সবকিছু মিলিয়ে কাঁধ ক্লান্ত থাকতে পারে, আঙুলেও ব্যথা ছিল। ফিটনেসের অবস্থাও হয়তো ওই রকম জায়গায় ছিল না। সবকিছুর যোগফলেও এটা হতে পারে। নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল, কেন এটা হয়েছে।
এমনিতেই দেশের হয়ে খেলতে পারছেন না, তার ওপর হঠাৎ ওই সমস্যা। একটু কি আপসেট হয়ে গিয়েছিলেন তখন?
সাকিব: আপসেট না ঠিক। তবে এ রকম একটা সমস্যা হলে তো অবশ্যই খারাপ লাগবে। আবার খারাপ লাগলেই তো শুধু হবে না। নিজেরও বোঝার ব্যাপার আছে, কেন এটা হলো।
বোলিং অ্যাকশন শোধরানোর কাজটা এরপর কীভাবে করলেন?
সাকিব: শ্রীলঙ্কায় খেলতে (এলপিএল) যাওয়ার পর যখন ওরা বলল যে বোলিং করতে পারব না, তখন ওখানে অনুশীলন করেছি। আরেকটু ভালো পরামর্শ পেলে হয়তো ওই সময়ই এটা ঠিক হয়ে যেত। তবে আমার মনে হয়, চেন্নাইয়ের টেস্টটা আরেকটু সময় নিয়ে দিলে তখনই উতরে যেতাম।
চেন্নাইয়ের টেস্টে কী সমস্যা হয়েছিল?
সাকিব: সঠিক বা ভুল কিছু ছিল, তা বলব না। এটাও বলছি না যে আমার ওই সময়ই টেস্টটা পাস করা উচিত ছিল। তবে আমার মনে হয়েছে, ওদের টেস্টের যে সরঞ্জামাদি ছিল, সেগুলো প্রস্তুত ছিল না। আর ওরাও তাড়াহুড়া করেছে। কারণ, আমি তাদের অনেক জোর করেছিলাম টেস্টটা নিতে। হতে পারে ওদের মেশিনারিজ, ক্যামেরা সেটআপ ঠিক ছিল না। ওরা প্রস্তুত ছিল না। তারপরও আমি তাড়াহুড়া করার কারণেই হয়তো ওরা টেস্টটা নিয়েছে।
চেন্নাইয়ের টেস্টে ব্যর্থ হওয়ার পর কী করলেন?
সাকিব: এরপর একটু সময় নিয়ে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। ভালো কিছু বিশেষজ্ঞ পেয়েছি, যাঁরা কিছু বিষয় বিশ্লেষণ করে আমাকে সাহায্য করেছেন। বিশেষ করে সারে কাউন্টি, সারের হেড কোচ গ্যারেথ বেটি আন্তরিকভাবে আমাকে সাহায্য করেছে। যোগাযোগ করার পরই ওরা আমাকে ওয়েলকাম জানিয়ে বলেছে, যখনই আমি যাব, তারা সাহায্য করবে।
সারে ছাড়া আর কারও সাহায্য কি পেয়েছেন অ্যাকশন শোধরানোর কাজে?
সাকিব: না, ও রকম কিছু না। নিজে নিজেই কাজ করার চেষ্টা করেছি। ফোনে কথা হয়েছে সালাহউদ্দীন স্যারের সঙ্গে। তবে ফোনের চেয়ে সামনাসামনি এগুলো আরও ভালো হয়।
এখন তো আপনি মুক্ত, ম্যাচে বোলিং করতে পারবেন। অনুশীলন বা খেলা নিয়ে কী পরিকল্পনা?
সাকিব: দেখি, কী করতে পারি।
ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ টেস্ট খেলতে চেয়েও খেলতে পারেননি। আপনার টেস্ট ক্যারিয়ার কি তাহলে শেষ, নাকি শেষ টেস্টটা এখনো খেলেননি?
সাকিব: এটা নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না।