ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে ধুয়ে দিলেন মদরিচ
>
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারানোর পর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে একহাত নিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার লুকা মদরিচ
বিশ্বকাপ এলেই ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের রাতের ঘুম হারাম। ‘থ্রি লায়নস’রা মাঠে নামার আগেই খেলোয়াড়দের হাতে বিশ্বকাপ তুলে দেওয়ার বদঅভ্যাস আছে ব্রিটিশদের। এটা তাদের বেশ পুরোনো রোগ। এবার অবশ্য বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার পর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এই পুরোনো রোগটা ঝাড়ফুঁক দিয়ে সারানোর চেষ্টা করলেন লুকা মদরিচ।
রাশিয়া বিশ্বকাপের শুরুতে সবাইকে অবাক দিয়ে চুপচাপ ছিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম। হ্যারি কেইনরা শেষ ষোলোয় ওঠার পর থেকেই পুরোনো চেহারা দেখাতে শুরু করে তারা। হেসে লিনগার্ডের সঙ্গে যেমন রোনালদিনহোর তুলনা হয়েছে! কাল সেমিফাইনালের আগে জর্ডান পিকফোর্ডকে ‘বিশ্বের সেরা গোলরক্ষক’-এর তকমাও দিয়েছিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম। এখানেই শেষ নয়। সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ দলের সমালোচনা করতেও তারা দ্বিধা করেনি। মদরিচের চটে যাওয়ার কারণটা এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন!
শেষ ষোলো ও কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে জিতেছে ক্রোয়েশিয়া। ব্রিটিশ ফুটবলপণ্ডিতেরা সেমিফাইনালের আগে তাই মদরিচ-রাকিতিচদের ‘ক্লান্ত’ বলে সমালোচনা করেছিলেন। মজার ব্যাপার, সেমিফাইনাল টাইব্রেকারে না গড়ালেও অতিরিক্ত সময়ের খেলা হয়েছে। আর ১২০ মিনিটের এই লড়াইয়ে ক্রোয়েশিয়া জিতেছে পেছন থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে। ৩২ বছর বয়সী মদরিচ ইংলিশদের সমালোচনাটা যে প্রেরণা হিসেবেই নিয়েছিলেন, সেটি বলাই বাহুল্য। প্রথমার্ধে নিজের ছায়া হয়ে থাকলেও বিরতির পর ঠিকই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার।
ফাইনাল নিশ্চিতের পর তাই ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে স্রেফ ধুয়ে দিয়েছেন মদরিচ। ‘বেইন স্পোর্টস’কে তিনি বলেন, ‘এই (সেমিফাইনাল) ম্যাচের আগে তাদের সাংবাদিক ও টিভি-পণ্ডিতেরা আমাদের ক্লান্ত বলেছে। যেন খাটতে খাটতে শেষ! এ কথাগুলোই আমাদের প্রেরণা জুগিয়েছে ওদের ভুল প্রমাণ করতে। তাদের উচিত আরেকটু বিনয়ী ও শ্রদ্ধাশীল (প্রতিপক্ষের প্রতি) হওয়া।’
স্বাধীন দেশ হিসেবে ক্রোয়েশিয়া প্রথম বিশ্বকাপ খেলেছে ১৯৯৮ টুর্নামেন্টে। সেবার অভিষেকেই সেমিফাইনালে উঠে চমক দেখিয়েছিলেন ডেভর সুকার, জভেনিমির বোবান আর রবার্ট প্রসিনেস্কিরা। ২০ বছর পর ক্রোয়েশিয়াকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলে তাঁদের সেই অর্জনকে ছাপিয়ে গেলেন মদরিচ-রাকিতিচরা। নতুন এই ইতিহাস গড়তে সেমিফাইনালে ক্রোয়াটরা নিজেদের সর্বস্ব নিংড়ে দিয়েছে। আর এমন ম্যাচেই কিনা ইংলিশ সংবাদমাধ্যম বলছে ক্লান্তির কথা!
মদরিচ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের ভুলটা ধরিয়ে দিয়েছেন এভাবে, ‘সেমিফাইনালে ক্লান্ত হওয়া অসম্ভব ব্যাপার। কারণ, এটা কোন পর্যায়ের ম্যাচ, সেটা সবাই বোঝে। বিশ্বকাপ শুরুর আগে কেউ আমাদের গোনায় ধরেনি। কিন্তু দলীয় সংহতি, লড়াই করার ইচ্ছা আর যোগ্যতা দিয়েই আমরা ফাইনালে উঠেছি। এ জায়গাটা আমাদের প্রাপ্য।’