সৌদি আরবের দূত হলেন মেসি
ইনস্টাগ্রামে কাল একটি ছবি পোস্ট করেছেন লিওনেল মেসি। সৌদি আরবের তীরঘেঁষা লোহিত সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করার ছবি। তখন অনেকে ভেবেছিলেন, পিএসজি তারকা হয়তো সৌদি আরবে ছুটি কাটাতে গেছেন।
সে তো বটেই, তবে ‘রথ দেখার সঙ্গে কলা বেচা’র কাজও সেরেছেন মেসি। সৌদি আরব পর্যটনের আনুষ্ঠানিক দূত হিসেবে মেসিকে বেছে নিয়েছে দেশটি। সৌদি পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খাতেব কাল দূত হিসেবে মেসির নাম ঘোষণা করেন।
পিএসজি ও আর্জেন্টিনার সতীর্থ লিয়ান্দ্রো পারেদেস ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কাল জেদ্দা বিমানবন্দরে অবতরণ করেন আর্জেন্টাইন তারকা। সংবাদমাধ্যম সৌদি গেজেট জানিয়েছে, সাতবারের বর্ষসেরা এই ফুটবলারকে রাজকীয় সংবর্ধনা দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
দেশটির পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খাতেব টুইটারে মেসিকে পর্যটনের দূত বানানোর ঘোষণাটা দেন আরবি ভাষায়, ‘লিওনেল মেসি ও তাঁর বন্ধুদের সৌদি আরবে স্বাগত জানাই। আপনাকে নিয়ে লোহিত সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ ও আমাদের সমৃদ্ধ ইতিহাস জানাতে আর তর সইছে না। সৌদিতে এটাই মেসির প্রথম ভ্রমণ নয়, শেষবারও নয়। আনন্দের সঙ্গে আমি মেসিকে সৌদি পর্যটনের দূত ঘোষণা করছি।’
তবে মেসির ক্লাব পিএসজির মালিক প্রতিষ্ঠান কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্টের (কিউএসআই) প্রশাসনিক প্রধান দেশটির আমির তামিম বিন হামাদ আল থানি। নাসের আল খেলাইফি কিউএসআইয়ের চেয়ারম্যান হলেও কাতারের আমিরের কথাই নাকি সংস্থাটির শেষ কথা। সৌদি আরবের সঙ্গে বহু বছর ধরেই কূটনৈতিকভাবে বাজে সম্পর্ক ছিল কাতারের। তাই মেসির সৌদি আরবের পর্যটন দূত হওয়া পিএসজি কোন চোখে দেখবে, তা ভাবার বিষয়।
তবে সৌদি আরবের খেলাধুলার অঙ্গনে মেসির এই পর্যটন দূত হওয়া অনেকেই সাদরে গ্রহণ করেছেন। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে সৌদি আরবের প্রতিনিধিত্ব করা এবং আল-হিলালের সাবেক ফরোয়ার্ড সামি আল-জাবের টুইট করেন, ‘সৌদি আরব পর্যটনের দূত হিসেবে মেসিকে পাওয়াটা দারুণ পদক্ষেপ।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ গত ফেব্রুয়ারিতেই জানিয়েছিল, সৌদি পর্যটন বোর্ডের তরফ থেকে মেসিকে দূত হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সে সময় সৌদি রাজতন্ত্রের শাসনে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার হওয়া অনেকেই মানবাধিকার সংস্থা গ্র্যান্ট লিবার্টির মাধ্যমে মেসির কাছে পাঠানো চিঠিতে তাঁকে এসব বিষয়ে জড়াতে নিষেধ করেছিলেন।
সেই চিঠিতে মেসিকে বলা হয়েছিল, ‘আপনি লাখো মানুষের প্রেরণা, আপনার কথা ও কাজ অনেকের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ...সৌদি প্রশাসন নিজেদের সুনামের জন্য আপনাকে ব্যবহার করতে চায়। সৌদি আরবে গ্রেপ্তার হওয়া বন্দীরা অত্যাচারিত এবং মাসের পর মাস ধরে তাদের আটক রাখা হচ্ছে। সৌদি শাসকদের বিপক্ষে কোনো কথা বললেই দীর্ঘমেয়াদি বন্দিত্ব মেনে নিতে হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হয়। আপনি (মেসি) যদি সৌদি আরবে যেতে সম্মত হন, তাহলে আধুনিক সৌদি আরবে যে ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, সেসবের প্রতিও সম্মতি দিলেন। কিন্তু না করে দিলে সবাই মিলে একটি বার্তা পাবে—মানবাধিকার গুরুত্বপূর্ণ।’
মেসি এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো সৌদি আরবে গেলেন। ২০১১ সালে কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে সৌদি আরবের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচে অংশ নিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। সুপার ক্লাসিকো কাপেও সৌদিতে ব্রাজিলের মুখোমুখি হয়েছেন। ২০২০ সালে আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে একটি ম্যাচ খেলেছেন সৌদি আরবে।