আন্দালুসিয়ান ‘দৈত্য’ রামোসের জন্য করতালি
আন্তনিও পুয়ের্তা ওপর থেকে সব দেখছেন। লুইস দে লা ফুয়েন্তেকে কি তিনি ক্ষমা করতে পারবেন?
পুয়ের্তার পরিচয় আগে দেওয়া যাক। সেভিয়ার বয়সভিত্তিক দলে রামোস ও পুয়ের্তা একসঙ্গে বেড়ে উঠেছেন। দুজনের বন্ধুত্বের শুরুও সেখানেই। সেভিয়া ছেড়ে ২০০৫ সালে রামোস রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিলেও পুয়ের্তা আন্দালুসিয়ান অঞ্চলের ক্লাবটিতেই থেকে যান। ২০০৭ সালের ২৫ আগস্ট হেতাফের বিপক্ষে সেভিয়ার মৌসুমের প্রথম ম্যাচটা হয়ে যায় পুয়ের্তার জীবনের শেষ ম্যাচ।
সেদিন হেতাফের বক্সে মৃদু হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন পুয়ের্তা। খানিক পর চেতনা ফিরে পেলেও ৩৫ মিনিট পর আবারও একই কাণ্ড! পুয়ের্তাকে তুলে নেওয়া হলেও ড্রেসিংরুমে আবারও হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন, হাসপাতালে নেওয়ার তিন দিন পর মারা যান। মৃত্যুর আগে একবারই স্পেনের (৭ অক্টোবর, ২০০৬) জার্সিতে খেলেছেন পুয়ের্তা। সুইডেনের বিপক্ষে ২০০৮ ইউরোর বাছাইপর্বে। সে ম্যাচে পুয়ের্তার জার্সি নম্বর ছিল ১৫।
কোনো ইঙ্গিত মিলল? রামোসের জার্সি নম্বরও তো ১৫! বন্ধুর জন্য বন্ধু কী করতে পারেন, শুনুন রামোসের মুখেই, ‘স্পেনের হয়ে আমার প্রথম ম্যাচে ৪ নম্বর জার্সি ফাঁকা ছিল না। তাই ১৫ নম্বর জার্সি পরে নামি। সুইডেনের বিপক্ষে স্পেনের হয়ে পুয়ের্তার অভিষেকে ১৫ নম্বর জার্সিটা ওকে দিই। তাকে বলি, তুমি আমার জন্য সৌভাগ্য বয়ে এনেছ। কারণ, রিয়াল মাদ্রিদ ও স্পেনের হয়ে ৪ নম্বর জার্সিটা বহুদিন পরার ইচ্ছা ছিল আমার। মর্মান্তিক ব্যাপার, সে আমাদের ছেড়ে চলে গেল এবং তারপর সিদ্ধান্ত নিই, ১৫ নম্বর জার্সিটি আমি পরব এবং এর মধ্য দিয়ে তাকে স্মরণীয় করে রাখব। যা কিছুই ঘটুক না কেন, (স্পেনের হয়ে) আমি সব সময় এই জার্সিটাই পরব, আমার বন্ধু পুয়ের্তার জন্য।’
স্পেনের বয়সভিত্তিক দলের নানা পর্যায় পেরিয়ে ২০০৫ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় রামোসের। পরের বছর পুয়ের্তার মৃত্যুর পর থেকে হিসাব করলে এই ১৭ বছর বন্ধুর জন্য ১৫ নম্বর জার্সি পরে মাঠে নেমেছেন রামোস। বয়স ৩৬ বছর পেরিয়ে গেলেও কিছুদিন আগেও পিএসজির হয়ে ম্যাচ শেষে তাঁকে ক্লাবের সেরা ডিফেন্ডারও বলেছেন কোচ ক্রিস্তফ গালতিয়ের। অর্থাৎ, জাতীয় দলের জার্সিতে আরও কিছুদিন খেলার সামর্থ্য তাঁর ছিল। সেই সুযোগ পেলে আরও কিছুদিন ১৫ নম্বর জার্সি পরে মাঠে নামতে পারতেন, আর তা দেখে পুয়ের্তোরও চোখ জুড়াত।
কিন্তু ওই যে কাল রাতে জাতীয় দল থেকে অবসরবার্তায় রামোস যে কথাটা বলেছেন—‘ফুটবল সব সময় ন্যায়ের পথে থাকে না এবং ফুটবল শুধু ফুটবল নয়’—লুইস দে লা ফুয়েন্তের ফোন তো তারই প্রতিফলন!
