৪-০ পর্যন্ত ঠিক ছিল, পঞ্চম গোলটা বেশি হয়ে গেছে
তাজিকিস্তান ও মালদ্বীপের মতো দলের কাছে নিকট অতীতে ৫-০ গোলে উড়ে যাওয়ার রেকর্ড আছে বাংলাদেশের। সে হিসাবে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতারের বিপক্ষে ৫ গোল খাওয়া আর এমন কী!
এটা একরকম স্বাভাবিক ফলই। তবে ড্রয়ের স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নামা দল ৫ গোলে উড়ে গেলে একটু আক্ষেপ থাকেই। সেই আক্ষেপ কিছুটা হলেও আছে জেমি ডের। বাংলাদেশ কোচ অবশ্য ৪ গোল পর্যন্ত ঠিকই ছিল বলছেন।
ম্যাচ শেষ সংবাদ সম্মেলনে জেমি ডেকে হতাশায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়নি। স্থানীয় এক সাংবাদিকের প্রশ্নে দুবার হাসলেনও। এক পয়েন্ট নেওয়ার স্বপ্ন পূরণ না হলেও এই ম্যাচ থেকে ভালো কিছু্ও দেখেছেন। ভবিষ্যতে ভালো কিছু করার আশা তাঁর।
দোহায় বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের যৌথ বাছাইয়ের এই ম্যাচ অনেক ইতিবাচক দিকও খুলে দিচ্ছে। জেমি বলছেন, ‘ছেলেরা দারুণ খেলেছ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে। আমরা রক্ষণকাজটা ভালোভাবে করেছি। কিন্তু কাতার এত এগিয়ে যে গোল খেতে হয়েছে।’
এমন হারে হতাশ কি না—এ প্রশ্নে যথাসম্ভব নিজেকে স্বাভাবিক রেখে কোচ বলে যান, ‘মোটেও হতাশ নই আমি। কেন হতাশ হব? কাতারের ফুটবলাররা তিন মাস ধরে লিগ খেলছে। আমরা মাত্র পাঁচ সপ্তাহ প্রস্তুতি নিতে পেরেছি; আর প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি মাত্র চারটি। এই যে প্রস্তুতির একটা ঘাটতি, এটি অনেক বড় ব্যাপার।’
তাহলে কি সত্যিই হতাশার কিছু নেই এই ম্যাচ থেকে? ‘হতাশার কথা যদি বলেন, যোগ করা সময়ে পঞ্চম গোলটি খাওয়া ঠিক হয়নি। নইলে ৪-০ পর্যন্ত হয়তো আমি বলতাম ঠিক আছে। এটা দেখতেও তুলনামূলক ভালো লাগত। ৫-০ মনে হচ্ছে অনেক বড়, কিন্তু ভুলে যাবেন না, কাতার এশিয়ার সেরা দল, ২০২২ সালে যারা বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করছে।’ এক নিশ্বাসে বলেন বাংলাদেশ কোচ।
গোলকিপার আনিসুর রহমানের প্রশংসা ঝরেছে জেমি ডের কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘ওর বয়স অনেক কম। তবু দারুণ খেলেছে। ৩-৪টি বিশ্বমানের সেভ করেছে। আমি ওর খেলায় অনেক খুশি।’
একাদশে অভিজ্ঞতার চেয়ে একটু তারুণ্যের দিকে ঝোঁকার যুক্তি হিসেবে বলেন, ‘সামনে অনেক খেলা আছে। তরুণদের তৈরি করতে হবে।’
কাতারের কোচ ফেলিক্স সানচেজ বাস খুশি মন নিয়েই এলেন সংবাদ সম্মেলনে। বার্সেলোনা যুব দলের সাবেক কোচ কাতারের ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত আছেন ২০০৬ সাল থেকে। কাতার জাতীয় দলের দায়িত্ব পেয়েছেন ২০১৭ সালে।
বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিয়ে কাল রাতে বলে গেলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই গোল চাইছিলাম। ছেলেরা ভালো খেলেছে। চেষ্টা করেছি সেরা ফলটাই এই ম্যাচ থেকে তুলে নিতে। সেটা পেরেছি বলে ভালো লাগছে।’
প্রথম লেগে ঢাকায় বাংলাদেশের বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় পেয়েছিল কাতার। ফিরতি ম্যাচে ৫-০। কী পার্থক্য দেখলেন বাংলাদেশ দলে?
বাসের কথা, ‘দুটি ম্যাচের মধ্যে অনেক পার্থক্য। ঢাকার ম্যাচটি আমরা কিছুটা ভিন্ন পরিবেশে খেলেছিলাম। তবে আজ রাতে ম্যাচটা আমাদের জন্য সহজই হয়েছে। তরুণ কিছু খেলোয়াড়কে আজ আমি দেখে নিয়েছি।’
বাংলাদেশ গোলকিপার আনিসুর রহমান ৫ গোল হজম করলেও তাঁর খেলাটা কেমন লেগেছে? কাতার কোচের মূল্যায়ন, ‘এটা তো বাংলাদেশ কোচ বলবে। তবে সে দুটি খুব ভালো সেভ করেছে।’
ভালো সেভের পরও বড় পরাজয় রুখতে পারেননি আনিসুর। একটু মনঃকষ্ট নিশ্চয়ই তাঁর ছিল দোহার এই রাতে।