মিনিটে তাঁর জন্য খরচ প্রায় ২৪ লাখ টাকা
স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে রিয়াল মাদ্রিদ? সে তো বটেই। দলবদলের খবরাখবর দেওয়ায় খ্যাতি কুড়ানো ইতালিয়ান সংবাদকর্মী ফাব্রিজিও রোমানো খবরটা দিয়েছেন। টটেনহাম হটস্পার্সে ফেরার খুব কাছে পৌঁছে গেছেন বেল। রোমানোর ভাষায়, টটেনহামে ধারে ফেরার খবরটি ইতিমধ্যেই রিয়াল সতীর্থদের জানিয়েছেন ওয়েলশ তারকা। তবে এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি দুই পক্ষ। তবু ‘গলার কাঁটা’ একটু একটু করে বেরিয়ে আসায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতেই পারে রিয়াল।
গলার কাঁটা? তা নয় তো কী! রিয়ালে বেলের জায়গা নেই—তা গত মৌসুমেই পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন কোচ জিনেদিন জিদান। বেল নিজেও থাকতে চান না মাদ্রিদের ক্লাবটিতে। তবে রিয়াল তাঁকে বিনা পয়সায় বেচতে রাজি নয়। হাজার হোক, এক সময় তো তাঁকে খরচের রেকর্ড গড়েই রিয়ালে এনেছিলেন রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। কিন্তু প্রায় এক মৌসুম বেঞ্চেই বসিয়ে রাখার পর টনক নড়েছে পেরেজের। এখন বেলকে কোনোভাবে ছেড়ে দিতে পারলেই বাঁচে রিয়াল। বেঞ্চে বসিয়ে বেতন দিয়ে পুষে রাখার তো কোনো মানে নেই।
এদিকে বেলের দাবি ছিল, নিজের ইচ্ছায় রিয়াল ছাড়বেন না, চুক্তির যে কয়দিন বাকি আছে সে কয়দিনের বেতন ঠিকই নেবেন। এখন অবশ্য পাশার দান পাল্টে গেছে। বেলকে মোটামুটি টটেনহামে পাঠানোর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে ফেলেছে রিয়াল। তাঁর জার্সি বিক্রিও বন্ধ করে দিয়েছে মাদ্রিদের ক্লাবটি। ওয়েলশ ফরোয়ার্ডের কোনো পাড় ভক্তের পক্ষেও এখন সম্ভব নয় রিয়ালের ওয়েবসাইট থেকে বেলের নাম লেখা জার্সি কেনা।
রিয়ালে কর ছাড়া বেলের সাপ্তাহিক পারিশ্রমিক ৫ লাখ পাউন্ড। এর বিনিময়ে বেলের কাছে থেকে গত মৌসুমে খুব কম সেবাই পেয়েছে রিয়াল। মাদ্রিদ ক্যারিয়ারে যে ‘শত্রু’ বারবার বাগড়া দিয়েছে, সেই চোটও হাজির হয়েছিল নিয়ম মেনে। সব মিলিয়ে মোট ১২৬০ মিনিট মাঠে ছিলেন বেল। এএস জানিয়েছে, যা দলের সম্ভাব্য মাঠে থাকার সময়ের ২৭.৫ শতাংশ। মাঠে থাকার এ সময়ে বেলের জন্য মিনিটপ্রতি রিয়ালের খরচ হয়েছে ২৩,৮০০ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৩ লাখ ৮৬ হাজার টাকা)। গত মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রিয়ালের ২০ ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন ৩১ বছর বয়সী এ উইঙ্গার। তিন গোল করানোর পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন দুই গোল।
রিয়ালের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্টে বেলের অবদানও দেখেন অনেকে। খেলা শেষ হওয়ার আগেই একা একা স্টেডিয়াম থেকে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছেন, কখনো গ্যালারিতে বসেই ঘুমানোর ভান করেছেন। আবার যেদিন জিদান আর তাঁকে নামাবেন না নিশ্চিত হয়েছেন, সেদিন দুরবিন বানিয়ে খেলা দেখার অভিনয় করেছেন। বেলের দাবি ছিল, সম্পর্কের অবনতিও হলেও রিয়ালে খেলার তাগিদ কমেনি তাঁর, ‘আমি ফুটবল খেলতে চাই এবং এখনো খেলার জন্য যথেষ্ট অনুপ্রাণিত। আমার বয়স মাত্র ৩১ বছর এবং এখনো দারুণ ফিট আমি।’
তবে বেলের যে আকাশচুম্বী বেতন, তা স্পার্স দিতে পারবে না, মোটামুটি জানা কথা। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘এএস’ জানিয়েছে, রিয়ালে বেল যে বেতন পান (প্রতি মৌসুমে সব মিলিয়ে ২০ মিলিয়ন ইউরো) সেটা ভাগাভাগি হবে। তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয়। এমনও খবর বেরিয়েছে, বোনাস দেবে রিয়াল, বেতন দেবে টটেনহাম। দেখা যাক কোথাকার জল কোথায় গড়ায়।