স্পেন কোচ রামোসকে ফোন করে বলেছেন, কিংবদন্তি তাঁর পরিকল্পনায় নেই। অর্থাৎ, আর কখনো ১৫ নম্বর জার্সি পরা হবে না। পুয়ের্তা দে লা ফুয়েন্তেকে কীভাবে ক্ষমা করবেন! ফুটবল যে শুধু ফুটবল নয়—রামোসের কাছ থেকেই তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ পেয়েছেন পুয়ের্তা। আর ফুটবল যে সব সময় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে না—রামোস তা টের পেলেন স্পেন কোচের কাছ থেকে। এই দুই মিলিয়ে ফুটবল কি শুধুই ফুটবল? মোটেই না। কখনো কখনো তা জীবনের চেয়েও বেশি কিছু।
স্পেনের জার্সিতে এই ১৮ বছর রামোসের খেলাকে স্মৃতির ফ্রেম থেকে টেনে বের করে আনুন। কি রাইটব্যাক, কি সেন্টারব্যাক—রামোস যেন স্পেনের ১১ শতকের সেই বীর ‘এল সিড’—জীবন যাবে, তবু প্রতিপক্ষকে একচুল জায়গা দেননি। অথচ কোচের এক ফোনে নিজের জায়গাটাই ছেড়ে দিলেন। এই তো রামোস—যাঁকে দেখে মনে হয়, মাঠে রক্তমাংসের ওই শরীরটা যদি দলের ‘বর্ম’ হয়, তাহলে সেই রক্তমাংসের খোলসের ভেতরে যে হৃদয়, তার ভেতর থই থই অভিমান। অন্তত এখন।
অথচ এই অভিমানের আগে রামোস দেশের হয়ে যে অভিযান সম্পন্ন করেছেন, তা অনেক কিংবদন্তির কপালেই জোটেনি।
স্পেনের ২০০৪ অনূর্ধ্ব–১৯ ইউরো জয়ে ‘ভবিষ্যৎ তারকা’ হয়ে যান রামোস। পরের বছর চীনের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে জাতীয় দলে অভিষেক। রামোসের বয়স তখন ১৮ বছর ৩৬১ দিন। ৫৫ বছরের মধ্যে স্পেন জাতীয় দলে তাঁর চেয়ে কম বয়সী আর কেউ ছিলেন না। ২০০৬ সালে রামোসের সেই রেকর্ড ভেঙে দেন সেস্ক ফ্যাব্রেগাস। কিন্তু মনোবল ভাঙবে কে! রিয়াল মাদ্রিদ সতীর্থ মিশেল স্যালগার্দো ২০০৬ সালে জাতীয় দল ছাড়ার পর স্পেনের রাইটব্যাক পজিশনে রামোস সেই যে স্থায়ী হলেন, তারপর চলল ওঠানামা। না, তাঁর ক্যারিয়ারের নয়, ডান প্রান্ত দিয়ে তরুণ রামোস আক্রমণে যেমন পটু ছিলেন, তেমনি নিচেও নামতেন খুব দ্রুত। ৬ বছর বয়সে স্থানীয় দল কামাসের ডান উইংয়ে খেলার অভ্যাসটা কাজে লেগে যায়।
পরে সেন্টারব্যাক পজিশনেও খেলেছেন। আর এভাবে একের পর এক ম্যাচের ভিতে সরে দাঁড়ানোর আগে রামোস যে ‘বেদি’টা গড়েছেন, তার নাম হতে পারে ইতিহাস—স্পেনের হয়ে সর্বোচ্চ ১৮০ ম্যাচ খেলার রেকর্ড। স্পেনের বর্তমান খেলোয়াড়দের মধ্যে ৩৩ বছর বয়সী জর্দি আলবা সর্বোচ্চ ৯১ ম্যাচ খেলেছেন। রামোসের সঙ্গে বাকিদের মনোবলের পার্থক্য তো এখানেই পরিস্কার। স্পেনের হয়ে তাঁর সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডটি কেউ ভাঙতে পারবেন কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
সন্দেহ আছে স্পেন তাঁর মতো আর কোনো ডিফেন্ডার পাবে কি না, তা নিয়েও। একজন ডিফেন্ডার বাতাসে ভেসে হেড করায় যেকোনো স্ট্রাইকারের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেন, ট্যাকলেও ‘সার্জিক্যাল নাইফ’–এর মতো নিখুঁত। মেজাজে আন্দালুসিয়ান দৈত্য—বুলফাইটিংয়ের রোঁন ষাঁড়। বংশপরম্পরায় এসব রোঁন ষাঁড় একেকটি ‘কিলিং মেশিন’—খুন করতে কিংবা খুন হতেই যেন জন্ম!
