গুরুকে গোলের বন্যায় ভাসালেন শিষ্য
মার্সেলো বিয়েলসা ও পেপ গার্দিওলা। গুরু–শিষ্য। এ নিয়ে বহু কিছু বলা হয়েছে, হয়েছে লেখা। আজকের পেপ গার্দিওলাকে গড়ে তোলার পেছনে আর্জেন্টাইন বিয়েলসার যে বড় অবদান। কোচিং প্রজ্ঞায় এই আর্জেন্টাইনের সমকক্ষ মানুষ আছে হাতে গোনা।
শুধু গার্দিওলাই নন, তাঁর কাছ থেকেই কোচিং ক্যারিয়ারের বিভিন্ন সময়ে অনুপ্রাণিত হয়েছেন মরিসিও পচেত্তিনো, হোর্হে সাম্পাওলি, এদুয়ার্দো বেরিজ্জো, জেরার্ডো মার্টিনোর মতো কোচ। বিয়েলসা যেন গার্দিওলার কাছে প্রবাদপুরুষের সমান, ‘সে যেভাবে খেলাটা এবং খেলোয়াড়দের প্রভাবিত করেছে, সে তুলনায় তার জেতা ট্রফির গুরুত্ব কম। আমার কাছে সে বিশ্বের সেরা কোচ।’
তো সেই গুরুর দল লিডসের বিপক্ষে গত রাতে লিগ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল গার্দিওলা ম্যানচেস্টার সিটি। গুরুর কাছ থেকে পাওয়া বিদ্যাটা গুরুর ওপরই বেশ ভালোভাবে প্রয়োগ করেছেন এই স্প্যানিশ কোচ। আর তাতেই গোলবন্যায় ভেসে গেছে লিডস। নিজেদের মাঠে লিডসকে ৭-০ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি।
৭ গোল করেছেন ৬ জন মিলে। ফিল ফোডেন, জ্যাক গ্রিলিশ, রিয়াদ মাহরেজ, জন স্টোনস, নাথান আকে প্রত্যেকে করেছেন ১টি করে গোল। ওদিকে বেলজিয়ান মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনা করেছেন ২ গোল। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বের্নার্দো সিলভা গোল পাননি যদিও।
৪-৩-৩ ছকে নামা সিটির একাদশে নিষেধাজ্ঞার কারণে মাঠের বাইরে থাকা রাইটব্যাক জোয়াও কানসেলো ছিলেন না। আরেক রাইটব্যাক কাইল ওয়াকারকেও নামাননি গার্দিওলা। সেন্টারব্যাক জন স্টোনসকে খেলিয়েছেন রাইটব্যাক হিসেবে। ওদিকে স্ট্রাইকারহীন সিটিতে স্ট্রাইকারের ভূমিকা দেওয়া হয়েছিল মিডফিল্ডার ফোডেনকে। ৮ মিনিটে এই ফোডেনই প্রথম এগিয়ে দেন সিটিকে। ৮ মিনিটে সিটির রক্ষণের ভুলের সুযোগ নিয়ে গোলকিপার ইয়ান মেইলিয়ারকে বোকা বানিয়ে গোল পেয়ে যান ফোডেন।
১৩ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান আরেক ইংলিশ মিডফিল্ডার গ্রিলিশ। আলজেরিয়ান মিডফিল্ডার রিয়াদ মাহরেজের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে ম্যাচে নিজের প্রথম গোল পেয়ে যান গ্রিলিশ। ৩২ মিনিটে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার রদ্রির কাছ থেকে বল পেয়ে বাঁ পায়ের শটে স্কোরলাইন ৩-০ করে দেন ডি ব্রুইনা।
৪৯ মিনিটে আবারও লিডস-রক্ষণে সমস্যা। মাহরেজের শট লেফটব্যাক জুনিয়র ফিরপোর পায়ে লেগে দিক বদলে গোল হয়ে যায়। ৫৩ মিনিটেই ইলকায় গুনদোয়ানের কল্যাণে আরেকটা গোল পেয়ে যেত সিটি, কিন্তু সেই শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৬১ মিনিটে মাহরেজের পাসে ফোডেন গোল পেলেও ভিএআরের কারণে সে গোল বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু সেই হতাশা ১ মিনিটও থাকেনি সিটির। ৬২ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল পেয়ে যান ডি ব্রুইনা। তাঁর ডান পায়ের দূরপাল্লার শটটার কোনো জবাব ছিল না মেইলিয়ারের কাছে।
এবার গোলের খাতায় নাম লেখানো শুরু করেন ডিফেন্ডাররা। বাঁ পায়ের শটে ৭৪ মিনিটে দলকে ৬-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন জন স্টোনস। ৭৮ মিনিটে ফোডেনের কর্নারে মাথা ছুঁইয়ে দলের সপ্তম গোল করেন ডাচ্ ডিফেন্ডার নাথান আকে।
১৭ ম্যাচে ৪১ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরেই আছে সিটি। এক ম্যাচ কম খেলে লিভারপুলের পয়েন্ট ৩৭, তারা আছে দ্বিতীয় স্থানে।