নুনিয়েজদের পাশে দাঁড়িয়ে আয়োজক ও সাংবাদিকদের ধুয়ে দিলেন উরুগুয়ের কোচ

উরুগুয়ের কোচ মার্সেলো বিয়েলসাএএফপি

ঘটনাটি ১১ জুলাইয়ের। উরুগুয়ে-কলম্বিয়া সেমিফাইনাল ম্যাচের পর গ্যালারিতে উপস্থিত কলম্বিয়ার দর্শকদের সঙ্গে উরুগুয়ের খেলোয়াড়দের মারামারি বেধে যায়। যা নিয়ে এখন কোপা আমেরিকার ফুটবলাঙ্গন বেশ উত্তপ্ত।

এ ঘটনার তদন্তে নেমেছে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল। আর তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচের আগে খেলোয়াড়দের পাশে দাঁড়িয়ে আয়োজক ও সাংবাদিকদের ধুয়ে দিয়েছেন উরুগুয়ের কোচ মার্সেলো বিয়েলসা।

আরও পড়ুন

সেদিন উরুগুয়ের তারকা ফরোয়ার্ড দারউইন নুনিয়েজ এ মারামারিতে বেশ সক্রিয় ছিলেন। গ্যালারিতে ঢুকে কলম্বিয়ার সমর্থকদের তাক করে একের পর এক ঘুষি মারেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন উরুগুয়ে সেন্টার-ব্যাক রোনাল্ড আরাউহোও।

ম্যাচ শেষে কলম্বিয়ার সমর্থকদের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন উরুগুয়ের খেলোয়াড়েরা
এএফপি

পরে জানা গেছে, উরুগুয়ে দলের খেলোয়াড়দের বেশ কিছু আত্মীয়স্বজন গ্যালারির ওই অংশে ছিলেন। তাঁরা বাজে আচরণের শিকার হয়েছেন, এমন অভিযোগ ওঠার পর থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত।

আরও পড়ুন

তবে ঘটনা যে কারণেই ঘটুক, দর্শকদের সঙ্গে মারামারি করায় উরুগুয়ের খেলোয়াড়েরা হয়তো শাস্তি পেতে পারেন। যদিও উরুগুয়ে কোচ খেলোয়াড়দের কোনো দায় দেখছেন না।

তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচের আগে এক সাংবাদিক শাস্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিয়েলসা,‘যারা নিজেদের রক্ষা করতে গেছে, তারা শাস্তি পাবে কি না, আপনি সেটা জিজ্ঞাসা করছেন? এটা তো কুকর্মে একধরনের সহায়তা, কারণ এই প্রশ্নটা তো অপরাধকেই সাহায্য করছে। জানি না, এখানে উপস্থিত সবাই একইভাবে ভাবছেন কি না। (খেলোয়াড়দের স্বজনদের রক্ষার বিষয়ে) আমার না, এটা আপনাদের সাংবাদিকদের বলা উচিত। আমার এখন ঝুঁকি নিয়ে মুখ খুলতে হচ্ছে।’

তিনি যোগ করেন, ‘যখন আপনি বাড়াবাড়ি করবেন, সহিংস প্রতিক্রিয়া দেখাবেন, অবশ্যই কেউ সহিংসতার পক্ষে থাকবে না। তবে প্রথম যে বিষয়টা দেখতে হবে, তারা কেন এমন প্রতিক্রিয়া দেখাল? বিষয়টি ভিন্নভাবে সামলানোর উপায় ছিল কি না। আপনারা সবাই জানেন, কিন্তু আপনারা চান যে আমরা মুখ খুলি।’

উরুগুয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনও এই ঘটনায় ফুটবলারদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা ঘটনাটির পেছনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকাকে কারণ হিসেবে দেখছে, ‘ঘটনাটি এমন এক জায়গায় ঘটেছে, যেখানে উরুগুয়ের সমর্থক ছিল কম। বেশির ভাগই ছিল ফুটবলারদের পরিবার এবং সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে ফুটবলারদের এই আচরণ অনিবার্য ও সহজাত ছিল।’

এবারের কোপা আমেরিকা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির বেশ কিছু স্টেডিয়াম ও মাঠের মান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। কানাডার বিপক্ষে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচের পর মাঠের ঘাস নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি।

এবার বিয়েলসাও আয়োজকদের প্রতি মনের সব ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন, ‘এখানেই সংবাদ সম্মেলন করে তারা অনেক মিথ্যা বলেছে। তারা বলেছিল পিচ নাকি নিখুঁত, এরপর দেখা গেল মাঠের ঘাস ঠিকঠাক নেই। তারা বলেছে অনুশীলন সুবিধাও নিখুঁত, কিন্তু বলিভিয়া তো অনুশীলনই করতে পারেনি। ওগুলো সব মিথ্যা ছিল, তা প্রমাণের মতো ছবি আমার কাছে আছে। মিথ্যাবাদীদের দল। এরপরই কেবল আমরা কথা বলেছি। যদিও শপথ করেছিলাম কিছুই বলব না, তবুও সবই বলেছি। কথা না বলার জন্য হুমকিও ছিল। স্কালোনি একবার সাহস করে বলেছিল ঘাসের সংযোগটা ঠিকঠাক ছিল না। অথচ এই ভুলটার কথা আমরা সবাই জানতাম।’

আরও পড়ুন