ডিফেন্ডারদের গোল বলছে ফ্রান্সই চ্যাম্পিয়ন!
>বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বেলজিয়ামকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। গোল করেছেন ফরাসি ডিফেন্ডার স্যামুয়েল উমতিতি। ১৯৯৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও গোল করে ফ্রান্সকে ফাইনালে তুলেছিলেন এক ডিফেন্ডার—লিলিয়ান থুরাম। পরে শিরোপাও জিতেছিল ফ্রান্স
ফ্রান্সের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটা তাঁর—১৪২ ম্যাচ। ডিফেন্ডার বলেই হয়তো এই ম্যাচসংখ্যার পাশে মাত্র ২ গোল। তবে এই গোল দুটি দিয়েই ফরাসিদের আজীবন ঋণী করে রেখেছেন লিলিয়ান থুরাম। ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এ ডিফেন্ডারের স্মৃতিই কাল রাতে ফিরিয়ে আনলেন স্যামুয়েল উমতিতি।
১৯৯৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। স্তাদে দি ফ্রান্সে ডেভর সুকার-জভেনিমির বোবানদের ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি ফ্রান্স। ৪৬ মিনিটে ক্রোয়াটরা এগিয়ে যায় সুকারের গোলে। পরের মিনিটেই থুরামের সমতাসূচক গোল। কেউ ভাবেনি এরপর কী চমক অপেক্ষা করছে। ৬৯ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে ক্রোয়াট বক্সের মাথায় এসে হঠাৎ করেই শট নেন থুরাম। গোল! ঠোঁটে আঙুল রেখে থুরামের গোল উদ্যাপনটা এখনো অনেকের মনে আছে। তাঁর ওই গোলেই ফাইনালে উঠে যায় ফ্রান্স। এরপর তো শিরোপাও জিতে নিল স্বাগতিকেরা।
অর্থাৎ, ফ্রান্স সেবার ফাইনালে উঠেছিল ডিফেন্ডারের সৌজন্যে। এবারও কিন্তু তাই ঘটল। কাল বেলজিয়ামের বিপক্ষে সেমিফাইনালের ৫১ মিনিটে আঁতোয়ান গ্রিজমানের কর্নার থেকে হেডে গোল করেন স্যামুয়েল উমতিতি। এ ডিফেন্ডারের জয়সূচক গোলেই তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। দলটি কি তাহলে শিরোপাও জিতে নেবে? কুসংস্কারে বিশ্বাসীরা বলতেই পারেন, যেহেতু ২০ বছর আগের টুর্নামেন্টে ফ্রান্সকে ফাইনালে তুলেছিলেন এক ডিফেন্ডার আর পরে তাঁরা শিরোপাও জিতে নিয়েছিল, এবারও দলটি একই পথে হাঁটায় সম্ভাবনা উজ্জ্বল।
হ্যাঁ, এমনিতেই ফ্রান্সের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। তবে ডিফেন্ডারদের একটি কাকতালীয় ব্যাপারও আছে, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে এবার ফ্রান্সের ঘরে শিরোপা গেলেও যেতে পারে। ’৯৮ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল পর্যন্ত ফ্রান্সের হয়ে গোল করেছিলেন তিন ডিফেন্ডার—ভিসেন্তে লিজারাজু, লঁরা ব্লা ও লিলিয়ান থুরাম। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে গোল করেছিলেন লিজারাজু। শেষ ষোলো থেকে ফ্রান্স শেষ আটে উঠেছিল লঁরা ব্লাঁর গোলে। এরপর তো সেমিতে থুরামের সেই জোড়া গোল।
আর এবার ফ্রান্সের ডিফেন্ডাররা গোল করা শুরু করেছেন নকআউট পর্ব থেকে। শেষ ষোলোয় আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গোল করেন বেঞ্জামিন পাভার। শেষ আটে উরুগুয়ের বিপক্ষে রাফায়েল ভারানে আর কাল শেষ চারে স্যামুয়েল উমতিতি। দুই দশক আগের সেই টুর্নামেন্টে ফ্রান্সকে ফাইনালে তোলার পথে গোল করেছিলেন তিন ডিফেন্ডার। এবারও ফ্রান্স ফাইনালে, গোল করেছেন তিন ডিফেন্ডার। কুড়ি বছর আগের সেই টুর্নামেন্টের ফাইনালের সঙ্গে এবারের ফাইনালের ফলটা তাই আগেভাগেই মিলিয়ে নেওয়া দোষের কিছু নয়। অন্তত ফ্রান্স–সমর্থকদের কাছে।