‘চিয়ার্স, জামাল’—জামাল ভূঁইয়ার জন্য এমিলিয়ানো মার্তিনেজের জার্সি
ঢাকায় ঝটিকা সফর শেষে কলকাতা যাওয়ার উদ্দেশে এমিলিয়ানো মার্তিনেজ যখন হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে, ঘটনাচক্রে বাংলাদেশ ফুটবল দলও তখন সেখানে। মার্তিনেজ যাচ্ছেন, আর জামাল ভূঁইয়ারা আসছেন। বেঙ্গালুরুতে সাফ ফুটবল খেলে বাংলাদেশ দলের দেশে ফেরার সঙ্গে মিলে গিয়েছিল মার্তিনেজের যাওয়ার সময়টা।
যা জানার পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলকিপারের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা হতেই পারে বাংলাদেশের ফুটবলারদের। জামাল ভূঁইয়ার হয়েছিল। দেখা করার চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু মার্তিনেজের দেখা তিনি পাননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অধ্যুষিত আজকের পৃথিবীতে কোনো কিছুই গোপন থাকে না। এটাও থাকেনি। জামাল মার্তিনেজের গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে আছেন—এমন একটা ছবি ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুকে। মার্তিনেজ যে তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি, এটাও। আবেগপ্রবণ বাঙালি জাতি যথারীতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।
এই খবর মার্তিনেজ পেয়েছেন কলকাতায় যাওয়ার পর। পেয়েছেন তাঁর ঢাকা ও কলকাতা শহরের উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তর কাছ থেকে। শতদ্রু ফেসবুক থেকেই জেনেছেন কাহিনি। জেনে একটু মন খারাপ হয়েছে বলেই তাঁর দাবি। কিছুক্ষণ আগে কলকাতা থেকে ফোনে বললেন, ‘বলুন তো, মার্তিনেজের দোষ কী! ও কি জামালকে চেনে নাকি! আমিই তো চিনি না। চিনলে অবশ্যই দেখা করিয়ে দিতাম।‘
জামাল ভূঁইয়াকে না-ই চিনতে পারেন। তবে এ নিয়ে বাংলাদেশে সমালোচনা হয়েছে জেনে স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ হয়েছে শতদ্রুর। এমনিতেই এমিলিয়ানো মার্তিনেজের বাংলাদেশ সফরটা ভালো হয়নি। কী করতে তিনি ঢাকা এসেছিলেন, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার সমর্থনের প্রত্যক্ষদর্শী হওয়ার সুযোগ হয়নি। সাধারণ কোনো মানুষের সঙ্গে তাঁর দেখাই হয়নি। যাঁদের সঙ্গে দেখা হয়েছে, সবাই ‘অসাধারণ’। যদিও এমিলিয়ানো মার্তিনেজ খুব করে চেয়েছিলেন অন্তত একটা জনসমাগমে যেতে। চাওয়ারই কথা, এ কারণেই না তাঁর বাংলাদেশ দেখতে চাওয়া। তা কেন পারা যায়নি, শতদ্রুকে তা বোঝাতেও হয়েছে।
ঢাকায় যা করতে চেয়েছিলেন, তা করতে পারেননি। তার ওপর ওই জামাল-বিতর্ক। চাইলেও তো আর এখন জামালকে মার্তিনেজের সঙ্গে দেখা করিয়ে দিতে পারবেন না। শতদ্রু দত্ত তাই জামাল ভূঁইয়ার মনটা ভালো করতে বিকল্প একটা উদ্যোগ নিয়েছেন। এমিলিয়ানো মার্তিনেজের একটা জার্সিতে অটোগ্রাফ নিয়ে তা রেখে দিয়েছেন জামালের জন্য। শুধুই অটোগ্রাফ নয়, তাতে জামালের জন্য শুভেচ্ছাবাণীও আছে। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে না পেরে জামালের মন খারাপ তো হয়েছেই, একটু অপমানও বোধ করে থাকতেই পারেন। সেটা বুঝেই কি এমিলিয়ানো মার্তিনেজ জার্সিতে অটোগ্রাফ দেওয়ার আগে লিখেছেন, ‘চিয়ার্স, জামাল।‘
সেই জার্সি এখন শতদ্রু দত্তর কাছে। তিনি তা জামালকে পাঠাতে চাইছেন। কিন্তু জামালের ফোন নম্বর-ঠিকানা কিছুই তো নেই তাঁর কাছে। সেটি জোগাড় করতেই মূলত এই প্রতিবেদককে ফোন করা। জামালের সঙ্গে কথা বলে দুঃখ প্রকাশও হয়তো করতে চান। সঙ্গে ঠিকানাটা জেনে জামালকে পাঠিয়ে দিতে চান এমিলিয়ানো মার্তিনেজের জার্সিটাও।
তা পেয়ে জামাল ভূঁইয়া একটু ‘চিয়ার আপ’ হলেও হতেও পারেন।