২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

সোনা জয়ের রেকর্ড গড়ে অলিম্পিককে বিদায় টেবিল টেনিস কিংবদন্তির

চীনের কিংবদন্তি টেবিল টেনিস খেলোয়াড় মা লংএএফপি

ক্যারিয়ারে তাঁর অর্জনগুলো নিয়ে একটা বই লেখা সম্ভব। টেবিল টেনিস অঙ্গনে এতটা লম্বা সময় ধরে কেউ দাপট দেখাতে পারেননি বলে আন্তর্জাতিক টেবিল টেনিস ফেডারেশন (আইটিটিএফ) তাঁর ডাকনাম দিয়েছে ‘দ্য ডিক্টেটর’ (একনায়ক) ও ‘দ্য ড্রাগন’। তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, একমাত্র পুরুষ খেলোয়াড় হিসেবে ডাবল গ্র্যান্ড স্লাম, সবচেয়ে বেশি ৬৪ মাস বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ের ১ নম্বরে থাকা (এর মধ্যে টানা ৩৫ মাস শীর্ষস্থান ধরে রাখা)—এক জীবনে আর কী চাই!

মা লংয়ের তবু কিছু চাওয়ার ছিল। চীনের হয়ে অলিম্পিকে সবচেয়ে বেশি সোনার পদক জেতা। সেই চাওয়া গতকাল রাতে পূরণ হয়েছে। প্যারিস অলিম্পিকে ছেলেদের দলগত টেবিল টেনিস ফাইনালে সুইডেনকে ৩-০ ম্যাচ পয়েন্টে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চীন। এর মধ্য দিয়ে চীনের হয়ে রেকর্ড ৬টি সোনা জয়ের কীর্তি গড়েছেন দলটির অধিনায়ক মা লং। এত দিন ৫টি করে সোনা জিতে মা লংয়ের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে ছিলেন দুই ডাইভার উ মিনজিয়া ও চেন রুওলিন এবং জিমন্যাস্ট জু কাই।

অলিম্পিক টেবিল টেনিস ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সোনার জয়ের রেকর্ডটা ২০২০ টোকিও অলিম্পিকেই গড়েছিলেন মা লং। কাল ষষ্ঠ সোনা জিতে নিজের রেকর্ডটাকে আরও সমৃদ্ধ করেছেন। অলিম্পিকে এই খেলায় ৪টির বেশি সোনার পদক মা লং ছাড়া আর কারও নেই। ২০১২ লন্ডন অলিম্পিক দিয়ে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে’ অভিষেক হয় তাঁর। তখন থেকে এখন পর্যন্ত সব অলিম্পিকেই অন্তত একটি সোনা জিতেছেন।

অলিম্পিক টেবিল টেনিসে ৬টি সোনাজয়ী একমাত্র খেলোয়াড় চীনের মা লং
আইওসি

২০১২ লন্ডন, ২০১৬ রিও ডি জেনিরো, ২০২০ টোকিও ও সর্বশেষ ২০১৪ প্যারিস—টানা চার অলিম্পিকে টেবিল টেনিসের দলগত ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়া একমাত্র খেলোয়াড় মা লং। এককভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন রিও এবং টোকিওতে।

বয়স ৩৬ ছুঁই ছুঁই। ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকের সময় মা লংয়ের বয়স হবে ৪০-এর কাছাকাছি। নিজেকে সেই অলিম্পিকে দেখছেন না এই কিংবদন্তি। কাল অনন্য কীর্তি গড়ার পর জানিয়ে দিয়েছেন, প্যারিসই তাঁর শেষ অলিম্পিক হয়ে থাকবে, ‘গত ১২ বছর আমার যাত্রাটা ছিল উত্থান-পতনে ভরা। প্রতিটি অলিম্পিকে আমি ভিন্ন ভূমিকা পালন করেছি। নিজেকে সত্যিই ভাগ্যবান মনে করছি। টোকিওর পর আমি এখানে (প্যারিসে) থাকার আশা করিনি। কিন্তু এই তিন বছর আমাকে মানসিক ও প্রযুক্তিগতভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করেছে। এই সোনার পদক অলিম্পিকে আমার পথচলা শেষ করার দারুণ উপায়।’

সংবাদ সম্মেলনে অলিম্পিক থেকে অবসরের ঘোষণা দেন মা লং
এক্স

অলিম্পিককে বিদায় জানিয়ে দিলেও জাতীয় দলের হয়ে খেলা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা আছে মা লংয়ের, ‘ভবিষ্যতে আপনারা হয়তো আমাকে আন্তর্জাতিক টেবিল টেনিসের মঞ্চে দেখতে পারবেন।’

প্যারিস অলিম্পিকে টেবিল টেনিসের পাঁচ ইভেন্টের মধ্যে চারটিতেই (পুরুষ একক, নারী একক, পুরুষ দলগত, মিশ্র দ্বৈত) সোনা জিতেছে চীন। মেয়েদের দলগত ইভেন্টেরও ফাইনালে উঠেছে চীন। আজ সন্ধ্যায় সোনার লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ জাপান।

১৯৮৮ সিউল অলিম্পিক দিয়ে সর্ববৃহৎ এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় টেবিল টেনিস যুক্ত হয়। তখন থেকে আজ বিকেল পর্যন্ত এই খেলায় ৪১ সোনার পদকের ৩৬টিই জিতেছে চীন।