ব্যালন ডি’অর জেতার পথটা ‘সহজ ছিল না’ বেনজেমার
দীর্ঘদিন ছিলেন সতীর্থ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ছায়া হয়ে। প্রাপ্যটা স্বীকৃতিটা কখনো পাবেন কি না, এ নিয়েও সন্দেহ ছিল। সেক্সটেপ–কাণ্ডে সতীর্থকে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগে ফ্রান্স দলের বাইরে ছিলেন সাড়ে পাঁচ বছর।
সে সময়কে পাশ কাটিয়ে করিম বেনজেমা প্যারিসে সোমবার রাতে জমকালো অনুষ্ঠানে বহু কাঙ্ক্ষিত ট্রফিটি উঁচিয়ে ধরলেন। গত মৌসুমে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি হিসেবেই প্রথমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জিতলেন এই ফরাসি স্ট্রাইকার। বেনজেমা ৫ম ফরাসি ফুটবলার হিসেবে জিতছেন ব্যালন ডি’অর। পেছনে ফেলেছেন রবার্ট লেভানডফস্কি, কেভিন ডি ব্রুইনা ও সাদিও মানেকে।
ব্যক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের বর্ষসেরার এই ট্রফি জেতার প্রতিক্রিয়ায় বেনজেমা মনে করিয়ে দিয়েছেন সেই চড়াই-উতরাই পেরোনো দিনগুলোর কথা, ‘যখন আমি ফ্রান্স দলে ছিলাম না, সে সময়টা কঠিন ছিল। কিন্তু আমি কখনো হাল ছাড়িনি। কঠোর পরিশ্রম করেছি এবং এবং খেলাটা উপভোগ করেছি। আমার পথচলা নিয়ে আমি গর্বিত। আমার ও আমার পরিবারের জন্য পথটা সহজ ছিল না।’
৩৪ বছর বয়সে এসে প্রথম ব্যালন ডি’অর জিতেছেন বেনজেমা। ১৯৫৬ সালে স্ট্যানলি ম্যাথিউসের পর বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে ব্যালন ডি’অর জিতেছেন এই ফরাসি স্ট্রাইকার। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বয়সে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করা এই ফুটবলারের কাছে বয়স শুধুই একটা সংখ্যা, ‘বয়স আমার কাছে স্রেফ একটা সংখ্যা। এখন অনেকে পড়ন্ত বয়সেও খেলে যাচ্ছে আর আমার মধ্যে এখনো নিজের সেরাটা দেওয়ার মনোভাব আছে। এই ইচ্ছাশক্তিই আমাকে এগিয়ে নিয়েছে এবং কখনো হাল ছাড়তে দেয়নি।’
এবারের ব্যালন ডি’অর বেনজেমার হাতে তুলে দেন তারই স্বদেশি কিংবদন্তি জিনেদিন জিদান। বেনজেমার আগে সর্বশেষ ফরাসি ফুটবলার হিসেবে এই ট্রফি জিতেছিলেন জিদান। নিজের আদর্শ জিদানের কাছে থেকে ট্রফি নেওয়া বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে বেনজেমার অর্জনে, ‘আমার জীবনে দুজন আদর্শ জিদান এবং রোনালদো। আমার মধ্যে সব সময় এ স্বপ্ন ছিল যে, সবকিছু সম্ভব।’
গত মৌসুমে বেনজেমা সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৬ ম্যাচে গোল করেছিলেন ৪৪টি, করিয়েছেন ১৫টি। লা লিগায় ৩২ ম্যাচে তাঁর গোল ছিল ২৭টি আর চ্যাম্পিয়নস লিগে ১২ ম্যাচে করেছিলেন ১৫ গোল। মৌসুমে অনেক ম্যাচের ভাগ্য একাই বদলে দিয়েছিলেন বেনজেমা। রিয়ালের লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ে ছিল বড় অবদান। তাই ব্যালন ডি’অর যে তাঁর হাতেই উঠবে, সেটা অনেকটা নিশ্চিতই ছিল।