ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে এমন উচ্চতায় নিয়ে গেলে যা হয় আর কী! রান পেলে তো আপনাকে নিয়ে আলোচনা হবেই, রান না পেলে হবে আরও বেশি। বিরাট কোহলির ক্ষেত্রে এখন সেটাই হচ্ছে। কেন রান পাচ্ছেন না তিনি, কীভাবে ফিরতে পারেন রানে, এ নিয়ে নানা মুনির নানা মত। কেউ বলছেন, বর্তমান ভারত দলে কোহলির জায়গা নেই। আবার কেউ বলছেন, কোহলিই হবেন আগামী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের ‘ট্রাম্পকার্ড’।
টেস্টে কোহলি সর্বশেষ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ২০১৯ নভেম্বরে, বাংলাদেশের বিপক্ষে কলকাতায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই ওটা তাঁর সর্বশেষ সেঞ্চুরি। ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি এরও আগে, ওই বছরের আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পোর্ট অব স্পেনে। টেস্ট ক্যারিয়ারে যাঁর ব্যাটিং গড় ৫০-এর মতো, সর্বশেষ ১২ মাসে তিনি এই সংস্করণে রান করেছেন মাত্র ৩১ গড়ে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ব্যাটিং গড় ৫৭.৬৮, অথচ সর্বশেষ ১২ মাসে তিনি ওয়ানডেতে রান করেছেন মাত্র ২১.৮৭ গড়ে।
একই ছবি টি-টোয়েন্টিতেও ক্যারিয়ার গড় ৫০-এর বিপরীতে সর্বশেষ ১২ মাসের গড় ২৪-এর মতো। বোঝাই যাচ্ছে, ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে সময়টা কাটাচ্ছেন তাঁর প্রজন্মের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। তিন বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরি তো নেই-ই, বছরখানেক ধরে কার্যকরী ইনিংসও তেমন খেলতে পারছেন না। ভুলের পুনরাবৃত্তি করে দৃষ্টিকটুভাবে উইকেট দিয়ে আসছেন বারবার। সবশেষ আইপিএলেও ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে।
এই সময়ে সবাই যখন কোহলি-চর্চায় যোগ দিয়েছেন তখন ব্রায়ান লারা আর চুপ করে থাকবেন কেন! তিনি নিজেও তো সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। আর একজন সেরারই তো আরেকজনের সেরার ‘মনস্তত্ত্ব’ ভালো বোঝার কথা!
তা সর্বকালের কিংবদন্তি ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যান কোহলিকে নিয়ে কী ভাবছেন? তিনি কী কোহলির শেষ দেখে ফেলেছেন? উত্তর—একদমই না। বরং লারা মনে করেন, এই ‘খারাপ সময়’ কোহলিকে অনেক কিছু শেখাবে, ‘একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমি কোহলিকে অনেক সম্মান করি। এই খারাপ সময়টা পার করলে সে আরও ভালো ব্যাটসম্যান হয়ে ফিরবে। এই রানখরা তাঁকে অনেক কিছু শেখাবে। সে ফুরিয়ে যায়নি।’
ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকেরাও নিশ্চয়ই চাইবেন, যেন লারার কথাই সত্যি হয়। সামনে এশিয়া কাপ, তারপর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এই দুই টুর্নামেন্টে যে ছন্দে থাকা কোহলিকে পাওয়া হবে দারুণ ব্যাপার।