ম্যাচের তখন ২৬ মিনিট। ইকুয়েডরের অধিনায়ক এনার ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে বল দখলের মোকাবিলায় পা উঠিয়ে দিয়েছিলেন ব্রাজিলের গোলকিপার আলিসন বেকার। সে পা গিয়ে লাগল ভ্যালেন্সিয়ার মুখে। ব্যস, সময়ক্ষেপণ না করে লাল কার্ড দেখিয়ে দিলেন কলম্বিয়ান রেফারি উইলমার রোলদান। পরে ভিএআরের সাহায্যে রক্ষা পেলেন আলিসন, লাল কার্ড বদলে দেখানো হলো হলুদ কার্ড।
নব্বই মিনিট শেষ। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিট চলছে। এ অবস্থায় আবারও আরেক কাণ্ড করে বসলেন আলিসন। ইকুয়েডরের মিডফিল্ডার এরতন প্রেসিয়াদোর সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে বলকে পাঞ্চ করবেন কী, উল্টো প্রেসিয়াদোর মুখে ঘুষি মেরে বসলেন যেন আলিসন!
ব্যস, আবার লাল কার্ডের জন্য রোলদানের হাত চলে গেল বুকে। আবারও ভিএআরের সহায়তায় রক্ষা পেলেন লিভারপুলের গোলকিপার।
এমন চমকপ্রদ সব ঘটনাই ঘটেছে ব্রাজিল আর ইকুয়েডরের মধ্যকার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে। ১-১ গোলে শেষ হওয়া ম্যাচে দুই দল মিলে যেন রেসলিং খেলতে নেমেছিল।
দুই–দুইবার মাঠ থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে বেঁচেছেন আলিসন। তবে আলিসন বাঁচলেও অন্যদের ভাগ্য এত সুপ্রসন্ন ছিল না। ম্যাচের ১৫ মিনিটেই লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ইকুয়েডরের গোলকিপার আলেক্সান্ডার দমিঙ্গেজ।
ম্যাচে ‘সমতা’ফেরাতে ২০ মিনিটের মধ্যেই দুই হলুদ কার্ড বুঝে নিয়ে প্যাভিলিয়নের জায়গা করে নিয়েছেন ব্রাজিলের রাইটব্যাক এমারসন রয়্যালও। তবে দুই দল যেভাবে মেরে খেলেছে, তাতে ২০ মিনিটে দুটো লাল কার্ডকেই কম বলে মনে হতে পারে। বাকি সময়টা দুই দলই দশজন নিয়ে খেলেছে। আলিসন বিদায় নিলে ব্রাজিলের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা নয়ে নামত, এই যা!
ছয় মিনিটে কাসেমিরোর গোলে ব্রাজিল এগিয়ে যায়। ইকুয়েডর সমতা আনে ৭৫ মিনিটে, ফেলিক্স তোরেসের কল্যাণে। ব্যস, ম্যাচে ফুটবলীয় কার্যকলাপ এটুকুই। বাকি সময়টা যে মারামারিই হলো! যাতে এমারসনের লাল কার্ড বাদে ব্রাজিলিয়ানদের মধ্যে হলুদ কার্ড দেখলেন আলিসন, রাফিনিয়া আর এদের মিলিতাও।
ইকুয়েডরই-বা পিছিয়ে থাকবে কেন? হলুদ কার্ড দেখেছেন ভ্যালেন্সিয়া আর মোজেস কায়সেদো। দুবার পেনাল্টি পেয়েও ভিএআরের সুবাদে হতাশ হয়েছে ইকুয়েডর। দুই দল মিলে ফাউল করেছে ৩২ বার। এতে এগিয়ে ইকুয়েডর (২০ বার)।
সব মিলিয়ে রেফারি রোলদানের মুণ্ডুপাত চলছে সমানে। নেইমারহীন ম্যাচে মূল নায়ক হওয়ার বাসনা নিয়েই যেন নেমেছিলেন এই রেফারি। সব মিলিয়ে নিজেদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন জিইয়ে রেখেছে ইকুয়েডর। কনমেবল অঞ্চলের গ্রুপে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার পরেই তাদের অবস্থান। ১৫ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট তাঁদের। আগেই বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে শীর্ষে থাকা ব্রাজিলের পয়েন্ট ১৪ ম্যাচে ৩৬।