মুন্সিগঞ্জ খালি হাতে ফেরায়নি কিংসকে
স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের কাছে টঙ্গীতে অপ্রত্যাশিত হার দিয়ে প্রমিয়ার ফুটবল লিগ শুরু করেছিল বসুন্ধরা কিংস। তবে মুন্সিগঞ্জে আজ দ্বিতীয় ম্যাচেই উত্তর বারিধারাকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগে প্রথম জয় তুলে নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
মুন্সিগঞ্জ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামের মাঠ বেশ শক্ত ও অসমতল। এমন মাঠে পাসিং ফুটবল খেলা কঠিন। বসুন্ধরাও পারেনি নিচ থেকে খেলাটা ভালোভাবে তৈরি করতে। তবে চ্যাম্পিয়নদের স্বস্তি—২৭ মিনিটে বসনিয়ার স্ট্রাইকার স্তোয়ান ভ্রানিয়েসের একমাত্র গোলে তিন পয়েন্ট নিয়েই তারা ঢাকায় ফিরছে। করোনা সতর্কতায় বাফুফে দর্শক নিষিদ্ধ করলেও এ ম্যাচে গ্যালারিতে হাজারখানেক দর্শক ছিল।
একাদশে দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে কিংস। মিডফিল্ডার মাসুক মিয়ার বদলে ইয়াসিন আরাফাত এবং সুমন রেজার জায়গায় তৌহিদুল আলম। দ্বিতীয়ার্ধে আতিকুর রহমান ও তৌহিদুলকে তুলে মাঠে আসেন মাসুক মিয়া ও সুমন রেজাকে। কিন্তু কিংসের খেলার যে স্বাভাবিক গতি, সৌন্দর্য আর দাপট, সেটি ছিল না আজকের ম্যাচে।
এ জন্য মুন্সিগঞ্জ স্টেডিয়ামের অসমতল মাঠকেই দায়ী করেছে কিংস। তবে বাফুফের শাস্তির ভয়ে এ নিয়ে কেউ আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করতে চাইলেন না। দলের সদ্য করোনামুক্ত কোচ অস্কার ব্রুজোন শুধু এটুকু বলেন, ‘মাঠ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট নই। এই মাঠে ফুটবলারদের চোটের ভয় থাকে। তা ছাড়া এখানে ৩–৪টি পাস একসঙ্গে খেলা যায় না। তবে আমি ছেলেদের খেলায় খুশি। আমরা অনেকগুলো সুযোগ তৈরি করেছি। দুর্ভাগ্য, একটির বেশি গোল পাইনি।’
ম্যাচের ২০ মিনিটেই প্রথম গোল পেতে পারত কিংস। রবসনের ফ্রি–কিক বক্সের ভেতরে ইয়াসিন আরাফাত হেড করার চেষ্টা করেছিলেন। বারিধারা গোলরক্ষক সাইফুল কোনোমতে বলটা ফেরালেও বিপদ পুরো কাটেনি তাতে। ফিরতি বলে বাঁ পায়ের জোরালো শট নিয়েছিলেন আবাহনী থেকে এবারই কিংসে নাম লেখানো মিডফিল্ডার সোহেল রানা। কিন্তু গোলমুখে খালেদ শাফি ঠিকমতো পা লাগাতে পারেননি।
২৭ মিনিটে প্রতি–আক্রমণে বসনিয়ান ফরোয়ার্ড স্তোয়ান ভ্রানিয়েসের গোলে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা ১–০। ডান দিক থেকে ইব্রাহিমের দারুণ ক্রসে তৌহিদুল আলমের মাথা ছুঁয়ে দূরের পোস্টে চলে যায় বল, সেখানে বাঁ পা বাড়িয়ে আলতো টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন ভ্রানিয়েস। প্রিমিয়ার লিগে এটিই তাঁর প্রথম গোল। গোল খাওয়ার ঠিক আগে আক্রমণে উঠেছিলেন উত্তর বারিধারার অধিনায়ক আরিফ। তবে তাঁর কাছ থেকে দুর্দান্তভাবে বল কেড়ে নেন কিংসের ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ। এরপরই প্রতি–আক্রমণে গোল খায় বারিধারা।
৪২ মিনিটে বড় সুযোগ হারিয়েছেন কিংসের ইব্রাহিম। ডান দিক থেকে রবসনের ক্রস উড়ে আসে দূরের পোস্টে। ইরানি ডিফেন্ডার খালেদ শাফি নিচু করে বল বাড়িয়ে দেন গোলমুখে, ছোট ডি–বক্সের খানিকটা বাইরে থেকে ইব্রাহিমের হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ম্যাচের বাকি সময়ে দ্বিতীয় গোলের খোঁজে আক্রমণে ঝাঁপালেও গোল আর পায়নি কিংস।
বারিধারা তাদের প্রথম ম্যাচে এই মুন্সিগঞ্জেই ২-১ গোলে হেরেছে শেখ জামালের কাছে। টানা দুই হারে দলটি এখনো খুলতে পারেনি পয়েন্টের খাতা।
তবে কিংসের কাছে হেরে ক্ষুব্ধ বারিধারার কোচ আলী আসগর নাসির। ম্যাচ শেষে রেফারিং নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি, ‘গোলের সময় পরিষ্কার অফসাইডে ছিল ভ্রানিয়েস। আমরা রিপ্লেতে সেটা দেখেছি। অথচ গোল দেওয়া হলো আমাদের বিপক্ষে! এমন পরাজয় মানতে পারছি না।’