২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

বার্সা-পিএসজির স্মরণীয় ৫ লড়াই ও অন্যান্য

দারুণ কিছু ম্যাচ উপহার দিয়েছে বার্সা–পিএসজিএএফপি

চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ আটের প্রথম লেগে আজ রাতে প্যারিসে মুখোমুখি হবে বার্সেলোনা ও পিএসজি। কয়েক বছরে ইউরোপিয়ান মঞ্চে মুখোমুখি হয়ে একাধিক মনে রাখার মতো ম্যাচ উপহার দিয়েছে দুই দল। ২০১৭ সালে বার্সেলোনার লেখা প্রত্যাবর্তনের গল্প তো রীতিমতো ধ্রুপদি ফুটবল লড়াইয়ের মর্যাদাই পেয়েছে। সেবার প্রথম লেগে ৪-০ গোলে পিছিয়ে যাওয়া বার্সা পরের লেগে ঘুরে দাঁড়িয়ে পায় ৬-১ গোলের অবিশ্বাস্য জয়।

মাঠের বাইরেও এ দুই দলের দ্বৈরথের ইতিহাস আছে। ২০১৭ সালে নেইমারকে কেনা নিয়ে বিরোধপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছে গিয়েছিল দুই দল। শেষ পর্যন্ত বার্সার ইচ্ছার বিরুদ্ধে রেকর্ড মূল্যে পিএসজি কিনে নেয় ব্রাজিলিয়ান তারকাকে। এরপর লিওনেল মেসি যখন অভিমান ও হতাশায় বার্সা ছাড়েন, তখন তাঁকে আপন করে নিয়েছিল পিএসজিই।

আরও পড়ুন

অনেকেই তাই এ দুই দলের লড়াইকে এখন মজা করে ‘মেসি ডার্বি’ বলেও ডাকছেন। আজ রাতে আরেকবার মাঠে নামার আগে ঘুরেফিরে আসছে এ বিষয়গুলো। ম্যাচটি সামনে রেখেই দেখে নেওয়া যায় দুই দলের লড়াইয়ের কিছু টুকিটাকি।

মুখোমুখি (সব মিলিয়ে)

মোট ম্যাচ: ১৩
বার্সেলোনার জয়:
পিএসজির জয়:
ড্র:

চ্যাম্পিয়নস লিগে মুখোমুখি

ম্যাচ: ১২
বার্সেলোনার জয়:
পিএসজির জয়:
ড্র:

স্মরণীয় ম্যাচ

পিএসজি ২: ১ বার্সেলোনা
১৫ মার্চ ১৯৯৫, চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল

গ্রুপপর্বে ছয় ম্যাচের সবগুলো জিতে সেবার কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল পিএসজি। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল গ্রুপপর্বে কোনো রকমে পার পেয়ে যাওয়া বার্সেলোনা। ক্যাম্প ন্যুতে প্রথম লেগে অবশ্য পিএসজিকে ১-১ গোলে রুখে দেয় তারা। এরপর প্যারিসে গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর ৪৯ মিনিটে বাকেরো লিড এনে দেন ইয়োহান ক্রুইফের বার্সাকে। তবে ম্যাচের শেষ দিকে গিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় পিএসজি। ৭২ মিনিটে রাইয়ের গোলে সমতায় ফেরার পর ৮৩ মিনিটে পিএসজিকে এগিয়ে দেন ভিনসেন্ট গুয়েরিন। আর শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পিএসজি। বার্সাকে বিদায় করে সেমিতে গেলেও সেখানেই থেমেছে পিএসজির দৌড়। এসি মিলানের কাছে হেরে যায় তারা।

