'পর্তুগালেরটা পেনাল্টি হলে আর্জেন্টিনারটা কেন নয়'
>নাইজেরিয়ার অধিনায়ক ওবি মিকেলের বক্তব্য, ‘গতকালের (পরশু) পর্তুগালের ম্যাচটা যদি দেখেন, এই হ্যান্ডবলটা সেটার কাছাকাছিও নয়, বরং আরও খারাপ। আমরা ম্যাচ শেষেও ড্রেসিংরুমে আবার দেখেছি। পরিষ্কার হ্যান্ডবল ছিল এটা
বিশ্বকাপে ভিএআর নিয়ে চলতে থাকা আলোচনা-সমালোচনায় আরেকটি নতুন প্রশ্ন উঠল বলে! এবার তুলছে নাইজেরিয়া। আর্জেন্টিনার কাছে ২-১ গোলে নাটকীয় হারের ম্যাচে পরশু দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনার মার্কোস রোহোর হাতে বল লাগলেও শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি দেননি রেফারি। এ নিয়েই যত অভিযোগ নাইজেরিয়ার। আগের দিন পর্তুগালের বিপক্ষে ইরানকে দেওয়া পেনাল্টির সঙ্গে তুলনা টেনে নাইজেরিয়া অধিনায়ক জন ওবি মিকেল তো সরাসরিই বলে দিলেন, ওটা পেনাল্টি ছিল।
সিদ্ধান্ত রেফারি নিয়েছেন ভিএআর দেখেই। বক্সে ভেসে আসা একটা বল হেড করেছিলেন আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার মার্কোস রোহো, বল তাঁর মাথায় লেগে পরে লাগে হাতে। ভিএআরে সেটি দেখে রেফারির সিদ্ধান্ত ছিল, এটা হ্যান্ডবল নয়। কিন্তু নাইজেরিয়া তা মানতেই রাজি নয়। ওই ঘটনাটা যখন ঘটে, ম্যাচ তখন ১-১ সমতায়। কে জানে, পেনাল্টিটা হলে হয়তো নাইজেরিয়াই জিতে যেত। এ কারণেই কিনা আক্ষেপ আর অভিযোগ মিলেমিশে যায় মিকেলের কণ্ঠে, ‘আমার কাছে ওটাকে পরিষ্কার পেনাল্টিই মনে হয়েছে।’
তুলনায় টেনে আনলেন আগের দিন পর্তুগাল-ইরান ম্যাচের শেষ দিকে ইরানকে দেওয়া পেনাল্টির কথাও, ‘গতকালের (পরশু) পর্তুগালের ম্যাচটা যদি দেখেন, এই হ্যান্ডবলটা সেটার কাছাকাছিও নয়, বরং আরও খারাপ। আমরা ম্যাচ শেষেও ড্রেসিংরুমে আবার দেখেছি। পরিষ্কার হ্যান্ডবল ছিল এটা।’ তা রেফারি চুনায়েত চাকির পেনাল্টির আবেদন নাকচ করে দেওয়ায় ওবি মিকেল গিয়ে রেফারির সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তাঁর ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন। তবে ব্যাখ্যাটা মনঃপূত হয়নি মিকেলের, ‘রেফারি ভিএআর দেখলেন। বললেন, বল হাতে লেগেছে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, কেন পেনাল্টিটা দেননি। কিন্তু তিনি বলেছিলেন যে তিনি জানেন না!’
তবে পেনাল্টি হোক না হোক, শেষ পর্যন্ত হেরে গ্রুপ পর্বেই বিদায় হয়েছে নাইজেরিয়ার। হারটা অবশ্য মেনে নিতে কোনো বাধা নেই ওবি মিকেলের। এই বিশ্বকাপের সবচেয়ে তরুণ দলটির ভবিষ্যৎ নিয়েই বরং স্বপ্ন আঁকছেন নাইজেরিয়া অধিনায়ক, ‘যা হয়েছে, হয়েছে। আসলে এটা (শেষ ষোলোতে ওঠা) হওয়ার ছিল না। তবে এই দলটা তরুণ, চার বছর পর বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই এই টুর্নামেন্টের জন্য আরও ভালোভাবে তৈরি থাকবে।’
৩১ বছর বয়সী মিকেল তত দিন থাকবেন কি না, সন্দেহ। না থাকলে, একটা ছোট্ট আক্ষেপ নিয়েই সে ক্ষেত্রে বিদায় নিতে হবে ওবি মিকেলকে। চার দিন আগেই ৩১-এ পা দেওয়া আরেকজনকে যে কখনো বিশ্বমঞ্চে হারানো গেল না! কে আবার, লিওনেল মেসি! ২০০৫ যুব বিশ্বকাপের ফাইনাল থেকে শুরু, এরপর ২০১০, ২০১৪ আর এবার।
মেসির আর্জেন্টিনার কাছে বারবারই হেরেছে ওবি মিকেলের নাইজেরিয়া। এবার অবশ্য জয় প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন ওবি মিকেল, সে আফসোসই ঝরল, ‘আমি দুঃখিত। কারণ, ভেবেছিলাম এবারই ওকে হারানোর খুব কাছে চলে এসেছি। ব্যাপারটা আমার আর ওর (মেসি) প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়। আমার শুধু মনে হয়েছে, এবার আমরা প্রায় শেষ ষোলোতে চলে গিয়েছিলাম, যেতে পারলে অসাধারণ কিছুই হতো। তবে আরেকবার ভাগ্য আমাদের সঙ্গে ছিল না, আর ও (মেসি) জয় নিয়ে বেরিয়ে গেছে।’
ছুটে যাওয়া মেসির দল কেমন করবে সামনে, সে নিয়েও নিজের ভাবনাটা জানিয়েছেন ওবি মিকেল, ‘আমার মনে হয় ওরা ভালো করবে। পরের রাউন্ডে চলে যাওয়ায় ওরা অনেক ধীরস্থির থাকবে, ভালো ফুটবলও খেলবে।’ অবশ্য ওবি মিকেলেরই সতীর্থ ভিক্টর মোজেসের মতটা ভিন্ন, ‘ওরা ভালো দল, কিন্তু এমন নয় যে ওরা আজ আমাদের ৪-০ বা ৫-০ গোলে হারাত। আর্জেন্টিনার জন্য কাজটা কঠিনই হবে। যে দলের বিপক্ষেই ওরা পরের রাউন্ডে খেলুক না কেন, সে দলটা কঠিন হবে। দেখা যাক কী হয়!’