প্রায় ১০ মাস আর ৩৮০ ম্যাচের দীর্ঘ এক মৌসুম। প্রতিযোগিতায় ম্যাচ বাকি আরও ১৬টি। তবে এইমাত্র হয়ে যাওয়া ৩৬৪তম ম্যাচটাতেই বোধ হয় ফুটবলপ্রেমীদের দৃষ্টি ছিল বেশি।
ম্যাচটা কোনো মহারণও নয়। তবু নটিংহাম ফরেস্টের সঙ্গে আর্সেনালের লড়াই আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকার একমাত্র কারণ ম্যানচেস্টার সিটি। ম্যাচটার ফলের ওপর যে নির্ভর করছিল আজই সিটির শিরোপা ধরে রাখা নিশ্চিত হওয়া–না হওয়া!
শেষমেশ সিটির চাওয়াই পূরণ হয়েছে। আর্সেনালকে ১–০ ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে নটিংহাম। ১৯ মিনিটে দলটির হয়ে জয়সূচক গোলটি করেছেন নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড তাইয়ো আয়োনিয়ি।
এ জয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে টিকে থাকা নিশ্চিত হলো নটিংহামের। আর ৩ ম্যাচ বাকি রেখে টানা তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হলো পেপ গার্দিওলার সিটি।
৩৫ ম্যাচ খেলে সিটির পয়েন্ট ৮৫, ৩৭ ম্যাচে আর্সেনালের ৮১। উলভারহ্যাম্পটনের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে জিতলেও আর লাভ হবে না গানারদের। সিটি বাকি তিন ম্যাচ হারলেও তাদের কিছু আসে-যাবে না।
দেড় যুগের বেশি সময় পর এবার লিগ জয়ের আশা জাগিয়েছিল আর্সেনাল। প্রায় পুরো মৌসুম দাপটের সঙ্গে খেলেছে মিকেল আরতেতার তরুণ এই দল। সব মিলিয়ে ২৪৮ দিন ছিল পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। সেই দলই কি না মৌসুমের শেষ ভাগে এসে গুবলেট পাকিয়ে ফেলেছে!
গত এপ্রিল থেকে অবিশ্বাস্য ছন্দপতনে শীর্ষ স্থান খুইয়েছে আর্সেনাল। এ সময়ে টানা ৮ ম্যাচ জিতে লিগ শিরোপা ধরে রাখা নিশ্চিত করে ফেলেছে সিটি। যে প্রিমিয়ার লিগকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ঘরোয়া ক্রীড়া আসর ভাবা হয়, গার্দিওলা দায়িত্বে আসার পর সেটিকে একপেশে বানিয়ে ফেলেছে ম্যানচেস্টারের ক্লাবটি। এ নিয়ে গত এক যুগে সাতবার চ্যাম্পিয়ন হলো সিটি, সর্বশেষ ৬ মৌসুমে পাঁচবার!
আর্লিং হলান্ড–কেভিন ডি ব্রুইনারদের অপেক্ষা কিছুটা বাড়াতে হলে আর্সেনালকে এ ম্যাচে হার এড়াতেই হতো। নটিংহামের মাঠে সেই চাপ নিতে পারেননি মার্তিন ওদেগার্দ–গ্যাব্রিয়েল জেসুসরা। নয়তো কি আর বল দখলে একচেটিয়া আধিপত্য ধরে রেখেও উল্টো গোল খেয়ে বাসেন!
আর্সেনাল অধিনায়ক ওদেগার্দ বলের নিয়ন্ত্রণ হারালে আক্রমণে ওঠেন নটিংহাম মিডফিল্ডার গিবস হোয়াইট। ডি বক্সে তাঁর বাড়ানো পাসে বল পেয়ে আর্সেনাল গোলরক্ষক অ্যারন রামসডেলকে বোকা বানাতে ভুল করেননি আয়োনিয়ি।
এরপর দারুণ ডিফেন্ডিং করে সেই লিড ধরে রেখেছে নটিংহাম। তাতে ২৩ বছর প্রিমিয়ার লিগে ফেরা দলটি অবনমনের শঙ্কা উড়িয়ে টিকে গেছে। সঙ্গে সিটির আনন্দের উপলক্ষ্যটাও একটু চটজলদি এনে দিয়েছে।
প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা ধরে রাখা নিশ্চিত করে ট্রেবল জয়ের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল সিটি। এখন এফএ কাপ আর পরম আরাধ্যের চ্যাম্পিয়নস লিগটা জিতলেই হয়।