এবার কি প্রাণ পাবে সাঁতারের স্কোরবোর্ড
২০১৯ সালের জুনে মিরপুর সুইমিং কমপ্লেক্সে প্রায় ৩ কোটি টাকায় বসানো হয়েছিল ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড। কিন্তু শুরু থেকেই ত্রুটিপূর্ণ এই স্কোরবোর্ডের পর্দায় একসঙ্গে আট লেনের টাইমিং আসে না। সাড়ে চার বছরে তাই একবারও ব্যবহার করা যায়নি এটি। সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে গত ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব রিসার্চ অ্যান্ড টেস্টিং কাউন্সিলকে (বিআরটিসি) অনুরোধ করে চিঠি দেয় এনএসসি। কয়েক দিন আগে বুয়েটের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলত টাচপ্যাডে সমস্যা থাকার কারণেই স্কোরবোর্ডে ঠিকভাবে টাইমিং আসছে না।
বুয়েটের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ত্রুটিপূর্ণ টাচপ্যাড বদলে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এসএসসি)। এনএসসির পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) সুকুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘বুয়েটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টাচপ্যাডের সেনসেভিটি বাড়াতে হবে। এটি সংস্কার করতে হবে। সেই উদ্যোগ এনএসসি নিয়েছে। বুয়েটের প্রতিবেদনের কপিসহ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি আমরা। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নতুন টাচপ্যাড লাগিয়ে দিতে মৌখিকভাবে সম্মতি জানিয়েছে।’
এ মাসেই মিরপুর সাঁতার কমপ্লেক্সে জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতার হওয়ার কথা ছিল। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সেটি পিছিয়ে এখন আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চের দিকে হতে পারে বলে জানিয়েছে সাঁতার ফেডারেশন। তত দিনে স্কোরবোর্ডটি সচল হবে কি না, জানতে চাইলে এনএসসির পরিচালক খুব একটা আশা দেখাতে পারলেন না, ‘প্রক্রিয়াটা একটু সময়সাপেক্ষ। কারণ, এলসি করে বিদেশ থেকে আনতে হবে টাচপ্যাড। কী ধরনের টাচপ্যাড লাগানো হবে, সাঁতার ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।’
ওদিকে সাঁতার ফেডারেশন চায় সমস্যার দ্রুত সমাধান। অচল স্কোরবোর্ডের কারণে সাঁতারুদের ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা বদরুল সাইফ বলেছেন, ‘স্কোরবোর্ডটি একদিনও ব্যবহার করতে পারিনি আমরা। ত্রুটিপূর্ণ থাকায় আজ পর্যন্ত এটি আমরা বুঝেও নিইনি। ২০১৯ সালে সুইমিংপুলের দায়িত্বে থাকা এনএসসি প্রশাসককে স্কোরবোর্ডটি বুঝিয়ে দিয়ে ঠিকাদার বিল নিয়ে গেছেন।’
এনএসসি অবশেষে স্কোরবোর্ড সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও তাতে যেন ঠিক আস্থা রাখতে পারছে না ফেডারেশন। অবশ্য প্রায় তিন কোটি টাকায় বসানো ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড যারা সাড়ে চার বছরেও ব্যবহার উপযোগী করে দিতে পারেনি, তাদের ওপর আস্থা রাখাটা কঠিনই। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের কথায়ও তাই অনিশ্চয়তা, ‘সংস্কারের উদ্যোগ নিলে ভালো। তবে যেনতেনভাবে নয়, সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান দরকার।’