ইসরায়েলকে নিষেধাজ্ঞা দেবে না আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতায় প্রতিবাদমুখর বিশ্ব। খেলার জগৎও এর বাইরে নয়। অনেকেই গাজায় নির্যাতনের শিকার ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কেউ কেউ ইসরায়েলকে ক্রীড়াঙ্গনে নিষিদ্ধের দাবিও তুলেছেন।
তবে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) গতকাল জানিয়ে দিয়েছে, ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে ইসরায়েলকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। সংস্থাটি মনে করে, গাজায় ইসরায়েল–ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব আর রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। তাই রাশিয়াকে নিষিদ্ধ করা হলেও ইসরায়েলকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে না।
গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক প্রস্তুতির সর্বশেষ অবস্থা জানতে তিন দিনের সফরে প্যারিসে গিয়েছেন আইওসির সমন্বয় কমিটির প্রধান পিয়েরে-অলিভিয়ের বেকার্স-ভিউজা। কাল সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে (ইসরায়েলের ওপর) নিষেধাজ্ঞার দাবি অগ্রহণযোগ্য।’
রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও কেন ইসরায়েলকে নয়, সেটার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন বেকার্স-ভিউজা, ‘আইওসি প্রাথমিকভাবে রাশিয়াকে এবং তারপর রাশিয়ান অলিম্পিক কমিটিকে (আরওসি) যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটার কারণ খুবই স্পষ্ট। আগে রাশিয়া এবং সম্প্রতি আরওসি অলিম্পিক সনদের অপরিহার্য অংশগুলোর মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে। ফিলিস্তিন অলিম্পিক কমিটি বা ইসরায়েল অলিম্পিক কমিটির ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সে রকম নয়। তারা শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সহাবস্থানে আছে। তাই এটা একদম পরিষ্কার যে দুটি পরিস্থিতি ভিন্ন।’
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হয়। যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষ নেয় বেলারুশ। যুদ্ধ শুরুর চার দিন পরই রাশিয়া ও বেলারুশকে সব ধরনের প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দিতে এবং দেশ দুটিতে আসন্ন ইভেন্টগুলো বাতিল করতে আইওসি সব আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ফেডারেশনকে আহ্বান জানায়। গত বছরের অক্টোবরে আরওসিকে নিষেধাজ্ঞা দেয় আইওসি। নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার অনেক আগে থেকেই রাশিয়া ও বেলারুশের অ্যাথলেটরা নিজ দেশের পতাকা ছাড়া শুধু একক ইভেন্ট অংশ নিয়ে আসছেন।
প্যারিস অলিম্পিকে রাশিয়ার ৮ এবং বেলারুশের ৩ জন অ্যাথলেট স্বতন্ত্র হিসেবে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছেন বলে ধারণা আইওসির। যদিও রাশিয়া নিজেরাই প্যারিস অলিম্পিক বর্জনের ডাক দেবে বলে গুঞ্জন আছে।
গত বছরের অক্টোবরে গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা শুরুর পর কয়েকজন ফিলিস্তিনি কর্মী এবং ফ্রান্সের বেশ কয়েকজন বামপন্থী সংসদ সদস্য ইসরায়েলকে প্যারিস অলিম্পিকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানান। তবে আইওসির সমন্বয় কমিটির প্রধান বেকার্স-ভিউজার আগে সংস্থাটির সভাপতি টমাস বাখও জানান ইসরায়েলকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে না, বরং দেশটির অ্যাথলেটদের জন্য প্যারিস অলিম্পিকে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। সবাইকে সবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ারও আহ্বান জানান বাখ।
অলিম্পিক চলাকালীন ইসরায়েলকে একবার ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। ১৯৭২ সালে মিউনিখ অলিম্পিকে ফিলিস্তিনি চরমপন্থীরা ১১ ইসরায়েলি প্রতিনিধিকে হত্যা করে।