বার্সেলোনা ১: ০ পিএসজি
১৪ মে ১৯৯৭, কাপ উইনার্স কাপ ফাইনা

বার্সা-পিএসজি একে অপরের বিপক্ষে ১৩ ম্যাচের ১২টিই খেলেছে চ্যাম্পিয়নস লিগে। শুধু একটি ম্যাচ তারা খেলেছে কাপ উইনার্স কাপে। এই ম্যাচটি আবার ছিল প্রতিযোগিতার ফাইনাল। সেই ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদো নাজারিওর পেনাল্টি গোলে শিরোপা জিতে মাঠ ছাড়ে বার্সা। ১৯৬০ সালে যাত্রা শুরু করা এই টুর্নামেন্টটি অবশ্য বন্ধ করে দেওয়া হয় ১৯৯৯ সালে।

পিএসজি ৪: ০ বার্সেলোনা
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, চ্যাম্পিয়নস শেষ ষোলো

চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে লিওনেল মেসি-নেইমার-সুয়ারজেদের বার্সা আতিথ্য নিতে গিয়েছিল প্যারিসে। কাতারি মালিকের অর্থায়নে বদলে যাওয়া পিএসজি সেদিন নিজেদের ঝাঁজ দেখিয়েছিল। ১৮ মিনিটে আনহেল দি মারিয়ার গোলে শুরুটা দারুণ করে পিএসজি। বিরতিতে যাওয়ার আগেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ইউলিয়ান ড্রাক্সলার। বিরতির পর ৫৫ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোল আদায় করেন দি মারিয়া। এরপর ৭১ মিনিটে এদিনসন কাভানিও গোল করলে ৪-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পিএসজি।

৬–১ গোলের ঐতিহাসিক জয়ের পর এভাবেই উদ্‌যাপন করে বার্সা
বার্সেলোনা ফেসবুক

বার্সেলোনা ৬: ১ পিএসজি
৮ মার্চ ২০১৭, চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ ষোলো

৪-০ গোলে প্রথম লেগে হারের পর চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে তখনই বার্সার বিদায় ধরে নিয়েছিল অনেকে। কিন্তু ক্যাম্প ন্যুর ক্লাবটি হারার আগে হার মানতে চায়নি। ফলে দ্বিতীয় লেগে লেখা হলো চ্যাম্পিয়নস লিগের অন্যতম সেরা প্রত্যাবর্তনের গল্প। ৪ গোলে পিছিয়ে থাকা দলটিই পরে জিতল ৬-১ ব্যবধানে। সেদিন দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নেইমার। ৩ মিনিটে গোল করে শুরুটা করেন সুয়ারেজ। প্রথমার্ধে কুরাজাওয়ার আত্মঘাতী গোলে সেই ব্যবধান হয় ২-০।

বিরতির পর ৫০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন মেসি। ৬২ মিনিটে কাভানি এক গোল শোধ করলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয় বার্সার জন্য। তবে দুর্দান্ত নেইমার ৮৮ ও ৯০ মিনিটে জোড়া গোল করে দুই লেগ মিলিয়ে সমতায় ফেরান বার্সাকে। আর যোগ করা সময়ে সের্হি রবার্তোর গোলে ৬-১ (দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৫) ব্যবধানের অবিশ্বাস্য এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সা।

আরও পড়ুন

বার্সেলোনা ১: ৪ পিএসজি
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ ষোলো

সেবার প্রথম লেগে ক্যাম্প ন্যুতে বার্সাকে উড়িয়ে দিয়েছিল পিএসজি। সেদিন কিলিয়ান এমবাপ্পে একাই গুঁড়িয়ে দেন বার্সাকে। তাঁর হ্যাটট্রিকেই ৪-১ গোলের স্মরণীয় এক জয় নিয়ে ক্যাম্প ন্যু ছাড়ে পিএসজি। পরের লেগের ম্যাচটি ড্র হয় ১–১ গোলে।

শীর্ষ গোলদাতা

*নেইমার ও মেসি দুজনই বার্সা ও পিএসজির হয়ে খেলেছেন। দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে শীর্ষ গোলদাতার তালিকায় সবার ওপরে আছেন তাঁরা। তবে দুজনই নিজেদের সেরা ছন্দে ছিলেন বার্সাকে প্রতিনিধিত্ব করার সময়।