বাংলাদেশ-নেপাল সিরিজ
খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে কোর্টের বাইরে নেপাল, প্রীতি সিরিজে ‘অপ্রীতির’ সুর
প্রীতি সিরিজ হলেও ‘প্রীতি’ থাকবে কোর্টে, সেই আশা না করাই ভালো। প্রীতির মোড়কে আন্তর্জাতিক ম্যাচ বলে কথা। আর সেটাই মনে করিয়ে দিল বাংলাদেশ-নেপাল পাঁচ ম্যাচের প্রীতি কাবাডি সিরিজ।
পল্টন ময়দানে আজ সিরিজের চতুর্থ ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশি রেফারির একটি সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে নেপাল দল খেলতে অস্বীকার করে বসে। বাংলাদেশ তখন ৩৮-১৯ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে নিশ্চিত জয়ের পথে। মিনিট দশেক পর সফরকারী দল কোর্টে ফিরলে ম্যাচ শুরু হয় বটে, কিন্তু কোনো প্রাণ ছিল না তাতে আর। বাকি সময়টা নিয়ম রক্ষার জন্য খেলেছে নেপাল। ৪৯-২৪ পয়েন্টে জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
চতুর্থ ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলছিল বাংলাদেশ। পয়েন্টও আসছিল সহজে। ২০ মিনিটের প্রথমার্ধে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল ৩১-১৮ পয়েন্টে। দ্বিতীয়ার্ধে এক পর্যায়ে বাংলাদেশ দলের রেইডার আল আমিনকে ধরে ফেলে নেপাল। তখন বাঁশি বাজে এবং দেখা যায় বাংলাদেশের রেইডার হাত ছোঁয়ান মাঝ রেখায়। নেপালের তিনজন আউট হয়ে যান। নেপালের কোর্টে অবশিষ্ট ছিলেন তখন মাত্র একজন, তিনি লাইন আউট হয়ে যান, পুরো দল অলআউট হওয়ায় বাংলাদেশ আরও ২ পয়েন্ট পায়।
এরই প্রতিবাদে নেপাল খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে পুরো দল কোর্টের বাইরে অবস্থান নেয়। শেষে অনেক অনুরোধের পর তারা কোর্টে ফিরে আসে। তবে রেফারি তাঁর সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। নেপালের কোচ লোক বাহাদুর বিস্টের অভিযোগ, ‘বাংলাদেশের রেইডারকে আমরা আটকে ফেলার পর ওই রেইড শেষ হয়ে যায়। রেফারি বাঁশিও দেন। রেফারির বাঁশির পর রেইডার হাত ছোঁয়ার লাইনে। এখানে আমরা ১ পয়েন্ট পাওয়ার কথা। উল্টো আমাদের তিনজনকে আউট করা হলো। বাজে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন রেফারি। শুধু এই ঘটনা নয়, পুরো সিরিজেই এমন পক্ষপাতমূলক রেফারিং হয়েছে।’
দলটির কর্মকর্তা নিরঞ্জন শ্রেষ্ঠা তো চ্যালেঞ্জই দিয়ে বসেছেন বাংলাদেশকে, ‘রেফারিকে সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে হবে। এমন রেফারিং করলে আমরাও বাংলাদেশকে ৫-০ তে হারাতে পারি আমাদের দেশে।’
টুর্নামেন্টের টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল হক অবশ্য রেফারির সিদ্ধান্তকে সঠিক বলেই দাবি করেছেন, ‘রেইডার যখন লাইনে হাত ছোঁয়ায়, ঠিক তখনই রেফারি বাঁশি দেয়। একই সময়ে হয়েছে ঘটনাটি। ফলে রেফারির সিদ্ধান্ত সঠিক।’
প্রথম ম্যাচে ৫৩-২৯ পয়েন্টে জেতে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ৪৫-৪২ পয়েন্টে জিতে সমতা ফেরায় সফরকারী দল। গতকাল ৪২-৩৭ পয়েন্টে জয় পেয়ে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। হাড্ডাহাড্ডি দুটি ম্যাচ শেষে সিরিজে আজই সবচেয়ে সহজ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচসেরা হয়েছেন অধিনায়ক মিজানুর রহমান।
সিরিজের শেষ ম্যাচ ২৮ ফেব্রুয়ারি।