আবাহনীর ব্রাজিলিয়ান ওয়াশিংটনের পরিবারে আছে ওয়েলিংটনও
হাতে ম্যাচসেরার ক্রেস্ট। মুখে হাসি। ওয়াশিংটন বানদ্রাও দস সান্তোস এমন একটা বিকেলই চাইছিলেন। যে বিকেলে তিনি হ্যাটট্রিক করবেন, দল জিতবে বড় ব্যবধানে। আশা পূরণ হয়েছে ঢাকা আবাহনীর ব্রাজিলিয়ার ফরোয়ার্ডের। তাঁর হ্যাটট্রিকে কিংস অ্যারেনায় আজ ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে ফেডারেশন কাপ ফুটবলে শুভসূচনা করেছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড।
ওয়াশিংটনও যেন প্রাণ পেলেন নতুন করে। গত স্বাধীনতা কাপের সেমিফাইনালের শুরুর কয়েক মিনিটেই নিজের গতি দিয়ে বসুন্ধরা কিংসকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু গোল পাননি। উল্টো দল হেরেছে ৪-০ গোলে। লিগের প্রথম দুই ম্যাচে দলের ড্র আর হার। তৃতীয় ম্যাচে দলের জয়সূচক গোল করেন কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট। ওয়াশিংটন নিজেকে মেলে ধরার সুযোগই পাচ্ছিলেন না। অপেক্ষায় ছিলেন স্বপ্নের মতো এক ম্যাচের।
অবশেষে জ্বলে উঠলেন ওয়াশিংটন। ঢাকায় আসার পর থেকে অনেকেরই কৌতূহল তাঁর নাম ওয়াশিংটন কেন? সেই রহস্য ভেদ করা করা গেল কিংস অ্যারেনায় তাঁর হ্যাটট্রিকের পর। ক্রেস্ট হাতে নিয়ে সাজঘরে যাওয়ার মুখে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলো আপনার নাম ওয়াশিংটন কে রেখেছেন?
৩৩ বছর বয়সী ওয়াশিংটন হেসে বললেন, ‘বাংলাদেশে আসার পর অনেক মানুষ আমাকে প্রশ্ন করেছে, “তোমার নাম ওয়াশিংটন কেন?” আমি কী বলব তাদের। আমি হেসে বলি মা (মারিয়া সুজানা) রেখেছেন। কিন্তু কেন এই নাম রেখেছেন সেটা আমি বলতে পারব না।’
তাঁরা চার ভাই। সবার নামের শুরুটা ইংরেজি ডব্লু অক্ষর দিয়ে। এটুকু জানিয়ে ওয়াশিংটন এরপর আরেকটু চমকালেন, ‘আমার এক ভাইয়ের নাম ওয়েলিংটন। সে সবার বড়। আরেক ভাইয়ের নাম ওয়েলি, আরেক ভাইয়ের ওয়াবেজ। আমার নাম যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী শহরের নামে জানি, ওয়েলিংটন নিউজিল্যান্ডের বিখ্যাত এক শহর, সে–ও জানি। বাকি দুজনের নাম কোনো শহরের নামে রেখে রেখেছেন কি না তা আমার জানা নেই।’
কিন্তু মাকে কখনো কী জিজ্ঞেস করা হয়েছে কেন তিনি দুটি বিখ্যাত শহরের নামে চার ছেলের দুজনের নাম রাখলেন? ওয়াশিংটন বলেন, ‘না, মার কাছে কখনো এ নিয়ে জানতে চাইনি। আমার সেই কৌতূহলও হয়নি কখনো। তবে নামটা বেশ ভালো, নামটা দারুণ। আমি উপভোগই করি।’
ডেনিশ দলের সঙ্গে প্রাক্–মৌসুম প্রস্তুতিতে যুক্তরাষ্ট্রের শহর নিউইয়র্ক, শিকাগো, ফ্লোরিডায় গেলেও ওয়াশিংটনে কখনো যাওয়া হয়নি।
ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় সান্তামারিয়া এলাকায় তাঁর জন্ম। বাবা–মা সেখানেই থাকেন। তবে তাঁদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। ওয়াশিংটন নিজ অঞ্চল গামার যুব দলে খেলেছেন। সেখান থেকে ডেনমার্ক গিয়ে বছর চারেক খেলেছেন। এরপর ইন্দোনেশিয়ায় কয়েক মাস খেলা হয়েছে। খেলেছেন মালয়েশিয়াতেও। সর্বশেষ তিন বছর ভিয়েতনামে কাটিয়ে এবার বাংলাদেশে এসেছেন। এসে পেলেন জীবনের তৃতীয় হ্যাটট্রিক। প্রথম হ্যাটট্রিক করেছিলেন ব্রাজিলের স্থানীয় যুব ফুটবলে। দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক ডেনমার্কে প্রথম বিভাগের দলের হয়ে।
ব্রাজিলের ফুটবল নিয়েও আশাবাদী ওয়াশিংটন, ‘ভালোই। এখন তো আসলে নতুন প্রজন্মের সময়। অনেক তরুণ খেলোয়াড় উঠে এসেছে। আশা করি, তরুণেরা ব্রাজিল জাতীয় দলকে সামনে এগিয়ে নেবে।’