সাবিনা বললেন, বাংলাদেশের মান রাখতে পেরেছি
দেশ ছাড়ার আগে জোরগলায় শিরোপা জেতার কথা বলতে পারেননি অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তবে বলেছিলেন, তাঁরা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দেশের মানুষের জন্যই খেলবেন। এই কথার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল লক্ষ্যটা।
দুই বছর আগে কাঠমান্ডুতেই প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে যেভাবে দেশের মানুষকে আনন্দে ভাসিয়েছিলেন, তারই পুনরাবৃত্তি চেয়েছিলেন বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়েরা। এবার মাঠে সেটিরই প্রতিফলন দেখা গেল। চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফের শ্রেষ্ঠত্ব বাংলাদেশের মেয়েদের।
এই অর্জন দেশের মানুষকেই উৎসর্গ করেছেন অধিনায়ক সাবিনা। ম্যাচের পর বাফুফের পাঠানো বার্তায় তাঁর কথা, ‘এই শিরোপা বাংলাদেশের মানুষের জন্য। তাদের দোয়া ও ভালোবাসা ছাড়া এই অর্জন সম্ভব হতো না। আমরা যে শিরোপা জিতেছি, তার দাবিদার তারাই।’
দেশের মানুষের আশা পূরণ করতে পেরেই খুশি বাংলাদেশের অধিনায়ক, ‘আমরা বাংলাদেশের মানুষের মান রাখতে পেরেছি। দুই বছর আগে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছিলাম। আমরা খেলেছি এটা মাথায় রেখে, কেউ যেন বলতে না পারে যে আমরা প্রথমবার ভাগ্যের জোরে জিতে গিয়েছিলাম। এবার শিরোপা জিতে মেয়েরা প্রমাণ করেছে, তারা ভালো ফুটবল খেলতে পারে।’
টুর্নামেন্টের শুরুটা ভালো হয়নি। পাকিস্তানের বিপক্ষে হারতে হারতে কোনোমতে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে; কিন্তু গ্রুপের প্রথম ম্যাচের পর নানা ধরনের বিতর্ক যেন ঘিরে ধরে মেয়েদের। ইংলিশ কোচ জেমস পিটার বাটলারের বিরুদ্ধেই অভিযোগ ছিল দলের একাংশের, তিনি সিনিয়র খেলোয়াড়দের পছন্দ করেন না, তাঁদের একাদশে খেলাতে চান না, এমন অনেক কিছু।
কোচ বাটলারও নিজের রাগ–ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিলেন। দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধেও তুলেছিলেন নিজের অভিযোগের তির। এমন অবস্থায় ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচটা খেলেছে দল। সব বিতর্ক এক পাশে সরিয়ে অসাধারণ এক খেলা। ভারতের বিপক্ষে ৩–১ গোলের জয়। টুর্নামেন্ট জয়ের অভিপ্রায়টা সেদিনই বোঝা গিয়েছিল।
এরপর সেমিফাইনালে ভুটানকে ৭–১ গোলে উড়িয়ে দেওয়া। যে ব্যবধান নেপালকে তাদেরই মাটিতে হারানোর বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগায়। যার প্রদর্শনী দেখা গেছে আজ ফাইনালে কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে। হাজার বিশেক দর্শকের সামনে স্নায়ুক্ষয়ী এক ম্যাচ খেলেই শিরোপায় হাত দিয়েছেন সাবিনারা। সব মিলিয়ে অসাধারণ এক অভিযাত্রা।
যে অভিযাত্রা রোমাঞ্চের, যে অভিযাত্রার শেষটা উৎসবের।