কলকাতা জয় হলো না আবাহনীর

কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। নিষেধাজ্ঞার কারণে দলে নেই নিয়মিত রাইটব্যাক সুশান্ত ত্রিপুরা। তাঁর জায়গায় রাইটব্যাক পজিশনে খেলানো হচ্ছে স্ট্রাইকার মেহেদী হাসানকে।

আবাহনী একাদশ : শহিদুল আলম, নুরুল নাঈম, মিলাদ শেখ, টুটুল হোসেন, রাফায়েল আগুস্তো, আবু শাহেদ, নাবিব নেওয়াজ, রাকিব হোসেন, দানিয়েল কলিনদ্রেস ও নেদো তুর্কোবিচ

৬ মিনিটে ডেভিড উইলিয়ামসের গোলে এগিয়ে গেল মোহনবাগান।

গত বছর বসুন্ধরা কিংসের এএফসি কাপের আন্ত আঞ্চলিক পর্বে খেলার স্বপ্নটা ধূলিসাৎ করে দিয়েছিলেন উইলিয়ামস। পরের পর্বে খেলতে বসুন্ধরার প্রয়োজন ছিল জয়। গোল করে এগিয়ে গিয়ে সে কাজ করেও রেখেছিল বসুন্ধরা। কিন্তু উইলিয়ামস গোল করে ১-১ গোলে ড্র করে মোহনবাগানকে নিয়ে যান পরের রাউন্ডে।

আজ আবাহনীর বিপক্ষে শুরুতেই গোল করে মোহনবাগানকে এগিয়ে নিয়েছেন এই অস্ট্রেলিয়ান ফরোয়ার্ড।

২৩ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠের বাইলে চলে গেলেন আবাহনীর অধিনায়ক ও ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ। তাঁর জায়গায় বদলি হিসেবে নেমেছেন উইঙ্গার জুয়েল রানা।

২৯ মিনিটে উইলিয়ামসের দ্বিতীয় গোল , আবাহনী ০- ২ মোহনবাগান।

গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ উইলিয়ামস। অফসাইড ফাঁদ ভেঙে বের হয়ে গিয়েছিলেন। আবাহনী গোলকিপার শহিদুল আলম পোস্ট ছেড়ে বের হয়ে এসে দলকে বিপদমুক্ত করেন।

মোহন বাগানের সামনে একেবারে অসহায় মনে হচ্ছে আবাহনীকে দেখে। প্রথমার্ধে একটি গোলের সুযোগও তৈরি করতে পারেনি আবাহনী। প্রথমার্ধ শেষে ২-০ গোলে এগিয়ে আছে কলকাতার ক্লাবটি। দুই প্রান্ত থেকে ভেসে আসা ক্রসে গোলমুখ থেকে পা লাগিয়ে প্রায় একই ছন্দে গোল দুটি করেছেন উইলিয়ামস। গোলমুখে এমনভাবে জায়গা তৈরি করে নিচ্ছেন এই অস্ট্রেলিয়ান, আবাহনীর দুই সেন্টারব্যাক টুটুল হোসেন ও মিলাদ শেখ তাঁকে মার্কিং করতে পারছেন না।

প্রথমার্ধ শেষে ৬১ ভাগ বলের দখল মোহনবাগানের। ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েও আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলছে কলকাতার ক্লাবটি। তাদের বিদেশি হুগো বুমোস, জনি কাউকো, উইলিয়ামসদের সামনে আবাহনীর রাফায়েল আগুস্তো, দানিয়েল কলিনদ্রেসদের সাধারণ মানের ফুটবলার মনে হচ্ছে। স্থানীয় খেলোয়াড়ের মানের বিচারেও আবাহনীর চেয়ে অনেক এগিয়ে মোহনবাগানের খেলোয়াড়েরা।

একাদশ সাজাতে গিয়েই ঘেমে-নেয়ে একাকার হওয়ার অবস্থা আবাহনী কোচ মারিও লেমোসের। চোটের কারণে দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার দরিয়েলতন গোমেজ নেই। তাঁর জায়গায় আবাহনীর জার্সিতে অভিষেক হয়েছে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ থেকে ধারে নেওয়া বসনিয়ার স্ট্রাইকার নেদো তুর্কোবিচকে।

