হামজার মতো বিদেশ থেকে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের আনতে চায় ভারত

নিজেদের হামজাকে খুঁজছে ভারতপ্রথম আলো

হামজা চৌধুরীর জন্ম বাংলাদেশে না হলেও তিনি এখন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফুটবলার। যুক্তরাজ্যে বেড়ে ওঠা এই ফুটবলার মায়ের সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে লাল–সবুজের জার্সি গায়ে দিয়েছেন। মঙ্গলবার এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের খেলায় ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ দলে অভিষেক হচ্ছে তাঁর।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) মতো অল–ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনও (এআইএফএফ) বিদেশে বেড়ে ওঠা ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের তাদের জাতীয় ফুটবলে নিতে চায়। এ বিষয়ে একটি নীতিকাঠামো তৈরি করছে এআইএফএফ।

ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এআইএফএফ ভারত ফুটবল দলের জন্য স্ট্রাইকারের অভাব পূরণ করতে বিদেশে অবস্থানরত ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের দলে ভেড়ানোর চিন্তা করছে। এ বিষয়ে এআইএফএফের সভাপতি কল্যাণ চৌবে পিটিআইকে বলেন, ‘আমরা একটি নীতিকাঠামো প্রস্তুত করছি, যার আওতায় বিদেশে অবস্থানরত ভারতীয় বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের দলে নেওয়া যাবে। অনেক দেশ এর মধ্যেই এমন নীতিমালায় কাজ করছে।’ বিদেশে থাকা ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের খেলাতে পারলে ‘এই খেলোয়াড়েরা ভারতীয় ফুটবলের গেম–চেঞ্জার’ হতে পারে বলে আশা চৌবের।

ভারত দলে ফিরেছেন সুনীল ছেত্রী
এআইএফএফ

ভারতের ফুটবল–প্রধান বিদেশি খেলোয়াড়ের দিকে হাত বাড়ানোর কারণ হিসেবে আলাদাভাবেই সুনীল ছেত্রীর নাম নিয়েছেন। গত বছরের মাঝামাঝিতে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেওয়া ছেত্রী এ বছর আবার জাতীয় দলে ফিরেছেন। ভারতে ভালো মানের স্ট্রাইকার না থাকায় ৪০ বছর বয়সী ছেত্রীর ওপর ভর করতে হচ্ছে বলে জানান চৌবে, ‘এখন আমরা সুনীলের মতো একজনের ওপর নির্ভরশীল। প্রশ্ন হচ্ছে, এরপর কে? ভারতীয় স্ট্রাইকার তৈরির লম্বা পরিকল্পনা করা দরকার, বিশেষ করে ৯ ও ১০ নম্বর খেলোয়াড়। এখন বেশির ভাগ ক্লাব এ জায়গাগুলোয় বিদেশি  স্ট্রাইকার খেলায়। যেটা ভারতীয় ফরোয়ার্ড তৈরির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।’

আরও পড়ুন

ফিফা নীতিমালা অনুসারে, একজন ফুটবলার যে দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন, সে দেশের স্থায়ী নাগরিকত্ব থাকতে হবে। যেখানে নাম, জন্মতারিখ, জন্মস্থান, জাতীয়তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ থাকবে। ব্রাজিল, ফ্রান্স, ইংল্যান্ডের মতো বিশ্ব ফুটবলের পরাশক্তি দেশগুলো দ্বৈত নাগরিকত্বের খেলোয়াড় অনুমোদন করে। এর মাধ্যমে জন্মসূত্রে নাগরিক না হলেও দ্বৈত নাগরিকত্ব প্রদানের মাধ্যমে ফুটবলারকে জাতীয় দলে খেলানো যায়।

ভারতে দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণ করা হয় না বলে বিদেশে বেড়ে ওঠা ভারতীয় বংশোদ্ভুত কাউকে খেলতে হলে আগের নাগরিকত্ব ছাড়তে হয়। ২০১২ সালে ভারত জাতীয় দলের হয়ে খেলার জন্য জাপানি পাসপোর্ট ছেড়েছিলেন ইসুজিম আরাতা

বাংলাদেশ ফুটবল দলে হামজা চৌধুরীর অন্তর্ভুক্তিও দ্বৈত নাগরিকত্বের মাধ্যমে। যুক্তরাজ্যের লেস্টারে জন্ম নেওয়া হামজা সে দেশের নাগরিক হলেও মা রাফিয়া চৌধুরীর সূত্রে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়েছেন। সেই সূত্রে এখন বাংলাদেশ দলের হয়েও খেলছেন।

ভারতে দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণ করা হয় না বলে বিদেশে বেড়ে ওঠা ভারতীয় বংশোদ্ভুত কাউকে খেলতে হলে আগের নাগরিকত্ব ছাড়তে হয়। ২০১২ সালে ভারত জাতীয় দলের হয়ে খেলার জন্য জাপানি পাসপোর্ট ছেড়েছিলেন ইসুজিম আরাতা। পরের বছর ভারতের হয়ে অভিষেক হলেও তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ৯ ম্যাচের বেশি দীর্ঘায়িত হয়নি।

আরও পড়ুন