লেভার সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে বিরোধে জড়ানোর কারণ জানালেন মেসি

মেসি ও লেভানডফস্কিটুইটার

কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে রবার্ট লেভানডফস্কির সঙ্গে লিওনেল মেসির আচরণ নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। সেই ম্যাচে লেভানডফস্কিকে ড্রিবল করে এগিয়ে যেতে দেখা যায় মেসিকে। ট্যাকল করার পর লেভা এগিয়ে কথা বলতে চাইলেও তাতে সাড়া দিতে দেখা যায়নি মেসিকে। এমনকি ম্যাচ শেষে দুজনকে কথা বলতে দেখা গেলেও মেসির অভিব্যক্তিতে বিরক্তির ছাপ ছিল স্পষ্ট।

এক বছর পর লেভার সঙ্গে ঘটা সেদিনের ওই ঘটনা নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন মেসি। তিনি বলেছেন, লেভার সঙ্গে তাঁর সেদিনের আচরণে ম্যাচের উত্তাপজনিত ব্যাপার ছিল না; বরং তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই লেভার সঙ্গে এমনটা করেছিলেন। কারণ, লেভার ওপর তিনি বিরক্ত ছিলেন। মেসি-লেভা বিরোধ নিয়ে কথা বলেছেন আরেক আর্জেন্টাইন তারকা আনহেল দি মারিয়াও। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে স্টার প্লাসের প্রামাণ্যচিত্র ‘চ্যাম্পিয়নস, আ ইয়ার লেটার’-এ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন দি মারিয়া।

আরও পড়ুন

মেসির সেদিনের আচরণ নিয়ে দি মারিয়া বলেছেন, ‘এমনকি আমার দাদিও বুঝতে পেরেছেন যে মেসি ইচ্ছাকৃতভাবে তার সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছিল। এগুলো এমন কিছু জিনিস, যা তার ভেতর কখনো কখনো থেকে যায়। কেউ যদি তার সম্পর্কে কথা বলে সে সেসব ফিরিয়ে দেয়। তারা এমন মানুষ, যারা শুধু কথা বলে এবং সম্মান করে না। আর এটা বুঝতে চায় না যে সে ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়। তাই তোমার তাকে কিছু বলার প্রয়োজন নেই। কারণ শেষ পর্যন্ত সে রাগান্বিত হয় এবং এটা (প্রতিপক্ষের) পরিস্থিতি আরও খারাপ করে।’

বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে মেসি ও লেভানডফস্কি
রয়টার্স

বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন মেসি নিজেও। এক সাক্ষাৎকারে মেসি জানিয়েছেন, লেভানডফস্কির একটি মন্তব্য তাঁকে রাগিয়ে দিয়েছিল। ঘটনার শুরু অবশ্য আরও আগে। ২০২১ সালে ব্যালন ডি’অর জেতার পর মেসি বলেছিলেন, ২০২০ সালে বাতিল হওয়া ব্যালন ডি’অরটি লেভার প্রাপ্য ছিল। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘রবার্ট, সবাই জানে, আমরাও এটা বিশ্বাস করি যে গতবারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী তুমিই ছিলে। আমার মনে হয়, ফ্রান্স ফুটবলের উচিত তোমাকে ২০২০ সালের ব্যালন ডি’অরটা দিয়ে দেওয়া। এটা তোমার প্রাপ্য, এটা তোমার বাসায় থাকা উচিত।’

মেসির সেই কথার উত্তরে লেভা বলেছিলেন, ‘২০২০ সালে পুরস্কার পাওয়া নিয়ে আমি আগ্রহী না। মেসির মতো কারও কাছ থেকে আমি আন্তরিক ও বিনয়ী মন্তব্য আশা করেছিলাম, ফাঁকা বুলি না।’

আরও পড়ুন

এরপর ২০২১ সালে দ্য বেস্ট অ্যাওয়ার্ডের জন্য লেভাকে ভোট দেননি মেসি। বিষয়টি নিয়ে লেভার মত ছিল এমন, ‘২০২১ সালে সে যা করেছে, সে জন্য আমি মেসিকে ভোট দিয়েছিলাম। মেসি ব্যালন ডি’অরে আমাকে ভোট দিয়েছে। কিন্তু আমি জানি না, তার দৃষ্টিভঙ্গি কেন বদলে গেল। যা–ই হোক, আমার কোনো আক্ষেপ নেই, কোনো অভিযোগ নেই। আমি এটা মেনে নিয়েছি। সে তার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

লেভার এসব বক্তব্য ভালোভাবে নিতে পারেননি মেসি। আর এটিই পোল্যান্ড ম্যাচে লেভার বিপক্ষে তাঁকে এমন আচরণের দিকে চালিত করে। মেসি বলেছেন, ‘লেভানডফস্কির দেওয়ার বক্তব্য আমাকে বিরক্ত করেছিল। আমি ব্যালন ডি’অর জেতার পর যা বলেছিলাম, তা আমি অনুভব করি বলেই বলেছিলাম। কিন্তু সে যা বলেছিল, তা আমাকে হতাশ করেছিল। আর এটা সে ছিল বলেই আমি তাকে ড্রিবল করেছিলাম।’

পরবর্তীতে অবশ্য লেভার সঙ্গে তিক্ততা মিটিয়ে ফেলার কথাও জানান মেসি, ‘এরপর আমরা দেখা করেছি এবং কথা বলে একমত হয়েছি সেটা ভুল বোঝাবুঝি ছিল। সে হতাশ ছিল কারণ সে বলেছে এবং যা প্রতিবেদনে এসেছে তার মধ্যে মিল ছিল না।’