মেসি নয়, বার্তোমেউর দলে তিন বার্সা তারকা
বেতন নিয়ে আবারও বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন লিওনেল মেসি সহ বার্সেলোনার বেশ কিছু শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড়। করোনাভাইরাসের কারণে বড় ধরনেরই আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছে বার্সেলোনা। ক্লাব সভাপতি বার্তোমেই এমন পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়দের বেতন স্থগিতের একটা প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু আগেই করোনার কারণে ৭০ শতাংশ বেতন কম নেওয়া মেসিসহ অন্যান্য খেলোয়াড়েরা সে প্রস্তাবে সাড়া দেননি। তারা ব্যুরোফ্যাক্স করে নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তবে মেসিদের সঙ্গে নেই তাঁদেরই তিন সতীর্থ। এঁরা বার্তোমেউয়ের কথামতো বেতন স্থগিত রাখতে নাকি রাজি।
কাতালুনিয়ার সংবাদমাধ্যম কাতালুনিয়া রেডিও ও টিডিটির সংবাদ অনুযায়ী, এই তিনজন হচ্ছেন দলের জার্মান গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন, ডাচ তারকা মিডফিল্ডার ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং ও ফরাসি সেন্টারব্যাক ক্লেমঁ লংলে। মেসি, জেরার্ড পিকে, সার্জিও বুসকেতস, জর্দি আলবাসহ ক্লাবের বাকি সবাই অবশ্য বার্তোমেউয়ের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে এককাট্টা। ৭০ শতাংশ বেতন কম নেওয়ার পর বেতন স্থগিত রাখার বিষয়টা একেবারেই পছন্দ নয় তাঁদের। বেশির ভাগ খেলোয়াড়েরই শঙ্কা, ক্লাব সভাপতির কথা ও কাজের যে বিপুল অমিল, তাতে স্থগিত রাখা বেতনটা তারা পরে পাবেন, সেটার কী গ্যারান্টি!
এই ব্যুরোফ্যাক্সেই আগস্টে ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন মেসি। আবারও আলোচনায় সেই ব্যুরোফ্যাক্স। এবার বার্তোমেউয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জানালেন খেলোয়াড়েরা। মেসি শেষ পর্যন্ত আইনি জটিলতা এড়াতে বার্সায় থেকে গেলেও সভাপতির সঙ্গে যে সম্পর্কটা তলানিতে সেটাই নতুন করে প্রমাণিত হলো পরের ব্যুরোফ্যাক্সে।
করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই ক্লাবগুলো আর্থিকভাবে সমস্যায় আছে। বার্সেলোনার অবস্থাও ব্যতিক্রম নয়।বলা হচ্ছে, এর মধ্যে করোনার কারণে বিশ কোটি ইউরো ক্ষতি হয়ে গিয়েছে বার্সেলোনার। জার্সিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র বিক্রিবাট্টাও কমে গেছে। এই ক্ষতি কমাতেই একের পর এক এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বার্তোমেউ।
মেসিরা আগেই মহামারির কারণে ক্লাবের অন্য কর্মীদের বেতন যেন আটকে না যায়, সেটি নিশ্চিত করতে ৭০ ভাগ বেতন কম নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। পাশাপাশি নিজেদের পকেট থেকেও আরও কিছু অর্থ দিয়েছিলেন ক্লাবের তহবিলে। এতে বার্সেলোনার সাশ্রয় হয় প্রায় ১০ কোটি ইউরো। মেসি নিজেই ইনস্টাগ্রামে ঘোষণা দিয়ে নিজেদের বেতন কম নিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘একটি ঘোষণা দেওয়ার সময় হয়েছে মনে হয়। সংকটকালে আমরা আমাদের বেতনের ৭০ ভাগ কেটে রাখার ব্যাপারে একমত হয়েছি। সঙ্গে আরও অর্থ যোগ করে নিশ্চিত করতে চাই, ক্লাবের স্টাফরা যেন সংকট শেষ হওয়া পর্যন্ত পুরোপুরি বেতন পান।’
এবার খেলোয়াড়দের সরাসরি বেতন কমাতে না বলে পরে বেতন নিতে বলেছিলেন বার্তোমেউ। সঙ্গে আরেকটা শর্তও জুড়ে দিয়েছিলেন। পরে বেতন নেওয়ার জন্য অন্য কোনো ব্যবস্থার শরণাপন্ন হতে চাইলে সে ব্যাপারেও খেলোয়াড়েরাও নভেম্বরের পাঁচ তারিখ পর্যন্ত সময় পাবেন—শর্তাটা ছিল এমনই। বেতন পরে নিয়ে চাইলে খেলোয়াড়েরা চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে পারবেন, শর্তে ছিল এটাই। কিন্তু কোনো প্রস্তাবেই আগ্রহ দেখাননি মেসিরা। ওদিকে টের স্টেগেন, ডি ইয়ং আর লংলে সভাপতির প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেছেন, পরে বেতন নেবেন। হয়তো ভেবেছেন, খামোখা কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করে লাভ নেই। প্রস্তাবে রাজি না হলে একতরফাভাবে যে বেতন কাটা শুরু করবেন বার্তোমেউ!