বিশ্বকাপে দি পলের চোটের খবর শুনে ‘বড় ভাই’ মেসি যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন
বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফেরার পর বেশ কিছুদিন ছুটিতে ছিলেন আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়রা। ছুটি কাটিয়ে নতুন বছরে যোগ দিয়েছেন নিজ নিজ ক্লাবে। সেই সঙ্গে চলছে তাঁদের বিশ্বকাপের স্মৃতিচারণা।
সংবাদমাধ্যমের কাছে আর্জেন্টাইন তারকাদের চাহিদা বিশ্বকাপের পর থেকেই তুঙ্গে। সম্প্রতি উরবানা প্লেই, ওলে, টিওয়াইসি স্পোর্টস, ফক্স স্পোর্টসসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন লিওনেল মেসি, আনহেল দি মারিয়া, রদ্রিগো দি পলরা। সেখানে কাতার বিশ্বকাপে তাঁদের নানা অজানা বিষয় উঠে এসেছে।
দি পল যেমন অবশেষে স্বীকার করেছেন চোট লুকিয়ে বিশ্বকাপ খেলেছেন তিনি। অথচ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের আগে অনুশীলনের সময় হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়ার খবর উড়িয়ে দিয়েছিলেন এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। ফক্স স্পোর্টসের ‘লা ভুয়েলতা’ নামের আলোচনা অনুষ্ঠানের উপস্থাপক পোলো আলভারেজকে আতলেতিকো মাদ্রিদ তারকা বলেছেন, ‘হ্যাঁ, নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের দুদিন আগে আমি চোটে পড়েছিলাম। পরীক্ষা করানোর পর বুঝেছি, গ্রেড ওয়ান পর্যায়ের চোটে পড়েছি। তবে হাল ছাড়িনি।’
নেদারল্যান্ডস ম্যাচের ৬৬ মিনিটে দি পলকে তুলে নেন আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেলে স্কালোনি। তবে তাঁকে চোটের ব্যাপারে খোলাসা করে কিছু বলেননি দি পল, ‘ম্যাচ শেষে কোচ জানাতে চাইলেন, আমার কী হয়েছে। আমি বললাম, জানি না। এর তিনি প্রশ্ন করলেন, তাহলে সে (দলের ফিজিও) তোমাকে কী দিল? এরপর আমি চিকিৎসকের কাছে গেলাম। চিকিৎসক আমাকে আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে বললেন। পরের দিন সকালে বললেন, আমরা তোমার এমআরআই করাতে চাই। বুঝলাম, আলট্রাসনো করালে আমার চোট ধরা পড়বে। আমাকে দল থেকে বাদ দেওয়া হবে। তখন চিকিৎসককে বললাম, আজ নয় কাল করাব।’
পরে চিকিৎসককে অবশ্য পাশেই পেয়েছেন দি পল, ‘চিকিৎসক সব জেনে ফেলার পর বললেন, তোমার হাতে এখনো ১০ দিন (ফাইনালের আগে) আছে। ৮০% খেলোয়াড় এ অবস্থায় পুরো বিশ্বকাপ মিস করত। কিন্তু তোমার মনোবল খুব শক্ত।’
দি পলের চোটের ব্যাপারে এক পর্যায়ে মেসিও জেনে ফেলেন। সে সময় সতীর্থকে আদর্শ বড় ভাইয়ের মতো পরামর্শ দেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক, ‘মেসিও ব্যাপারটা জানার পর বললেন, ঝুঁকি নিও না। প্রতিজ্ঞা করছি, আমি তোমাকে সেমিফাইনালে নিয়ে যাব। অধিনায়ক নন; একজন বড় ভাইয়ের মতো করে তিনি কথাগুলো বলেছিলেন।’
দুঃসময়ে জীবনসঙ্গিনী মার্তিনা স্তোয়েসেলের সমর্থন বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছে বলে মনে করেন দি পল, ‘ফুটবলের প্রতি ওর খুব একটা আগ্রহ নেই। তবে যখন সে আমার চোটের কথা শুনল, খেলার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলল। ফুটবলের বাইরে সে–ই একমাত্র মানুষ, যে আমাকে পরামর্শ দিয়েছে। ওকে জিজ্ঞেস করেছি, আমার খেলা উচিত কিনা। ও বলল, আগে দেখো তুমি দৌড়াতে পারো কিনা, বলে ঠিকমতো কিক নিতে পারো কিনা। তোমার হৃদয় যা বলে, সেটা শোনো। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই বললাম, আমি খেলা চালিয়ে যাব।’