প্রতিপক্ষের পা ভেঙে মার্সেলোর কান্না
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে। ভয়ংকর এক দৃশ্য। কোপা লিবার্তাদোরেসে শেষ ষোলোর প্রথম লেগে কাল বুয়েনস এইরেসে আর্জেন্টিনো জুনিয়র্সের মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিলের ক্লাব ফ্লুমিনেন্স। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে বল পায়ে দৌড়ানোর সময় জুনিয়র্সের ডিফেন্ডার লুসিয়ানো সানচেজের বাঁ পা অনিচ্ছাকৃতভাবে মাড়িয়ে দেন ব্রাজিল ও রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক লেফটব্যাক মার্সেলো। সেই ঘটনার ভিডিওই ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, মার্সেলোকে বাধা দিতে বাঁ দিক থেকে দৌড়ে এসেছিলেন সানচেজ। সামনে পা বাড়িয়েছিলেন। মার্সেলোও এগিয়ে যেতে বাঁ পা বাড়াতেই দুর্ঘটনাক্রমে লুসিয়ানো সানচেজের বাঁ পা মাড়িয়ে দেন। ভিডিও দেখে মনে হয়েছে তৎক্ষণাৎ পাটকাঠির মতো সানচেজের পা ভেঙে গেছে। মার্সেলো এ জন্য লাল কার্ড দেখলেও লুসিয়ানো সানচেজের বড় ক্ষতি করে দেওয়ার কষ্টে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়েছেন। ১-১ ড্র হওয়া এই ম্যাচে সানচেজ আঘাত পাওয়ার পর মাঠেই ব্যথায় চিৎকার করছিলেন। মার্সেলো তখন তাঁর পাশেই মাথায় দুই হাত দিয়ে হতাশা প্রকাশ করছিলেন।
চিকিৎসকের দল আসার পর সানচেজকে স্ট্রেচারে করে মাঠের বাইরে নেওয়া হয়। সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) জানিয়েছে, আর্জেন্টিনো জুনিয়র্সের প্রকাশ করা মেডিকেল রিপোর্টে জানা গেছে, হাঁটু থেকে সানচেজের পা পুরোপুরি স্থানচ্যুত হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে এপি জানিয়েছে, সানচেজকে যে হাসপাতালে (সানাচোরিয়া ফিনোচিয়েত্তো) ভর্তি করা হয়েছে, সেখানকার চিকিৎসকদের মতে, সুস্থ হয়ে উঠতে তাঁর ৮ থেকে ১২ মাস সময় লাগবে।
এই ঘটনার পর আজ বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টার দিকে টুইট করেন মার্সেলো। ৩৫ বছর বয়সী এই লেফটব্যাক লিখেছেন, ‘আজ মাঠে খুব কঠিন এক মুহূর্তের সম্মুখীন হয়েছি। অনিচ্ছাকৃতভাবে এক খেলোয়াড়কে আঘাত করেছি। লুসিয়ানো সানচেজ, আমি তোমার সর্বোচ্চ সুস্থতা কামনা করি। পৃথিবীর সব শক্তি তোমার জন্য।’ মার্সেলোর এই টুইট রি-টুইট করে আর্জেন্টিনো জুনিয়র্সের টুইটে লেখা হয়, ‘আমরা প্রতিদ্বন্দ্বী, কিন্তু শত্রু নই। পাশে দাঁড়ানোর জন্য মার্সেলোনা ও ফ্লুমিনেন্সকে ধন্যবাদ।’
তবে ফ্লুমিনেন্সের কোচ ফার্নান্দো দিনিজ মার্সেলোর লাল কার্ড দেখার সমালোচনা করেছেন, ‘আমি একটি রূপক উদাহরণ দিতে চাই। রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় যা ঘটে, তার সঙ্গে এটার মিল আছে। সবুজ বাতির সংকেত পেয়ে কেউ রাস্তা পার হওয়ার সময় কিছু ঘটলে সেটা গাড়িচালকের ভুল। মার্সেলো ড্রিবলিং করছিল এবং পা ফেলার জায়গা ছিল না। আহত খেলোয়াড়টির পাশে আছে সবাই, এটা আলাদা ব্যাপার, কিন্তু লাল কার্ড দেখানোর সিদ্ধান্ত পুরোপুরি ভুল। মার্সেলোর প্রতিক্রিয়া দেখলেই বোঝা যায়, সে এটা ইচ্ছা করে করেনি।