মাঠে বসনিয়ার এই স্ট্রাইকারতে চিনতে হচ্ছে তাঁর লম্বা দেহ দেখে। এখন পর্যন্ত কার্যত কিছুই করতে পারেননি নেদো। এছাড়া ম্যাচের ২৩ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠের বাইলে চলে গেলেন আবাহনীর অধিনায়ক ও ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ। ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় দ্বিতীয়ার্ধে কোন আক্রমণাত্মক কৌশলেও যেতে পারছেন না লেমোস। কারণ বেঞ্চ থেকে বদলি নামানোর মতো ভালো খেলোয়াড় নেই তাঁর হাতে।

৬১ মিনিটে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমালেন দানিয়েল কলিনদ্রেস। বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের শটে গোলটি করেছেন তিনি, আবাহনী ১–২ মোহনবাগান।

দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছে আবাহনী। ফিরতে পারত সমতায়ও। সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন জুয়েল। গোল মুখ থেকে তাঁর নেওয়া শট সাইড পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।

আবাহনীর আক্রমণভাগের প্রাণভোমরা কোস্টারিকান ফরোয়ার্ড দানিয়েল কলিনদ্রেস। আন্তর্জাতিক মঞ্চ কীভাবে মাতাতে হয়, এ অঞ্চলের ফুটবলে ২০১৮ বিশ্বকাপে খেলা ফুটবলারের চেয়ে সেটা আর কেই-বা জানেন!

২০১৯ সালে এএফসি কাপে কলিনদ্রেসের নেতৃত্বেই মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টসকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বসুন্ধরা। আজ মোহনবাগানের বিপক্ষে প্রথমার্ধে ভালো খেলতে না পারলেও দ্বিতীয়ার্ধে নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি। কলিনদ্রেসের একমাত্র গোলেই ব্যবধান কমিয়েছে আবাহনী। ৭৫ মিনিট শেষে আবাহনী ১-২ মোহনবাগান।

৮০ মিনিট শেষে আবাহনী ১–২মোহনবাগান। শেষ ১০ মিনিটে গোল করে আবাহনী কী ম্যাচে ফিরতে পারবে ?

৮৫ মিনিটে গোল করে স্কোর লাইন ৩–১ করলেন মোহনবাগানের অস্ট্রেলিয়ান ফরোয়ার্ড ডেভিড উইলিয়ামস।

কলকাতায় অনুষ্ঠিত এএফসি কাপের প্লে–অফ ম্যাচে মোহনবাগানের কাছে ৩-১ গোলে হেরেছে আবাহনী। হ্যাটট্রিক করেছেন বাগানের অস্ট্রেলিয়ান ফরোয়ার্ড উইলিয়ামস। আবাহনীর হয়ে ব্যবধান কমিয়েছেন দানিয়েল কলিনদ্রেস। এই জয়ে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বে নাম লিখিয়েছে মোহনবাগান আর আবাহনীর বিদায়। আগে থেকে গ্রুপের বাকি তিন দল চূড়ান্ত হয়ে আছে। সে দলগুলো বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংস, ভারতের গোকুলাম কেরালা ও মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টস।

২০১৭ সালের এএফসি কাপে মোহনবাগানের বিপক্ষে সর্বশেষ মুখোমুখি লড়াইয়ে ঘরের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করলেও কলকাতায় ৩-১ গোলে হেরেছিল আবাহনী। পাঁচ বছর পর দেখা যাচ্ছে আবাহনীর শক্তি গাণিতিক হারে বাড়লেও মোহনবাগানের শক্তি বেড়েছে জ্যামিতিক হারে। আজ আবাহনীর বিপক্ষে মোহনবাগানের ৩-১ গোলের জয়ই তার প্রমাণ।

আই লিগ ছাপিয়ে কলকাতার ক্লাবটি এখন খেলছে সর্বোচ্চ পর্যায়ের আইএসএলে। সম্প্রতি দলটির সবচেয়ে বড় শক্তি স্প্যানিশ কোচ হুয়ান ফেরান্দো। আজকের ম্যাচটি দিয়ে তাঁর অধীন ১৯ ম্যাচ খেলে ১১ জয় ও ৬ ড্রয়ের বিপরীতে মোহনবাগানের হার মাত্র ২টি।