২০১৮ রাশিয়া ফুটবল বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ পড়েছিল অস্ট্রেলিয়ার গ্রুপে। ২০১৫ সালে সেটির বাছাইপর্বের অ্যাওয়ে ম্যাচে পার্থে ৫-০ এবং ঢাকায় ৪-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। আট বছর পর এবার আবার সকারুদের সঙ্গে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ খেলছে লাল-সবুজের দল।
গত ১৬ নভেম্বর মেলবোর্নে অ্যাওয়ে ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে ৭-০ গোলে। দুদলের ফিরতি ম্যাচ ৬ জুন ঢাকার বসুন্ধরা কিংস অ্যারোনায়, খেলা শুরু বিকেল পৌনে ৫টায়। ম্যাচটি খেলতে ৪ জুন দুপুর ১২টায় ঢাকায় আসবে এশিয়ার সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। ৫ জুন অনুশীলন করবে ঢাকায়। ৬ জুন ম্যাচ খেলে ফিরে যাবে রাতেই।
বাংলাদেশ দল আবাসিক ক্যাম্প করছে ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে। দলের ২৬ ফুটবলারের রিপোর্টিং ছিল আজ। নির্ধারিত সময় সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সব খেলোয়াড়ই রিপোর্ট করেছেন। বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি চলবে কিংস অ্যারোনায়। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের পর ১১ জুন দোহায় বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ লেবাননের সঙ্গে। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ বাছাই থেকে বাংলাদেশ যে একটি পয়েন্ট পেয়েছে, তা শুধু লেবাননের সঙ্গে ঘরের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করে। বাংলাদেশের পক্ষে সমতাসূচক গোল করেছিলেন শেখ মোরছালিন।
লেবানন ম্যাচের চেয়েও বড় পরীক্ষা এখন অস্ট্রেলিয়া। সেই পরীক্ষায় নামার আগে আজ রিপোর্টিং শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ফল কেমন হতে পারে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচটা অনেক কঠিন হবে। তবে ইনশা আল্লাহ ভালো করতে চেষ্টা করব। এখন লিগ শেষ। সব মনোযোগ জাতীয় দলের ওপর।’
ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা সব দলই কমবেশি পায়। বাংলাদেশ কি পারবে পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সেই সুবিধা নিয়ে তাদের অন্তত কম গোলে আটকে রাখতে? জামাল আশাবাদীই থাকতে চাইলেন, ‘হোম ম্যাচে সব সময়ই সুবিধা পাওয়া যায়। তা ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার জন্য এটি হবে নতুন অভিজ্ঞতা, নতুন আবহাওয়া।’
কিন্তু অস্ট্রেলিয়া তো অস্ট্রেলিয়াই। শক্তিতে বাংলাদেশের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে। জামাল তা ভালোভাবেই জানেন। তবু কণ্ঠে আত্মবিশ্বাসের সুর, ‘আমাদের সমর্থক আছে। এটা বাড়তি সুবিধা। আমরা উজ্জীবিত।’ গত বছর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেরা গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকোর দলে ডাক না পাওয়া নিয়ে প্রশ্নে জামালের জবাব, ‘আমি মনে করি জিকো দারুণ গোলকিপার। ৪-৫ বছর জাতীয় দলে আমরা একসঙ্গে খেলেছি। এই ক্যাম্পে জিকো নেই। এটা ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। এতে আমার বলার কিছু নেই। তবে আমি মনে করি যে দলটা হয়েছে, সেটি খুব ভালো।’
সামনে অস্ট্রেলিয়া আর লেবানন। প্রধান কোচ হাভিয়ের কাবরেরার জন্যও একটা পরীক্ষা এটা। কাবরেরা বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়া, লেবানন দুই দলই শক্তিশালী। তবে আমরা খুব ইতিবাচক আছি, উজ্জীবিত আছি। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে খেলা দল, কঠিন প্রতিপক্ষ। ওদের জন্য আমরা ম্যাচটা কঠিন করার চেষ্টা করব। লেবানন ম্যাচেও চেষ্টা থাকবে ভালো করার। ইতিবাচক একটা ফল দিয়ে আমরা গ্রুপের খেলা শেষ করতে চাই।’
ক্যাম্পে গোলকিপার আনিসুর ছাড়াও নেই তাজ উদ্দিন ও জায়েদ। রবিউল, সুমন রেজাও ডাক পাননি। এ নিয়ে কোচের কথা, কেউ আসবে কেউ যাবে এটাই নিয়ম। তবে ২৬ জনের মধ্যে ২ জনের কার্ড সমস্যা আছে। ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ও মিডফিল্ডার মজিবর রহমান খেলতে পারবেন না অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ মাত্রই শেষ হয়েছে। ফুটবলাররা কিছুটা ক্লান্ত। তবে কাবরেরার আশা, গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ দুটির আগে ফুটবলাররা অনুশীলনে মানিয়ে নিতে পারবেন।