২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

আগামী বছরের ফাইনালের জন্য হোটেল বুকিং দেওয়ার পরামর্শ ক্লপের

হারের পর ফন ডাইককে সান্ত্বনা দিচ্ছেন ক্লপছবি: রয়টার্স

লিভারপুলের যে ফাইনাল থেকে আরও বেশি কিছু প্রাপ্য ছিল, সেটি বোঝার জন্য ইয়ুর্গেন ক্লপ হওয়ার দরকার পড়ে না। লিভারপুল কোচ এমনিতেও সেটি বলারই কথা। বলের দখলে, শটে এগিয়ে থেকেও হেরে যাওয়া দলের কোচের কণ্ঠে এমন কথা তো নিয়মিতই শোনা যায়।

নিয়মিত যেটি শোনা যায় না, সেটি হলো, ক্লপের মতো এমন নিশ্চয়তা দেওয়া প্রতিশ্রুতি। এ বছরের চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে হারতে না হারতেই আগামী বছরের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে দলকে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন ক্লপ। সে জন্য প্রয়োজনে এখনই হোটেল বুকিং দিয়ে রাখার পরামর্শ তাঁর!

আরও পড়ুন

পুরোনো ইতিহাস অবশ্য আগামী বছরের ফাইনাল নিয়ে এমনিতেই লিভারপুল সমর্থকদের রোমাঞ্চিত করে রাখবে। দুটি কারণে। এক, লিভারপুলে ক্লপ ২০১৮ সালে তাঁর প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে হারের পরের বছরই দলকে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্ব এনে দিয়েছেন। মজার ব্যাপার, সে ক্ষেত্রেও ২০১৮ সালে হারটা ছিল রিয়ালের বিপক্ষে।

আর দ্বিতীয় কারণ, আগামী বছরের ফাইনালের ভেন্যু ইস্তাম্বুল। ২০০৫ চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে এই ইস্তাম্বুলেই টুর্নামেন্ট ইতিহাসের সবচেয়ে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে শিরোপা জিতেছিল স্টিভেন জেরার্ডের লিভারপুল।

ক্লপ অবশ্য এতকিছু হিসেব কষে কথাটা বলেছেন বলে মনে হয় না। আগামী বছরের ফাইনালের আগে কত কী ঘটে যাবে, তা কে জানে! অনিশ্চয়তার হিসেব ক্লপেরও আছে। এ প্রতিশ্রুতি বরং একটা হারের পর তাৎক্ষণিক জেদ, দলকে-সমর্থকদের উজ্জীবিত করার তাড়ণা থেকে আসা প্রতিক্রিয়া বলেই মনে হতে পারে।

কী বলেছেন ক্লপ? ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে লিভারপুল কোচের কণ্ঠে বিশ্বাসের অনুরণন, ‘আমার ছেলেরা সত্যিই অনেক প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ মানসিকতার। অসাধারণ একটা গ্রুপ আমাদের। আগামী মৌসুমে আমরা আবার একটা অসাধারণ গ্রুপ গড়ে তুলব, আবার ঝাঁপিয়ে পড়ব। অবশ্যই অন্যদের চেয়ে একটু বেশিই চেষ্টা করতে হবে আমাদের, তবে সেটা সমস্যা নয়। আগামী বছর ফাইনালটা কোথায়? ইস্তাম্বুল? হোটেল বুক করে রাখুন!’

আরও পড়ুন
লিভারপুল অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসন রানার্সআপের পদকে হতাশ, তাঁকেও সান্ত্বনা ক্লপের
ছবি: রয়টার্স

আপাতত এই বছরে তাকালে প্যারিসের হোটেল থেকে লিভারপুলে খালি হাতে ফেরার বেদনা পোড়াবে ক্লপকে। ফাইনালে কাল লিভারপুল খারাপ খেলেনি। শটে, বলের দখলে, আক্রমণে – সব বিভাগেই রিয়ালের চেয়ে এগিয়ে ছিল। কিন্তু দুই বক্সে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে রিয়াল মাদ্রিদই মাথা ঠান্ডা রাখতে পেরেছে বেশি। গোলপোস্টে কোর্তোয়া অবিশ্বাস্য ফর্মে ছিলেন, অন্যদিকে রিয়ালের বলার মতো অল্প কিছু আক্রমণের একটিতে গোল করেছেন ভিনিসিয়ুস।

লিভারপুলকে ২০১৯ চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতানোর আগে-পরে আরও দুই ফাইনালে দলকে নিয়েও হার দেখা ক্লপের অনুভূতি, ‘আমরা লক্ষ্যে শট বেশি নিয়েছি, কিন্তু সবচেয়ে পার্থক্য গড়ে দেওয়া শটটা মাদ্রিদের। ওরা গোল করেছে, আমরা করতে পারিনি। বিশ্ব ফুটবলের সহজতম ব্যাখ্যা এটিই। কঠিন, কঠোর ব্যাখ্যা’ – বলেছেন ক্লপ।

সালাহরা একের পর এক সুযোগ নষ্ট করায় গোল পায়নি লিভারপুল
ছবি: রয়টার্স

তবে সহজে ব্যাখ্যা দিয়েও হতাশা তো আর যায় না। ক্লপের কণ্ঠে সেটি স্পষ্টই বোঝা যায়, ‘আমরা আরও ভালো ফুটবল খেলতে পারতাম। ওরাও আরও ভালো খেলতে পারত। দুই দলই সমানে সমান ছিল, তবে গোলটা বাদ দিলে আমাদের পোস্টে ওদের আর কোনো শট ছিল না। আমরা ভালো ভালো অনেক কিছুই করেছি, কিন্তু সেটা যথেষ্ট ছিল না।‘

তাতে নিশ্চিত হলো, কদিন আগেও শিরোপা-চতুষ্টয় বা কোয়াড্রপলের স্বপ্ন দেখা লিভারপুল মৌসুমের সবচেয়ে বড় দুই ট্রফি লিগ আর চ্যাম্পিয়নস লিগের কোনোটিই পেল না। এক পয়েন্টের ব্যবধানে লিগ শিরোপার দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছে, চ্যাম্পিয়নস লিগেও ফাইনালে উঠে স্বল্পতম ব্যবধানে হার।

আরও পড়ুন

ক্লপের তবু গর্ব তাঁর খেলোয়াড়দের নিয়ে, ‘ড্রেসিংরুমে ছেলেদের বলেছি যা হয়েছে তা নিয়েই আমার অনেক গর্ব। অসাধারণ একটা মৌসুম কাটিয়েছে ছেলেরা। যে দুটি শিরোপা জিততে পারিনি, সেগুলো পারিনি স্বল্পতম ব্যবধানে। ছেলেরা আরও পরে গিয়ে বুঝবে ওরা এই মৌসুমে যা করেছে সেটা কতটা স্পেশাল ছিল। হ্যাঁ, এই সাফল্যটা অন্যরকম, আমরা এরকম সাফল্য চাইনি। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমরা ফিরে আসব!’