তিউনিসিয়া ফ্রান্সের বিপক্ষে যতক্ষণ গোল পায়নি, অস্ট্রেলিয়ার সমীকরণ ততক্ষণ সহজই ছিল। ড্র করলেই চলত। কিন্তু একই সময়ে চলা এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামের ম্যাচে ৫৮ মিনিটে ফ্রান্সের জালে বল পাঠিয়ে দেয় তিউনিসিয়া। আচমকাই অস্ট্রেলিয়ার সমীকরণ হয়ে যায়- ‘জিততেই হবে’।
হুট করে চলে আসা চাপটা সরাতে বেশিক্ষণ সময় নেয়নি অস্ট্রেলিয়া। নিজেদের ম্যাচের ৬০ মিনিটেই সকারুদের দারুণ এক গোল এনে দেন ম্যাথু লেকি। পরের আধাঘণ্টা গোলটা আগলে রেখে অস্ট্রেলিয়া ডেনমার্ককে হারিয়েছে ১-০ ব্যবধানে। যে জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি’ গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে গেছে অস্ট্রেলিয়া। ২০০৬ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম বিশ্বকাপের নকআউটে উঠল সকারুরা।
আল জানুব স্টেডিয়ামের ম্যাচটি শুরুর আগে ডেনিশদেরই জয় দরকার ছিল বেশি। আগের দুই ম্যাচের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ফ্রান্সের কাছে ৪-১ ব্যবধানে হারলেও তিউনিসিয়ার বিপক্ষে ১-০’র জয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল।
কিন্তু ফরাসিদের কাছে হারের আগে তিউনিসিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল ডেনমার্ক। শেষ ম্যাচে চ্যালেঞ্জ দাঁড়িয়ে যায় ‘জয় ছাড়া গতি নাই’যে। ম্যাচের শুরু থেকে সেই চ্যালেঞ্জ জয়ে গতিময় ফুটবলই খেলেছেন ইউসুফ পুলসেন, মার্টিন ব্রাথওয়েট, ইয়েসপার লিন্ডস্ট্রমরা। কিন্তু রক্ষণমুখী অস্ট্রেলিয়ার দেয়াল ভাঙা সহজ ছিল না।
বলে দখল বেশি থাকলেও প্রথমার্ধে অস্ট্রেলিয়ার গোলমুখে মাত্র দুটি শট নিতে পেরেছে ডেনমার্ক। এর মধ্যে ১৯ মিনিটের আক্রমণটিতে জেগেছিল গোলের প্রবল সম্ভাবনাও।
ছয় গজ বৃত্তের ভেতর থেকে গোলমুখে বল এগিয়ে দেন ইওয়াকিম ম্যালে। সামনে থাকা অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্ডার হ্যারি সুটারের পায়ে লেগে বল ঢুকে যাচ্ছিল জালে। গোলকিপার ম্যাথু রায়ানের পায়ে লেগে সেটি প্রতিহত হয়। এরপরও গোল হতে পারত, যদি দলের অন্য কেউ সামনে থাকত।
অস্ট্রেলিয়াও অবশ্য প্রথমার্ধে বিপদজনক হতে পারেনি। মাঝেমাঝে প্রতিপক্ষের রক্ষণে হানা দিলেও গোলের সম্ভাবনা জাগানো শট কেউ নিতে পারেননি। এ সময়ে নেওয়া ৩ শটের সব কটিই ডেনিশ গোলকিপার কাসপার স্মাইকেলের হাতে চলে যায়।
অস্ট্রেলিয়াও অবশ্য প্রথমার্ধে বিপজ্জনক হতে পারেনি। মাঝে মাঝে প্রতিপক্ষের রক্ষণে হানা দিলেও গোলের সম্ভাবনা জাগানো শট কেউ নিতে পারেননি। এ সময়ে নেওয়া ৩ শটের সব কটিই ড্যানিশ গোলকিপার কাসপার স্মাইকেলের হাতে চলে যায়।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়াকে। এর মধ্যে এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে ফ্রান্সের বিপক্ষে গোল করে ফেলে তিউনিসিয়া। সমীকরণটা তখন এমন- তিউনিসিয়া জিতলে এবং অস্ট্রেলিয়া ড্র করলে দুই দলের পয়েন্টই হবে ৪। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া গোল একটি বেশি হজম করায় পিছিয়ে থেকে বাদ পড়বে। জয় ছাড়া তাই উপায় ছিল না এএফসিতে খেলা দেশটির।
তবে দুই মিনিট বাদেই জয়ের জন্য দরকারি গোলটি এনে দেন লেকি। ৩১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের গোলটিও ছিল দারুণ। ৪০ গজের মতো দৌড়ে ম্যালেকে দুই দফায় নাটমেগ করে বল জালে জড়ান তিনি। এবারের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় গোল।
শেষ পর্যন্ত ১-০ ব্যবধান ধরে রেখে ৬ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম রাউন্ড শেষ করে অস্ট্রেলিয়া। অপর ম্যাচে তিউনিসিয়া একই ব্যবধানে ফ্রান্সকে হারালেও ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে তৃতীয় হয়েছে। গতবারের চ্যাম্পিয়ন ৬ পয়েন্ট নিয়েও গ্রুপসেরা হয়েছে গোল ব্যবধানে এগিয়ে।
শেষ ষোলোয় অস্ট্রেলিয়া খেলবে ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে। ম্যাচটি হবে ৩ ডিসেম্বর রাত ১টায়।
আর ৪ ডিসেম্বর রাত ৯টায় ফ্রান্সের প্রতিপক্ষ হবে ‘সি’ গ্রুপের রানার্সআপ।