চোট পেয়ে রোনালদো উঠতেই জয় হাতছাড়া জুভেন্টাসের

গোল করেও দলকে জেতাতে পারেননি রোনালদো।ছবি: এএফপি

করোনাভাইরাস তাঁকে লিগে তিন ম্যাচে নামতে দেয়নি। এ দুঃখ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো গত সপ্তাহেই ভুলেছেন। বদলি হিসেবে নেমে দুই গোল করে জানিয়ে রেখেছেন, করোনা তাঁর গোলের ক্ষুধা বাড়িয়ে দিয়েছে। লাৎসিওর মাঠেও তাঁর গোলের নেশাটা টের পাওয়া গিয়েছিল। ১৫ মিনিটেই জুভেন্টাসকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ম্যাচ শেষে এ নিয়ে আনন্দ করার ফুরসত পেলেন আর কই!

দ্বিতীয়ার্ধে হালকা চোট পাওয়ায় তাঁকে তুলে নিয়েছিলেন জুভেন্টাস কোচ আন্দ্রেয়া পিরলো। তাঁকে ছাড়া ছন্নছাড়া হয়ে যাওয়া জুভেন্টাসও এক গোলের লিডটা ধরে রাখতে পারল না। ৯৫ মিনিটে গোল খেয়ে লাৎসিওর মাঠ থেকে ১-১ গোলে ড্র নিয়ে ফিরেছেন তুরিনের বুড়িরা।

লিগে এ নিয়ে তিন ম্যাচ খেলেই পাঁচ গোল করেছিলেন রোনালদো। মিনিটের হিসাবে প্রতি ৪৩ মিনিটে এক গোল! করোনার কারণে দুই সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকা এই ৩৫ বছর বয়সেও তাঁর খেলায় কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি! শুধু গোল করেননি, যতক্ষণ মাঠে ছিলেন স্বচ্ছন্দে ছিল তাঁর দল। লাৎসিওর মাঠেও প্রাধান্য ছিল জুভেন্টাসের। কিন্তু রোনালদো নামতেই অন্তঃসারশূন্য এক দল হয়ে পড়েছিল জুভেন্টাস।

১৫ মিনিটে রোনালদোর গোলে অবশ্য মূল ভূমিকা হুয়ান কুয়াদ্রাদোর।। কলম্বিয়ান এই উইঙ্গার প্রয়োজনে রাইটব্যাক বনে যান। কিন্তু আজ নিজের পুরোনো পরিচয়ের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন এক দৌড়ে। তাঁর দারুণ এক ক্রস থেকে শুধু পা ছোঁয়ানো দরকার ছিল রোনালদোর। আর জুভেন্টাসের জার্সিতে দুই বছর ধরেই তো রোনালদো দেখাচ্ছেন ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় থাকা আর ঠিক কাজটা করায় তাঁর তুলনীয় খেলোয়াড় খুব কমই আছেন।

শেষ মুহূর্তের গোলে হার এড়ানোর উল্লাস লাৎসিওর।
ছবি: রয়টার্স

রোনালদো আরও গোটা দুই গোল পেতে পারতেন। কিন্তু দুবারই ভাগ্য তাঁর বিপক্ষে গেছে। একবার তাঁর শট গোলপোস্টে লেগে ফিরেছে। আরেকবার পেপে রেইনা তাঁর ক্যারিয়ারের উজ্জ্বলতম দিনগুলোর স্মৃতি ফিরিয়ে গোলবঞ্চিত করেছেন রোনালদোকে। দ্বিতীয়ার্ধেও গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেও লাভ হয়নি পর্তুগিজ যুবরাজের।

হালকা ব্যথা পাওয়ায় ম্যাচ শেষ হওয়ার ১৪ মিনিট আগেই রোনালদোকে তুলে নেন কোচ আন্দ্রেয়া পিরলো। তাতেই কিনা, আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে লাৎসিও। গত মৌসুমে ইউরোপের গোল্ডেন শু-জয়ী চিরো ইম্মোবিলেকে ছাড়া নামা লাৎসিওর আক্রমণে সেই আত্মবিশ্বাসের প্রভাব দেখা গেছে। শেষ দিকে রোনালদোর অনুপস্থিতিতে নিজেদের রক্ষণ নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা করতে না হওয়ায় আক্রমণে পুরো মনোযোগ দিতে পেরেছে গতবার লিগে চতুর্থ হওয়া দলটি। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটেই কাঙ্ক্ষিত গোলটি ধরা দিল।

বাঁ প্রান্ত দিয়ে একে একে জুভেন্টাসের তিন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে যান আর্জেন্টাইন উইঙ্গার হোয়াকিন কোরেয়া। তাঁর বাড়িয়ে দেওয়া বল দারুণ দক্ষতায় বুঝে নেন ফেলিপে কাইসেদো। বল যখন পেয়েছিলেন কাইসেদো, গোলবার তাঁর পেছনে ছিল। ওই অবস্থায়ই শরীর ঘুরিয়ে রেখেই কাইসেদোর দারুণ এক শট লাৎসিওকে এনে দিয়েছেন এক পয়েন্ট।

শেষ মুহূর্তের হতাশা জুভেন্টাসকে লিগের শীর্ষে থাকা এসি মিলান থেকে তিন পয়েন্ট পেছনে ফেলে দিল। লিগে ৭ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট জুভেন্টাসের। মিলানের ১৬ পয়েন্ট এসেছে ৬ ম্যাচে, সপ্তম ম্যাচটি আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১.৪৫ মিনিটে মিলান খেলবে ভেরোনার সঙ্গে।