সাঁতারের পুলে পদক কম জেতেননি রায়ান মার্ফি। ব্যাকস্ট্রোকে বিশেষজ্ঞ এই সাঁতারু অলিম্পিকে চারবারের সোনাজয়ী। ছেলেদের ১০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে একসময় তাঁর দখলে বিশ্ব রেকর্ডও ছিল। মোটামুটি সব মিলিয়ে সাঁতারে সাফল্য কম পাননি যুক্তরাষ্ট্রের এই সাঁতারু। গতকাল প্যারিস অলিম্পিকে ছেলেদের ১০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে মার্ফির ব্রোঞ্জ জয় তাই খুব বড় কোনো ঘটনা নয়। কিন্তু ২৯ বছর বয়সী এই সাঁতারুর ক্যারিয়ারে গতকাল ব্রোঞ্জ জয়ের তাৎপর্য একটু অন্যরকম।
অলিম্পিকের মঞ্চে পদক জয়ের পর যদি জানতে পারেন আপনার অনাগত সন্তান ছেলে না মেয়ে, তখন ওই পদক সোনা, রুপা না ব্রোঞ্জের তৈরি—সেটি ছাপিয়ে মুহূর্তটাই অন্যরকম তাৎপর্য তৈরি করে। মার্ফির ক্ষেত্রেও ঠিক সেটাই ঘটেছে। লা ডিফেন্স অ্যারেনায় বিজয় মঞ্চে পদক বুঝে নেওয়ার পর গ্যালারির সামনে ভিক্টরি ল্যাপ দিচ্ছিলেন মার্ফি। তখন গ্যালারি থেকে তাঁর স্ত্রী ব্রিজেট কন্টিনেন একটি প্লাকার্ড উঁচিয়ে ধরেন। সেই প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘রায়ান, এটা মেয়ে!’
মার্ফির স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। জানুয়ারিতে এই দম্পতির প্রথম সন্তানের মুখ দেখার কথা। মার্ফি জানিয়েছেন গতকাল গ্যালারি থেকে তাঁর স্ত্রী প্ল্যাকার্ড উঁচিয়ে ধরার আগ পর্যন্ত জানতেন না অনাগত এই সন্তান ছেলে না মেয়ে। অলিম্পিকের মতো আসরে পদক জয়ের পুরস্কার হিসেবে স্ত্রীর কাছ থেকে এর চেয়ে ভালো উপহার আর কী হতে পারে!
২৯ বছর বয়সী মার্ফি সংবাদকর্মীদের বলেছেন, ‘এই প্রথম জানতে পারলাম। অবশ্যই এটা জানতাম সে অন্তঃসত্ত্বা। দুজনেই ভেবেছিলাম হয়তো ছেলের মুখ দেখব। সবকিছু আমরা আমাদের ছোট্ট মেয়েকে উৎসর্গ করব।’ মার্ফি আরও জানিয়েছেন, ‘মেয়ের বাবা’ হওয়ার খবর শুনে তিনি রোমাঞ্চিত। তাঁর ভাষায়, ‘এখন পর্যন্ত সাঁতারই ছিল আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সাঁতার মাথায় রেখেই আমি সব সময় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছি। কিন্তু সামনে ভাবনাগুলো পাল্টে যাবে। আমি সত্যিই এমন দিনের অপেক্ষায় আছি।’
রাতটা এমনিতেই বিশেষ ছিল মার্ফির জন্য। দ্বিতীয় অ্যাথলেট হিসেবে ১০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে তিনটি পদক জিতলেন। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে সোনা এবং ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে রুপা জয়ের পর এবার জিতলেন ব্রোঞ্জ। অলিম্পিকে ছেলেদের ব্যাকস্ট্রোক ইভেন্টে তাঁর দেশেরই অ্যারন পেরিসলের গড়া সর্বোচ্চ পদক জয়ের রেকর্ডেও ভাগ বসালেন মার্ফি। অবশ্য ২০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকেই তাঁকে টপকে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।