রামোসের ক্ষেত্রে এই ‘খুনে’র ব্যাখ্যাটা ফুটবলীয়। রক্ষণে প্রতিপক্ষের সেরা খেলোয়াড়কেও যেভাবে দুমড়েমুচড়ে দেন, তা তো গোল করার আশা ‘খুন’–এরই শামিল। আর সেটি করতে গিয়ে ‘খুন’ হতেও দ্বিধা করেননি। লা লিগা, চ্যাম্পিয়নস লিগ ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে সবচেয়ে বেশি হলুদ কার্ড ও লাল কার্ড দেখার রেকর্ড তাঁর। মোট ২৮টি লাল কার্ড, ২৩২টি হলুদ কার্ড। অথচ কী বিস্ময়কর ব্যাপার, এই রামোসই স্পেনের জার্সিতে কখনো লাল কার্ড দেখেননি! আবার সবচেয়ে বেশি ২৪টি হলুদ কার্ড দেখার রেকর্ডটি কিন্তু তাঁর।
মজা করে তাই বলাই যায়, দেশের জাল অক্ষত রাখতে রামোস ‘খুন’ হতে চেয়েছেন, কিন্তু প্রতিবারই ‘ক্ষতবিক্ষত’ দেহে ‘তরো’ হয়ে মাঠ ছেড়েছেন। তরো? স্পেনে বুলফাইটিংয়ে ‘ম্যাটাডোর’কে (ষাঁড়ের সঙ্গে যে লড়াই করে) হারাতে পারলে ষাঁড়টিকে বলা হয় ‘তরো’—অর্থাৎ যে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে। রামোসও কি শেষ পর্যন্ত লড়েননি?
অবসরবার্তায় তাঁর ওই কথাটা—‘আমি সত্যিই বিশ্বাস করি, নিজের ইচ্ছায় বিদায় নেওয়াটা প্রাপ্য ছিল...বয়স তো কোনো গুণ বা সমস্যা নয়, এটা কেবলই সংখ্যা, যার সঙ্গে পারফরম্যান্স বা সামর্থ্যের সরাসরি সম্পর্ক নেই’—তো রোঁণ ষাঁড়ের শেষবারের মতো শিং বাগিয়ে আসারই প্রতিচ্ছবি। তবু জয়টা ‘ম্যাটাডোর’ দে লা ফুয়েন্তেরই হলো!
কিন্তু সত্যিকারের বিজয়ী আসলে কে? আজ থেকে ১০০ বছর পর স্প্যানিশ ফুটবলের ইতিহাস লেখা হলে দে লা ফুয়েন্তে বড়জোর কোচদের পাতায় থাকবেন, আর রামোসকে নিয়ে লেখা হতে পারে আস্ত একটি অধ্যায়। যে অধ্যায়ের পুরোটাজুড়ে থাকবে স্পেনের সেই সর্বজয়ী দলটির গল্প—২০০৮ ইউরো, ২০১০ বিশ্বকাপ ও ২০১২ ইউরো।
লুইস আরাগোনাসের হাত ধরে ‘টিকিটাকা’ ফুটবলের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের যে ফুটবলপ্রেমী কিশোরটির পরিচয় হয়েছে, সে–ও দেখেছে, রিয়ালের জার্সিতে মারমার–কাটকাট ফুটবলে অভ্যস্ত রামোস জাতীয় দলের হয়ে পাসিং ফুটবলেও কতটা পটু! এমনকি গোল করায়ও। নইলে চোস্ত ডিফেন্ডার হয়েও স্পেনের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষ ১০–এ উঠে আসতে পারতেন না। ২৩ গোল করে নবম স্থানটি কার সঙ্গে ভাগ করেছেন জানেন? আলফ্রেড ডি স্টেফানো!
২০০৮ ইউরোর মূল পর্বে স্পেনের হয়ে সব ম্যাচ খেলেছেন। ফাইনালে তাঁর পাস থেকে মার্কোস সেনা কীভাবে গোল করতে পারলেন না, তা নিয়ে গবেষণা হতে পারে। স্পেনের সেই ইউরো জয়েও রামোসের সঙ্গে ছিলেন পুয়ের্তা। বিজয়মঞ্চে পদক আনতে গিয়েছিলেন বিশেষ একটি টি–শার্ট পরে।
সেখানে লেখা ছিল, ‘পুয়ের্তা, তোমাকে কখনো ভুলব না।’
পরের বছর ফিফা কনফেডারেশনস কাপে প্রথমবারের মতো পেলেন স্পেনের অধিনায়কত্ব। টুর্নামেন্টটি জিততে পারেননি, তবে নেতৃত্বগুণ তখনই বোঝা গিয়েছিল। ২০১০ বিশ্বকাপে এসে সবাই দেখলেন স্পেনের রামোসকে। স্পেনের প্রতিটি ম্যাচেই পুরো সময় মাঠে ছিলেন রাইটব্যাক পজিশনে খেলা রামোস, পাঁচ ম্যাচে কোনো গোল হজম না করা ‘লা রোজা’রা ফাইনালে উঠে চ্যাম্পিয়নও হলো। আর ক্যাস্ট্রল পারফরম্যান্স ইনডেক্সে ৭.৭৯ পয়েন্ট নিয়ে সবাইকে টেক্কা দিলেন রামোস। রাইটব্যাক পজিশনে খেলেও সেই বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ‘সলো রান’ (একক দৌড়) ছিল তাঁর।
