সহজ ম্যাচটা ঘাম ঝরিয়ে জিতল বার্সেলোনা
আগের তিন ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে গোলে ভাসিয়েছে বার্সেলোনা। তিন ম্যাচের প্রতিটিতেই করেছে চারটি করে গোল। স্প্যানিশ লিগের পয়েন্ট তালিকায় ১৪তম এলচের মাঠে আজও বার্সা তেমন কিছুই করবে বলে মনে হচ্ছিল। হয়নি ফেরান তোরেসের একের পর এক ব্যর্থতায়।
এত এত গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন তোরেস যে, সহজ ম্যাচটা জিততেই ঘাম ছুটে গেছে বার্সার। শেষ দিকে বার্সার পক্ষে পেনাল্টি হওয়া আর এলচেকে দুটি পেনাল্টি না দেওয়া নিয়ে বিতর্ক হয়েছে, পেনাল্টি থেকেই বার্সা পেয়েছে জয়সূচক হয়ে থাকা গোল।
প্রথমে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত এলচের মাঠে ২-১ গোলে জিতেছে বার্সা। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ১১ ম্যাচে অপরাজিত বার্সা এ জয়ে রিয়াল বেতিসকে টপকে লিগের পয়েন্ট তালিকার তিন নম্বরে উঠে এসেছে। ২৬ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৪৮।
ম্যাচের শুরু থেকে দাপটটা বার্সারই ছিল। বলের দখলে, আক্রমণ গড়ায় এলচেকে ব্যতিব্যস্ত রেখেছেন অবামেয়াং, গাভিরা। ২৭ মিনিটে তো গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল, পায়নি এলচে ডিফেন্ডার গনজালেস গোললাইন থেকে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের শট ফিরিয়ে দেওয়ায়।
মিনিট দশেক পর আবার ডি ইয়ং গোলবঞ্চিত। এবার দারুণ দক্ষতায় বার্সার ডাচ মিডফিল্ডারের শট ফিরিয়ে দেন এলচে গোলকিপার বাদিয়া।
তবে ম্যাচের শেষদিকে আস্তে আস্তে এলচের আক্রমণ প্রাণ পেতে শুরু করে। ফল পায় বিরতির ঠিক আগে। যদিও সেটি যতটা না এলচের গুনে, তার চেয়ে বেশি বার্সার মিডফিল্ডার পেদ্রির অসহায় ভুলে।
৪৪ মিনিটে নিজেদের অর্ধের একটু ভেতরে বল দখলে নিতে গিয়েছিলেন পেদ্রি, কিন্তু বল তাঁর পায়ে লেগে এমনভাবেই বার্সার রাইটব্যাক আলভেজ আর সেন্টারব্যাক আরাউহোর মধ্য দিয়ে দারুণ এক ‘থ্রু’ হয়ে গেল! এলচের উইঙ্গার ফিদেল শাভেজ বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঢুকে দারুণ শটে গোল করলেন।
বিরতিতে পিছিয়ে পড়া দলকে সমতায় ফেরাতে কিছু একটা করতে হতো বার্সা কোচ জাভির। তিনি উইঙ্গার গাভির বদলে নামালেন ফেরান তোরেসকে। এই তোরেসই বার্সাকে সমতায় ফেরালেন, এই তোরেসের কারণেই সহজ ম্যাচটা কঠিন হয়ে গেল বার্সার জন্য!
৫২ মিনিটে আলভেজের ক্রসে সহজ সুযোগ পেয়েও তোরেস বল মারলেন বারের ওপর দিয়ে। ৬০ মিনিটে বার্সাকে ফেরালেন সমতায়। বাঁ দিক থেকে আলবার ক্রস এল বক্সে, খুব কাছ থেকে বল জালে জড়িয়ে দিলেন তোরেস। কিন্তু এর পর একের পর এক এত সহজ সব সুযোগ হেলায় হারিয়েছেন তোরেস যে, নায়ক থেকে ভিলেন হবেন বলেই মনে হচ্ছিল!
বার্সা সমতা ফেরানোর দুই মিনিট পরই অবশ্য এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল এলচে। কিন্তু পেরে মিয়ার শট দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন বার্সা গোলকিপার টের স্টেগেন।
এরপর শুরু হলো তোরেসের গোলের সুযোগ হাতছাড়া করার ‘প্রদর্শনী!’৭৭ মিনিটেই দুবার খুব কাছ থেকেও বল জালে জড়াতে পারেননি, দুবারই তাঁর শট গেছে এলচে গোলকিপারের দিকে। চার মিনিট পর আবার, এবার তাঁর শট লাগল পোস্টের ডান পাশের জালের বাইরের দিকে।
তোরেসের একের পর এক মিস যখন বার্সাকে পোড়াবে বলে মনে হচ্ছিল, তখনই রেফারির বদান্যতায় বেঁচে গেল বার্সা! এলচে বক্সে এলচেরই ডিফেন্ডার বারাগানের হাতে লাগে, যদিও সেটি ইচ্ছাকৃত ছিল না। তবে পেনাল্টির নতুন নিয়মে পেনাল্টি পেল বার্সা। সেটি থেকে বল জালে জড়িয়ে দিলেন কিছুক্ষণ আগেই বদলি নামা মেম্ফিস ডিপাই।
শেষদিকে অবশ্য দুবার পেনাল্টির দাবি তুলেছিল এলচে। কিন্তু দুবারই রেফারি নাকচ করে দেন। এরপর যোগ করা পাঁচ মিনিট সময়ের একেবারে শেষ দিকে টের স্টেগেনের গ্লাভস বাঁচায় বার্সাকে। এলচের কারিয়োর হেড ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন টের স্টেগেন।