মেসিদের ক্লাব মালিকের বিরুদ্ধে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগে তদন্ত শুরু

পিএসজির মালিক ও সভাপতি নাসের আল খেলাইফিছবি: টুইটার

ফ্রান্সে পিএসজি সভাপতি নাসের আল খেলাইফির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ গুরুতর। অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে পিএসজির এ কাতারি মালিকের বিরুদ্ধে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘টেলিগ্রাফ’ জানিয়েছে, নাসের আল খেলাইফির বিরুদ্ধে যায় এমনকিছু গুরুতর নথিপত্র এবং তাঁর যৌন মিলনের ভিডিও নিজের কাছে বলে দাবি করেছিলেন এক লোক। তাঁকে অপহরণ ও নির্যাতন করার অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে এই কাতারি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন

ফ্রাঙ্কো–আলজেরিয়ান বংশোদ্ভুত ‘লবিস্ট’ তায়েব বেনাবদেরামানে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে কাতারে থাকতে তাঁকে আটক করে রাখার তদারকি করছিলেন নাসের আল খেলাইফি—এই অভিযোগের তদন্ত করবেন প্যারিসের তিনজন বিচারক। তায়েব বেনাবদেরামানে ফরাসি কর্তৃপক্ষের কাছে এ নিয়ে আগেই অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগে তিনি দাবি করেছিলেন, ‘স্পর্শকাতর’ নথিপত্র থাকায় ৬ মাস তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল।

ফরাসি রেডিও ‘ফ্রান্স ইন্টার’–এর বরাত দিয়ে ‘টেলিগ্রাফ’ জানিয়েছে, খেলাইফির স্মার্টফোন তায়েব বেনাবদেরামানের কাছে ছিল। এর পাশাপাশি খেলাইফির বিরুদ্ধে যায় এমন নথিপত্র এবং তাঁর যৌন মিলনের ভিডিও ছিল তাঁর কাছে। সেসব নথিপত্রগুলো কাতারের ২০২২ বিশ্বকাপ আয়োজন করার স্বত্ত্ব পাওয়া নিয়ে।

পিএসজি তারকা মেসি কাতারে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতানোর পর তাঁকে এভাবে অভিনন্দন জানান খেলাইফি
ছবি: টুইটার

গত ডিসেম্বরে কাতারে বিশ্বকাপ শেষ হলেও বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বত্ত্ব পাওয়ার পর থেকেই অভিযোগ উঠেছিল, কাতার ফিফার কাছ থেকে অনৈতিকভাবে বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বত্ত্ব পেয়েছে। ২০২৬ ও ২০৩০ বিশ্বকাপের টিভি স্বত্ত্ব বিইন মিডিয়ার পাওয়ার বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র তায়েব বেনাবদেরামানের দখলে ছিল। বিইন মিডিয়ার সভাপতি নাসের আল খেলাইফি। টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নথিপত্রের মাধ্যমে দেখা গেছে খেলাইফির খানসামার কাছ থেকে ফোন ও অন্যান্য স্পর্শকাতর নথিপত্র হস্তগত করেছিলেন তায়েব বেনাবদেরামানে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

তায়েব বেনাবদেরামানে অভিযোগে সরাসরি নাসের আল খেলাইফির প্রতি আঙ্গুল তুলেছেন। তাঁকে অপহরণ করে আটকে রেখে নির্যাতনের ‘পৃষ্ঠপোষক’ ছিলেন খেলাইফি, অভিযোগে দাবি করেন তিনি।

তবে পিএসজি সভাপতি খেলাইফি এসব কিছুই অস্বীকার করেছেন, ‘আমরা পেশাদার অপরাধীদের নিয়ে কথা বলছি। তারা যতবার নিজেদের গল্প পাল্টায়, মিথ্যা বলে, তার চেয়ে বেশিসংখ্যকবার আইনজীবী পাল্টায়। অবাক হচ্ছি যে, অনেকেই তাদের মিথ্যা দাবি বিশ্বাস করছে—যদিও মিডিয়ার আধিপত্য গড়া বিশ্বেই আমরা বসবাস করছি। তবে আইন নিজস্ব গতিতেই চলবে। এসব স্বস্তা পেশাদার অপরাধীদের নিয়ে কথা বলার সময় আমার নেই।’

গত বছর সেপ্টেম্বরে তায়েব বেনাবদেরামানে এবং দুজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চুরি, মাদক বিক্রিতে সহায়তা, অন্যের গোপনীয়তা লংঘন করার অভিযোগ গঠন করা হয়। তদন্তকারীরা তখন সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় অভিযান চালিয়ে খেলাইফির যৌন মিলনের ভিডিও ও ফোনের কপি পান। পিএসজি সভাপতিকে ব্ল্যাকমেইলের সন্দেহে অভিযোগ গঠন করা হয় তাঁদের বিরুদ্ধে। গত বছর অনৈতিকভাবে বিশ্বকাপের টিভি স্বত্ত্ব পাওয়ার মামলা থেকেও রেহাই পান খেলাইফি। তাঁর আইনজীবী দল দাবি করেছে, ব্ল্যাকমেইলের মতো সামান্য একটি মামলার সঙ্গে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ জুড়ে দিয়েছেন তায়েব বেনাবদেরামানে।

আরও পড়ুন