দুই বছর পর ২০১২ ইউরোয় পজিশন পাল্টে গেল। রাইটব্যাক থেকে একেবারে স্প্যানিশ রক্ষণভাগের ‘হৃৎপিণ্ড’—সেন্টারব্যাক। রাইটব্যাক পছন্দের পজিশন হলেও তখন রামোস বলেছিলেন, ‘মাঝে (সেন্টারব্যাক) আমি মানিয়ে নিয়েছি এবং খেলতে ভালোই লাগে।’ এবারও স্পেনের হয়ে সব ম্যাচ খেললেন রামোস। সেমিফাইনালে পর্তুগালের বিপক্ষে টাইব্রেকারে ‘পানেনকা’ স্টাইলে গোলও করলেন। স্পেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর জায়গাও পেলেন ‘টুর্নামেন্টের সেরা দল’–এ।
পরের বছর ২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে গড়লেন অনন্য এক রেকর্ড। জার্মানির লুকাস পোডলস্কিকে টপকে ইউরোপে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে জাতীয় দলের হয়ে খেলে ফেললেন ১০০তম ম্যাচ।
২০১৪ ও ২০১৮ বিশ্বকাপেও খেলেছেন রামোস। খেলেছেন ২০১৬ ইউরোতেও। ফলগুলো সবারই জানা। তবে এই পথেই ২০১৯ সালে ফারো আইল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচে গড়েছেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জয়ের রেকর্ড (১২২)। বিদায়ের আগে সেটি ১৩১ জয়ে উন্নীত হয়েছে। এতগুলো জয় দূরে থাক, এত ম্যাচ খেলারই তো সুযোগ হয়নি অনেকের!
রামোস এসব অর্জনের পথেই মালা পরেছেন বিশেষণের। ২০১৯ সালে টানা দশম পেনাল্টি থেকে গোলের পর স্পেন কোচ লুইস এনরিকে বলেছিলেন, রামোস ‘ইতিহাসের অনন্য খেলোয়াড়।’ তারও আগে ২০১৪ সালে পাওলো মালদিনির উদাহরণ টেনে কার্লো আনচেলত্তি বলেছেন, ‘রামোস এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা ডিফেন্ডার।’ রাখঢাক রেখে প্রশংসায় অভ্যস্ত আনচেলত্তি যে কথাটা গোপন করেছেন, রামোসকে সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডারদের কাতারেই রাখা হয়।
ক্ষুরধার ট্যাকলিং, বাতাসে দুর্দান্ত, পেনাল্টি ও ফ্রি–কিকে প্রায় নিখুঁত, অন দ্য ও অফ দ্য বল মুভমেন্টে বুদ্ধিদীপ্ত এবং থ্রু পাসে দুর্দান্ত—এসব গুণে গুণাণ্বিত কারও যদি গতিও থাকে, তাহলে তাঁকে থামাবে কে! ২০১৫ সালে মার্কা ফিফার রেকর্ড দেখে জানিয়েছিল, রামোস সে বছর ঘণ্টায় ৩০.৬ কিমি গতিতেও দৌড়েছেন।
কিন্তু একদিন সবাইকেই থামতে হয়। রামোসের মতো ‘তরো’ ফুটবলাররা একটু বেয়াড়া। পিএসজির হয়ে এখনো খেলছেন। বয়স চোখরাঙানি দিলেও দেশের জার্সি খুলতে চাননি। তাই বাধ্য হয়ে তাঁকে থামিয়ে দিলেন ফুটবলের সবচেয়ে প্রতাপশালী ব্যক্তি—কোচ! কিন্তু এই থামার আগে স্পেনের জার্সিতে গত দেড় যুগ ধরে যে দৌড়টা রামোস দিয়েছেন, তা কি কেউ ভুলবে?
পুয়ের্তা অন্তত ভুলতে পারবেন না। ওই দূর আকাশ থেকে পুয়ের্তা দেখেছেন, ২০১০ বিশ্বকাপ ও ২০১২ ইউরো জয়েও রামোস তাঁকে সঙ্গে রেখেছেন। সেই আগের মতোই টি–শার্টে লেখা কিছু কথা। শব্দগুলোর প্রাণ না থাকতে পারে, কিন্তু পড়তে গেলে চোখে পানি আসে। ঠিক যেভাবে কেউ কেউ রামোসের জন্য চোখ মুছছেন, বুলফাইটিংয়ের ময়দানে ‘তরো’র মৃত্যুর পর দর্শকের চোখও হয়তো সেভাবে ভিজে আসে। করতালির বৃষ্টিও ঝরে।
রামোসের জন্য করতালি।