ডোপ-নিষেধাজ্ঞা ওঠার কারণ যখন বিশ্বকাপ
>বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ হচ্ছিল না পাওলো গুরেইরোর। কোকেন সেবনের দায়ে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সাজা আপাতত স্থগিত। বিশ্বকাপ খেলতে আর বাধা নেই। কীভাবে?
বিশ্বকাপ খেলা প্রতিটি খেলোয়াড়ের স্বপ্ন। বিশ্বের শতকোটি মানুষের সামনে নিজ দেশের জাতীয় সংগীত নিজেদের পতাকা তুলে ধরার গর্বটাই অন্যরকম। কিন্তু দলকে বিশ্বকাপে নিয়েও যদি কেউ না খেলতে পারে, তাহলে তাঁর কষ্টটা নিশ্চয়ই আকাশ ছুঁয়ে যায়! পেরুর অধিনায়কের গল্পটাও এমনই। কোকেন সেবনের দায়ে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন পেরু অধিনায়ক পাওলো গুরেইরো। অথচ, পেরুকে বিশ্বকাপে নিয়ে যেতে তাঁর ভূমিকা ছিল দুর্দান্তই। তবে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে তাঁর সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে।
পেরু শেষবার বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলেছিল সেই ছিয়াশির মেক্সিকো বিশ্বকাপে। ৩২ বছর পর তারা আবার সুযোগ পেল চিলি-প্যারাগুয়ের মতো দলগুলোকে পেছনে ফেলে। লাতিন অঞ্চলের বাছাইপর্বে পঞ্চম হয়ে তারা সুযোগ করে নেয় চূড়ান্ত পর্বে।
পেরুর দলনায়ক গুরেইরো বাছাইপর্বের মধ্যেই স্থানীয় একটি উৎসবে অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে কোকেন মেশানো এক ধরনের চা পান করেছিলেন তিনি। পরে অক্টোবরে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচের আগে তা ধরে পড়ে ডোপ পরীক্ষায়। ফিফার ডিসিপ্লিনারি কমিটি ১২ মাস নিষিদ্ধ করে তাঁকে।
ফিফার এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন গুরেইরো। সেখানে তাঁর বক্তব্য ছিল তিনি যে চা খেয়েছিলেন, সেটি কোনোমতেই পারফরম্যান্স-বর্ধক কিছু ছিল না। নিতান্তই এক উৎসবে অংশ নিয়ে সেটি পান করেছিলেন। পেরু অধিনায়কের যুক্তি গ্রহণ করে ফিফার ডিসিপ্লিনারি কমিটি নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ কমিয়ে ছয় মাস করেছিল। সে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল এই মে মাসে! কিন্তু ডোপ বিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা (ডব্লুএডিএ) আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে মামলা করে পেরু তারকার শাস্তির মেয়াদ ১৪ মাসে উত্তীর্ণ করে।
গুরেইরো আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতের বিরুদ্ধে সুইজারল্যান্ডের সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। শুনানি শেষ সুইস সুপ্রিম কোর্ট গুরেইরো যেন বিশ্বকাপ খেলতে পারেন, সে ব্যাপারে একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছে। সুইস আদালতের যুক্তি, ৩৪ বছর বয়সী গুরেইরো আবার কোনো দিন বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাবেন কিনা, সন্দেহ। ফিফা ও মাদক বিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থার কেউই অবশ্য সুইস আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেনি। গুরেইরো যেন বিশ্বকাপে থাকেন, সে জন্য আবেদন করেছিলেন পেরুর গ্রুপ প্রতিপক্ষ ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও ডেনমার্কের অধিনায়কেরা।
গত নভেম্বরে গুরেইরোকে ছাড়াই প্লে অফে নিউজিল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়েই বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে পেরু।