মৃত্যুর পরও নানাভাবে ‘দেখা’ দিচ্ছেন ম্যারাডোনা
ডিয়েগো ম্যারাডোনা চলে গেছেন এক মাসের বেশি হলো। কিন্তু তাঁকে ঘিরে মানুষের ‘রোমান্টিক’ ভাবনা শেষ হয়নি।
আর্জেন্টিনার লা প্লাতায় নতুন বছর বরণে অন্য রকম এক সংস্কৃতি প্রচলিত। দেশের সেরা সন্তানদের পুতুলের প্রতিকৃতি বানিয়ে পোড়ানো হয়।
নতুন বছর বরণ করতে এটা তাদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি। এবার সেখানে ২০২১ সাল বরণে বেশির ভাগের পছন্দের ‘পুতুল’ ছিলেন ম্যারাডোনা।
প্রয়াত কোচ আলেহান্দ্রো সাবেয়া ও আর্জেন্টিনার জনপ্রিয় কমিক চরিত্র মাফালদা এবং ছিয়াশির বিশ্বকাপজয়ী কোচ কার্লোস বিলার্দোর পুতুলও পোড়ানো হয়; ৮২ বছর বয়সী বিলার্দো যদিও এখনো বেঁচে আছেন।
সে যা–ই হোক, আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যমে লা প্লাতার এই খবর আলোচনা কুড়িয়েছে অদ্ভুত এক কারণে।
লা প্লাতার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ম্যারাডোনার পুতুলের প্রতিকৃতি পোড়াতে তাদের বেশ ঘাম ঝরেছে। প্রতিকৃতিতে সহজে আগুন ধরেনি।
শেষ পর্যন্ত সফল হলেও সবার শেষে পুড়েছে ম্যারাডোনার বাঁ হাত। ১৯৮৬ বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাঁ হাতে বিতর্কিত এক গোল করেছিলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। বিতর্কিত এই গোলকে পরে ‘ঈশ্বরের হাত’ বলেছিলেন ম্যারাডোনা নিজেই।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর উদ্ধৃতি দিয়ে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস জানায়, ‘পুতুলে সহজে আগুন ধরেনি। প্রথমে মনে হয়েছে আয়োজকদের ত্রুটি। কিন্তু না, ওরা ১০ মিনিটের মতো চেষ্টা করেছে। শেষ পর্যন্ত আগুনটা মাথা থেকে শুরু হয়। তার পুতুলে সহজে আগুন ধরছিল না, জানি না কেন। সবার শেষে পুড়েছে ম্যারাডোনার বাঁ হাত।’
ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর থেকে ভক্তরা তাঁকে নানাভাবে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে যাচ্ছেন। ফুল, গান, প্লাকার্ড, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো থেকে ধর্মীয়ভাবেও দেখা হচ্ছে ম্যারাডোনাকে।
গত ২৫ নভেম্বর ৬০ বছর বয়সী ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর তাঁর দেশ আর্জেন্টিনায় শুরু হয়েছে নতুন ট্রেন্ড, ‘ফুয়া এল দিয়েগো’। যেটার বাংলা অর্থ হতে পারে ‘এটা ডিয়েগো ছিলেন’!
এটি আধ্যাত্মিক এক ভাবনা। ম্যারাডোনা মৃত্যুর পর ওপার থেকে তিনি নানাভাবে ‘ইঙ্গিত’ দিয়ে যাচ্ছেন, এ ধারণাই ‘ফুয়া এল ডিয়েগো।’
কিছুদিন আগে যেমন আর্জেন্টিনার মেঘের খেলায় ম্যারাডোনার মুখাবয়ব ফুটে ওঠার গুঞ্জন ঝড় তুলেছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ নিয়ে প্রতিবেদন করেছিল দেশটির অন্যতম সংবাদমাধ্যম ওলে।
সে যা-ই হোক, এবার করোনা মহামারির কারণে লা প্লাতায় বর্ষবরণে বিধিনিষেধ বেঁধে দিয়েছিল পুলিশ। আধা ঘণ্টা সময়ের বেশি এই পুতুল পোড়ানো উৎসব করা যায়নি। নতুন বছরের প্রহর শুরু থেকে চলে এই উদ্যাপন।