কেমন খেলল আর্জেন্টিনা, কেমন ‘ছেলেখেলা’র শিকার হলো ব্রাজিল
আর্জেন্টিনার জন্য স্মরণীয় এবং ব্রাজিলের জন্য ম্যাচটি ভুলে যাওয়ার। কিন্তু চাইলেই কি ভোলা সম্ভব! হারটা ৪-১ গোলের। ১৯৮৭ কোপা আমেরিকায় চিলির কাছে চার গোলে সেই হারের পর দক্ষিণ আমেরিকান কোনো দলের বিপক্ষে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে এই প্রথম ৪ গোল হজম করল ব্রাজিল। ম্যাচটি তাই ঐতিহাসিকও। ২০ বছর পর ঘরের মাঠে ব্রাজিলের বিপক্ষে জিতল আর্জেন্টিনা।
এক দলের জালে চার গোল হওয়ার এ ম্যাচে স্বাভাবিকভাবেই দুই দলের পারফরম্যান্স বিপরীতমুখী। আর্জেন্টিনা কেমন খেলল আর ব্রাজিল তাতে কেমন ‘ছেলেখেলা’র শিকার হলো, খেলোয়াড়দের রেটিং পয়েন্টের দেওয়ার মাধ্যমে তা নির্ধারণ করেছে ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইট গোল ডট কম। আসুন জেনে নিই—
আর্জেন্টিনা:
এমিলিয়ানো মার্তিনেজ (৭/১০)
মাথিয়াস কুনিয়ার আকস্মিক শটে গোল হজম করেছেন। এ ছাড়া ম্যাচে এমিলিয়ানো মার্তিনেজের আর তেমন কিছুই করার ছিল না।
নাহুয়েল মলিনা (৭/১০)
ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে বোতলবন্দী করে রাখার কাজটা দক্ষতার সঙ্গে সেরেছেন। আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোলে ক্রসটি তাঁর। চোখজুড়ানো খেলেননি কিন্তু যথেষ্ট কার্যকর ছিলেন।
ক্রিস্টিয়ান রোমেরো (৬/১০)
কুনিয়ার কাছে সহজে বল হারিয়ে গোল হজম করেছেন। তারপর অবশ্য যথারীতি নির্ভরতার প্রতীক। ভিনিসিয়ুসকে মার্কিং করতে অতিরিক্ত ছোটাছুটিও করেছেন।
নিকোলাস ওতামেন্দি (৭/১০)
ট্যাকল করতে কুণ্ঠা করেননি। ওয়ান-অন-ওয়ানস জিতেছেন। জায়গার ব্যবহার করেছেন দারুণভাবে। অধিনায়কসুলভ পারফরম্যান্স।
নিকোলাস তালিয়াফিকো (৭/১০)
তাঁর প্রান্ত দিয়ে ব্রাজিলের আক্রমণ খুব করলেও সামলেছেন খুব ভালোভাবে। একটি গোলের উৎসও তিনি।
লিয়ান্দ্রো পারেদেস (৭/১০)
মাঝমাঠের মূল স্তম্ভ। মাঠের গভীর থেকে খেলেছেন, চাপ নিরসনে চাতুরীপূর্ণ পাসও দিয়েছেন।
অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার (৮/১০)
পাস কাড়া থেকে দেওয়ার কাজটা করেছেন। বলের ওপর নিয়ন্ত্রণও ছিল ভালো। চোখজুড়ানো একটি গোল করেছেন।
রদ্রিগো দি পল (৭/১০)
সাধারণত বড় ম্যাচে তিনি ভালো খেলেন। আজও বলের ওপর দখল ছিল। ট্যাকল করতে কুণ্ঠা করেননি। দলের ‘ডার্টি ওয়ার্ক’গুলো সেরেছেন ভালোভাবে।
এনজো ফার্নান্দেজ (৮/১০)
একটি গোল করেছেন। একটি গোল বানিয়েছেন। পরের এক ঘণ্টার খেলা দেখে মনে হয়েছে লাল কার্ড দেখার চেষ্টা করছেন! বল থামিয়ে খেলায় গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে বাকিরা।
থিয়াগো আলমাদা (৬/১০)
এনার্জিতে পরিপূর্ণ। আক্রমণভাগে বল যেখানে ছুটে গেছেন। তবে উরুগুয়ে ম্যাচের মতো ‘ম্যাজিক মোমেন্ট’ তৈরি করতে পারেননি।
হুলিয়ান আলভারেজ (৮/১০)
ভালো গোল করেছেন। ব্রাজিল রক্ষণকে চাপে রেখেছিলেন সব সময়। আক্রমণে ভালো করেছেন।
ব্রাজিল:
বেন্তো (৫/১০)
আলিসন চোট পাওয়ায় কঠিন এক ম্যাচে পোস্টে দাঁড়িয়েছেন। একটি গোলেও তাঁর তেমন কিছু করার ছিল না। তবে পোস্টে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের প্রেরণা দিতে পারেননি।
গিলের্মে আরানা (৪/১০)
আর্জেন্টিনার চওড়া আক্রমণভাগ মোটেও সামলাতে পারেননি। বাজে ম্যাচ খেলেছেন।
মারকিনিওস (৫/১০)
অধিনায়ক হিসেবে হেরেছেন, তবে লড়াই করেছেন।
মুরিল্লো (৫/১০)
প্রথমার্ধে ভালো খেলেছেন। কিন্তু বিরতির সময় দরিভাল তাঁকে তুলে নেন। সম্ভবত রক্ষণে জুটি পছন্দ হচ্ছিল না ব্রাজিল কোচের।
ওয়েসলি (৫/১০)
আর্জেন্টিনার গতি ও প্রতি আক্রমণের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ছোটার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন।
জোয়েলিংতন (৫/১০)
মাঝমাঠে ভুগেছেন। আর্জেন্টিনার প্রেসিং ফুটবলের সামনে কুলিয়ে উঠতে পারেননি। কোচ তাঁকে তুলে নেন।
আন্দ্রে (৬/১০)
কিছু ভালো ট্যাকল করেছেন। কিন্তু বল নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারেননি।
রাফিনিয়া (৭/১০)
পুরো ম্যাচে বেশ কিছু ভালো মুহূর্ত ছিল তাঁর। আক্রমণে নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন।
ভিনিসিয়ুস জুনিয়র (৬/১০)
বল পায়ে কিছু উজ্জ্বল সময় কেটেছে। গতিও ভালো ছিল। কিন্তু ম্যাচ এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে আর্জেন্টাইন রক্ষণে বন্দী হয়েছেন।
মাথিয়াস কুনিয়া (৭/১০)
ভালো ফিনিশ করেছেন। শটটি দারুণ ছিল। প্রতি আক্রমণেও ভালো ছিলেন। তবে অন্য সময় তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
রদ্রিগো (৪/১০)
টানা দুটি বাজে ম্যাচ কাটল রদ্রিগোর। বিরতির সময় তাঁকে তুলে নেওয়া হয়।