একটা কার্ডের দামই যখন ১৫ কোটি টাকা!
‘রুকি কার্ড’ কী—সেটা সবার আগে বলা দরকার। একটি বিনিময়যোগ্য কার্ড, যা কেনাবেচা করা যায়। একজন খেলোয়াড়ের ছবি ও তাঁর প্রথম বছরে খেলার সব তথ্য থাকে সেই কার্ডে। ক্যারিয়ারে সেটা ওই খেলোয়াড়ের প্রথম কার্ড—পরে সেই খেলোয়াড় খ্যাতি কুড়ালে এই রুকি কার্ড বিক্রি হয় অনেক টাকায়।
কত টাকায়? আর রুকি কার্ডটি যদি হয় কোবি ব্রায়ান্টের মতো বাস্কেটবল কিংবদন্তির? তাঁর সঙ্গে আবার জড়ানো মর্মস্পর্শী দুর্ঘটনা—মৃত্যু। গত বছর জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মেয়েসহ মারা যান ব্রায়ান্ট।
লস অ্যাঞ্জেলেস লেকার্সে কিংবদন্তি হয়ে ওঠা ব্রায়ান্টের রুকি কার্ড শনিবার নিলামে তুলেছিল গোল্ডিন অকশনস। খেলাধুলার নানা স্মারক নিলামে তুলে খ্যাতি কুড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। নিলামে ব্রায়ান্টের রুকি কার্ড বিক্রি হয়েছে ১ দশমিক ৭৯৫ মিলিয়ন ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ কোটি ২২ লাখ টাকা)।
গোল্ডিন অকশনসের মতে, ‘১৯৯৬–৯৭ টপস ক্রোম রিফ্র্যাক্টরস #১৩৮ কোবি ব্রায়ান্ট রুকি কার্ড—বিজিএস প্রিস্টিন/ব্ল্যাক লেভেল ১০’ নিখুঁত হওয়ার দিক থেকে বিশ্বের সেরা দুটি কার্ডগুলোর একটি।
ব্রায়ান্টের রুকি কার্ড গুণ ও মানের দিক থেকে পুরো ১০এস নম্বরই পেয়েছে, এ কারণেই কার্ডটির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে ‘ব্ল্যাক লেভেল’ স্বীকৃতি। কাল সকাল পর্যন্ত ব্রায়ান্টের এই কার্ডের ক্রেতার নাম প্রকাশ করেনি গোল্ডিন অকশনস।
ব্রায়ান্ট ছিলেন বাস্কেটবলে সত্যিকার কিংবদন্তিদের একজন। পাঁচবারের এই এনবিএ চ্যাম্পিয়ন ৪১ বছর বয়সে মারা যান। অনলাইন বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ইবে–র তথ্যমতে, ব্রায়ান্টের মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তাঁর যেকোনো কার্ডের দাম বেড়ে গিয়েছিল প্রায় ৬০০ শতাংশ।
গোল্ডিন অকশনসের প্রধান কেন গোল্ডিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘কোবি ব্রায়ান্ট (বাস্কেটবলে) সর্বকালের সেরা প্রতিদ্বন্দ্বীদের একজন এবং ভীষণ বৈচিত্র্যময় তাঁর জীবন। তাঁর রুকি কার্ড বিরল স্মারকগুলোর একটি, পৃথিবীতে এমন ব্ল্যাক লেভেল মাত্র দুটি আছে। ১ দশমিক ৭৯৫ মিলিয়ন ডলারে তা বিক্রি হয়েছে—ব্রায়ান্টের যেকোনো কার্ডের ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে বেশি দামের রেকর্ড। তাকে সবাই কতটা ভালোবাসে, এই কার্ড–ই তা প্রমাণ করে।’
সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সর্বকালের সবচেয়ে দামি কার্ডের তালিকায় দশম ব্রায়ান্টের এই রুকি কার্ড। গত বছর বাস্কেটবল কিংবদন্তি লেব্রন জেমসের (২০০৩–০৪ সময়ের) আপার ডেক রুকি কার্ড ১ দশমিক ৮৪৫ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয় (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা)।
আধুনিক যুগে (১৯৮০ সালের পর বানানো) বানানো সবচেয়ে দামি বাস্কেটবল কার্ড এটি। বাস্কেটবলের বাইরে এর চেয়েও দামি কার্ড আছে—গত বছরের আগস্টে বেসবল তারকা মাইক ট্রাউটের রুকি কার্ড বিক্রি হয় ৩ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার।
সব মিলিয়ে রেকর্ডটি বেসবল কিংবদন্তি মিকি ম্যান্টলের। ৫ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছিল তাঁর কার্ড।