বিডিআর বিদ্রোহে নিহত মহাপরিচালক শাকিল আহমেদ এখনো ভারোত্তোলনের সভাপতি
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে ৫৬ সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে নিহত হয়েছিলেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদও। মৃত্যুর সময় তিনি বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন। মৃত্যুর ১৫ বছর পরও আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে শাকিল আহমেদের নাম দেখা যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে সদস্যদেশগুলোর ফেডারেশনগুলোর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নাম, ঠিকানা, যোগাযোগের ফোন নম্বর ও ই–মেইল ঠিকানা থাকে। অন্যসব তথ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে নাম আছে মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ, পিএসসির। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম দেওয়া আছে উইং কমান্ডার (অব.) মহিউদ্দিন আহমেদের, যিনি বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সহসভাপতি।
শাকিল আহমেদের নাম এখনো সভাপতি হিসেবে থাকার মূল কারণ বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশনে ১৬ বছর ধরে নির্বাচন হয়নি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ভারোত্তোলনে সরকার মনোনীত কমিটি দিয়ে কাজ চালিয়ে আসছে।
২০০৮ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন মেজর জেনারেল শাকিল ও উইং কমান্ডার (অব.) মহিউদ্দিন আহমেদ। ২০১২ সালে সেই কমিটির মেয়াদ শেষে আর নির্বাচন হয়নি। বিকল্প হিসেবে এনএসসি সরকার মনোনীত অ্যাডহক কমিটি দিয়ে কাজ চালিয়ে আসছে।
২০১৬ সালে এনএসসির নতুন অ্যাডহক কমিটি থেকে মহিউদ্দিন বাদ পড়েন। পরে তিনি আবারও ফেরেন ফেডারেশনে। মহিউদ্দিন আহমেদ আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন ফেডারেশনের ডেভেলপমেন্ট কমিটির সদস্য, এশিয়ান ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সদস্যও তিনি।
আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে কেন এখনো সভাপতি হিসেবে মেজর জেনারেল শাকিলের নাম? এই প্রশ্নে মহিউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘নির্বাচন না হলে আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন ফেডারেশন সভাপতি হিসেবে শাকিল আহমেদের নাম বদলাবে না। তারা কোনো সরকার মনোনীত অ্যাডহক কমিটিকে স্বীকৃতি দেয় না। আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন ফেডারেশনের কাছে ২০০৮ সালে নির্বাচনের পর গঠিত নির্বাচিত কমিটিই এখনো বাংলাদেশের স্বীকৃত কমিটি।’
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশনে নির্বাচন কেন হচ্ছে না? মহিউদ্দিন আহমেদ দায় দিচ্ছেন এনএসসির, ‘আমি বারবার এনএসসিকে নির্বাচন করার জন্য চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তারা নির্বাচন করেনি। ২০১২ সালের পর থেকে বারবার অ্যাডহক কমিটি দিয়েছে। ২০১৬ সালে তো আমাকেই বাদ দিয়েছিল। পরে ফেডারেশন চালাতে না পেরে আমাকে আবারও দায়িত্ব দেওয়া হয় সহসভাপতি হিসেবে।’
নির্বাচন না হওয়া প্রসঙ্গে এনএসসির আইন কর্মকর্তা কবিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভারোত্তোলন ফেডারেশন নির্বাচন করার জন্য এনএসসিকে চিঠি দিলে, সেটা এনএসসি ফেলে রাখার কথা নয়। নিয়ম অনুযায়ী চিঠি পেলে এনএসসি নির্বাচন কমিশন গঠন করে। কিন্তু ভারোত্তোলন ফেডারেশন এনএসসিকে চিঠি দিয়েছে, এমন কিছু আমার জানা নেই।’