আইরিশদের সামনে প্রেরণা ছিল। গত ২৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম ঘরের মাঠে ম্যাচ দিয়ে ইউরো বাছাইপর্ব শুরু করবে আয়ারল্যান্ড। ফ্রান্সের সামনে জয় ছাড়া আর কি! পয়েন্ট হারানো যাবে না। প্রথমার্ধের খেলায় তা বোঝা যায়নি। এমনকি গোটা ম্যাচে সেই ছাপ ছিল সামান্যই। ফ্রান্স জিতেছে ব্যক্তিগত ঝলকে, বেনজামিন পাভারের অসাধারণ এক গোলে।
রটারডামে ‘বি’ গ্রুপ থেকে অন্য ম্যাচে জিব্রাল্টারকে ৩-০ গোলে হারায় নেদারল্যান্ডস। ডাচদের হয়ে জোড়া গোল করেন নাথান আকে। একটি গোল মেম্ফিস ডিপাইয়ের। ফ্রান্সের কাছে প্রথম ম্যাচে ৪-০ গোলে উড়ে যাওয়া ডাচরা এই জয়ে ২ ম্যাচে মোট ৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে।
২ ম্যাচই জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ফ্রান্স। ১ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রিস টেবিলের দুইয়ে। প্রথম ম্যাচেই হেরে চারে আয়ারল্যান্ড। জিব্রাল্টার ২ ম্যাচে কোনো পয়েন্ট না পেয়ে তলানিতে।
ডাবলিনের আভিভা স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যে কোনো দলই পোস্টে শট রাখতে পারেনি। থিও হার্নান্দেজ, ইব্রাহিমা কোনাতে ও পাভারদের রক্ষণভাগের বিপক্ষে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৪৮তম আয়ারল্যান্ড তা পারবে না এমন ভাবাটা অস্বাভাবিক কিছু না।
কিন্তু কিলিয়ান এমবাপ্পে, কোলো মুয়ানি ও অলিভার জিরুদের আক্রমণভাগের পোস্টে শট রাখতে না পারাটা অবিশ্বাস্য লাগতে পারে। দিদিয়ের দেশমের দল কতটা ছন্দে ছিল সে প্রশ্ন উঠতে পারে আয়ারল্যান্ডের শৃঙ্খলাবদ্ধ খেলা দেখে। জমাট রক্ষণের সঙ্গে নির্ভর করেছে প্রতি আক্রমণের ওপর। কিন্তু রক্ষণেই একটা ভুলে খেতে হয় গোল আর শেষ পর্যন্ত ওই গোলেই হারের ব্যবধান ১-০।
বক্সের মধ্যে জেসন নাইটকে দুর্বল পাস দিয়েছিলেন আইরিশ মিডফিল্ডার জশ কুলেন। সুযোগসন্ধানি পাভার নাইটের সামনে থেকে ছোঁ মেরে বলটা নিয়েই ডান পায়ে যেন কামান দাগলেন! লাফ দিলেও প্রচণ্ড গতিতে ছোটা বলটি ঠেকানোর সামর্থ্য আইরিশ গোলকিপার গ্যাভিন বাজুনুর ছিল না। ১-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে খেলার নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করে ফ্রান্স।
পরের ২০ মিনিটের মধ্যে ফ্রান্সের হয়ে একটি গোলের সুযোগ নষ্ট করেন আদ্রিয়ান রাবিওত। ২৫ গজ দূর থেকে তাঁর শট রুখে দেন বাজুনু। কিন্তু ৮০ মিনিটের পর গর্জে ওঠা স্বাগতিক দর্শকদের সামনে ফ্রান্সকে চেপে ধরে আয়ারল্যান্ড। প্রতি আক্রমণে টানা কয়েক মিনিট তটস্থ রেখেছিল ফ্রান্সের রক্ষণ। স্ট্রাইকার চিয়েদোজি ওগবেনেম জেসন মোলুম্বিরা ফ্রান্সের বক্সের আশপাশ থেকে দূরপাল্লার কয়েকটি শট নেন।
পাভার ও রাবিওতকে তুলে অঁরেলিয়ে চুয়ামেনি ও জুলস কুন্দেকে ৮১ মিনিটে নামান ফ্রান্সের কোচ দেশম। রক্ষণেই ব্যস্ত সময় কেটেছে চুয়ামেনির। ৮৩ মিনিটের পর টানা কয়েকটি কর্নারে ফ্রান্সের ওপর চাপ বিস্তারের ফলটা ৯০ মিনিটে পেয়ে যেতে পারত আয়ারল্যান্ড। কর্নার থেকেই কলিন্সের হেড ফ্রান্সের পোস্টে ঢুকে যেত যদি গোলকিপার মাইক মেনিয়ঁ দেয়াল হয়ে না দাঁড়াতেন। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে অবিশ্বাস্য সেভ করেন।
গোটা ম্যাচে ৩৪ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে শেষ দিকে ভালোই জ্বলে উঠেছিল স্বাগতিকরা। ভালো ফিনিশারের অভাবে গোল পায়নি। পোস্টে রাখতে পেরেছে মাত্র ২টি শট। ফ্রান্স ৪টি রাখলেও ৬৬৭ পাস খেলে মাত্র ১ গোল নিশ্চয়ই দেশমের ভালো লাগবে না।
অন্য ম্যাচে আজারবাইজানকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে সুইডেন। আলবেনিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে পোল্যান্ড। বুলগেরিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে হাঙ্গেরি।