নেইমারের ঠিকানা কি তাহলে নিউক্যাসলই হচ্ছে
নেইমারকে কিনতে চায় নিউক্যাসল ইউনাইটেড—এমন গুঞ্জন অনেক দিন থেকেই বাতাসে ভাসছিল। কিছুদিন আগে নতুন করে গুঞ্জন ওঠে, নেইমারেরও নাকি পিএসজি থেকে মন উঠে গেছে, প্যারিসে আর থাকার ইচ্ছা নেই।
এখন পর্যন্ত কোনো কিছু নিশ্চিত না হলেও বাতাসের গতি একই পথ ধরে এগোচ্ছে। মৌসুম শেষে নেইমারকে দলে ভেড়াতে নিউক্যাসল নাকি নিজেদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম রেলেভো এ খবর নিশ্চিত করেছে।
সৌদি মালিকানায় যাওয়ার পর থেকেই ইংল্যান্ডের পাশাপাশি ইউরোপের সেরা ক্লাবগুলোর একটি হওয়ার দিকে মনোযোগ দিয়েছে নিউক্যাসল। তবে খেলোয়াড় বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তারা শুরু থেকেই কিছুটা কৌশলী অবস্থান নেয়। বড় নাম দলে ভেড়ানোর চেয়ে ক্লাবের ভিত্তি শক্ত করার দিকেই বেশি নজর ‘ম্যাগপাই’দের। ফল, চলতি মৌসুমে ক্লাবটির সেরা চারে থাকার সম্ভাবনাও বেশ উজ্জ্বল হয়েছে। সবশেষ ব্রাইটনকে ৪–১ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকায় নিজেদের অবস্থান আরও দৃঢ় করেছে নিউক্যাসল।
বর্তমানে ৩৬ ম্যাচ শেষে ৬৯ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে আছে নিউক্যাসল। নাটকীয় পতন না ঘটলে সেরা চার থেকে লিগ শেষ করে আগামী মৌসুমে ক্লাবটির চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলা অনেকটাই নিশ্চিত। আর প্রাথমিক এই লক্ষ্য পূরণ হলে নতুন করে দল গোছানোয় মনোযোগ দেবে তারা।
আগামী মৌসুমে ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চকে মাথায় রেখে নিউক্যাসল নাকি এমন খেলোয়াড় আনতে চায়, যাঁরা কিনা পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন। এ কারণেই মূলত নেইমারকে নিয়ে ক্লাবটির এত আগ্রহ। ক্লাবটির বিশ্বাস, নেইমারকে পেলে ক্লাবের ব্র্যান্ড মূল্য বাড়ার পাশাপাশি মাঠের খেলায়ও বিশেষ পরিবর্তন আসবে। এরই মধ্যে নিউক্যাসলের প্রতিনিধি নাকি নেইমারের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কথাও বলেছে।
এদিকে নেইমার নিজেও নাকি পিএসজি ছাড়তে চান। ২০১৭ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় হিসেবে নেইমারকে কিনেছিল প্যারিসের ক্লাবটি। নেইমারের ওপর যে প্রত্যাশা, সেটি পূরণ না হওয়ায় পিএসজি কর্তৃপক্ষ নাকি খুশি নয়। গত কয়েক মৌসুম ধরে চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপাকে পাখির চোখ করলেও এখন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত সেই সাফল্য ধরা দেয়নি।
শুধু ক্লাবই নয়, তাঁকে নিয়ে অখুশি সমর্থকেরাও। কদিন আগে নেইমারের ক্লাব ছাড়ার দাবিতে তাঁর বাড়ির সামনে স্লোগান দিয়েছেন সমর্থকেরা। এসব নিয়ে নেইমার নিজেও নাকি বিরক্ত। যে কারণে আগামী দলবদলে নতুন ক্লাবের সন্ধানে আছেন নেইমার নিজেও। কিন্তু পিএসজির সঙ্গে তাঁর বর্তমান চুক্তির মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত।
রেলেভো অবশ্য বলছে নেইমারের সঙ্গে নিউক্যাসলের চুক্তিটা খুব সহজে হওয়ার নয়। আর্থিক শর্তে দুই পক্ষের সমঝোতায় আসা নিয়ে কিছু জটিলতাও হতে পারে। বিশেষত নেইমারের উচ্চ বেতনের চাহিদা নিয়ে দোলাচলে আছে নিউক্যাসল। এর আগে নিউক্যাসল কোচ এডি হাউ নেইমার–রোনালদোর মতো তারকাদের দলে টানা নিয়ে কথা বলেছিলেন।
সে সময় হাউ নিজেও আর্থিক সীমাবদ্ধতাকে প্রধান প্রতিবন্ধকতা বলে উল্লেখ করেছিলেন। নিউক্যাসল কোচ তখন বলেছিলেন, ‘তারা (রোনালদো–নেইমার) বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। তাদের কেনার সামর্থ্যের কাছাকাছিও আমরা যেতে পারি না। বর্তমানে তাদের ট্রান্সফার ফি এবং বেতন দেওয়ার মতো অবস্থানে আমরা নেই। তাই আমাদের তরুণ খেলোয়াড় খুঁজে তাদের গড়ে তুলতে হবে।’
রেলেভো অবশ্য বেশ জোর দিয়েই বলছে যে নেইমার যদি শেষ পর্যন্ত পিএসজি ছাড়েন, নিশ্চিতভাবেই তাঁর গন্তব্য হবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। এর কারণ হচ্ছে তাঁর দাম ও বেতন।