লাল, হলুদের সঙ্গে নীল কার্ড—ফুটবলে নতুন রং নিয়ে নানা ভাবনা
লাল, হলুদের সঙ্গে নীল কার্ডও যুক্ত হচ্ছে ফুটবলে—বৃহস্পতিবার এমন খবরই দিয়েছিল কয়েকটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম। এ বিষয়ে আজ শুক্রবার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবনা দেওয়া হতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয় খবরে। তবে ফিফা জানিয়েছে, শীর্ষ প্রতিযোগিতার ফুটবলে এখনই নীল কার্ড নয়।
টেলিগ্রাফের খবর অনুসারে, ফুটবলের আইন প্রণয়নকারী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড (আইএফএবি) আগামী মৌসুম থেকে লাল ও হলুদ কার্ডের পাশাপাশি নীল কার্ড চালু করতে চায়। প্রতিবেদনটিতে জানানো হয়, শীর্ষস্তরের ফুটবলে নীল কার্ড ব্যবহার করা হবে না। ইংল্যান্ডের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) রাজি হলে এফএ কাপ কিংবা লিগ কাপের মতো একটু নিচের দিকের টুর্নামেন্টে নীল কার্ড পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হতে পারে।
এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স–এ ফিফার পেজে (ফিফা মিডিয়া) এ নিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়, ‘শীর্ষস্তরের ফুটবলে নীল কার্ড ব্যবহার নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো ভুল ও অগ্রিম। এমন কোনো পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করতে হলে সেটি নিচের দিকের স্তরে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত—গত ১ মার্চ আইএফএবির এজিএমে তুলে ধরা নিজেদের এই অবস্থান আবারও পরিষ্কার করে জানাচ্ছে ফিফা।’
নীল কার্ড ব্যবহার করা হবে হলুদ ও লালের মাঝামাঝি অপরাধের ক্ষেত্রে। বাজে ব্যবহার কিংবা নিষ্ঠুর ফাউলের ক্ষেত্রে খেলোয়াড়দের নীল কার্ড দেখানো হবে এবং এর শাস্তি হিসেবে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়কে ১০ মিনিটের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হবে। এই সাজার মেয়াদ পূর্ণ করে মাঠে ফেরার পর একই খেলোয়াড় যদি আবারও নীল কার্ড দেখেন, তবে তাঁকে লাল কার্ড দেখিয়ে বাকি ম্যাচের জন্য বের করে দেওয়া হবে। কিংবা একটি হলুদ কার্ড ও একটি নীল কার্ডের যোগফলও হবে লাল কার্ড।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পরীক্ষামূলকভাবে নীল কার্ড চালুর সুপারিশ করবে আইএফএবি, আর সেটা আজই। মূলত ম্যাচে ‘অংশগ্রহণকারীদের আচরণ’ আরও উন্নত করার ভাবনা থেকেই নীল কার্ড পদ্ধতির উদ্ভাবন।
আইএফএবি আগেই জানিয়েছে, তৃণমূল ফুটবলে নীল কার্ডের পরীক্ষামূলক ব্যবহারে তারা সফল হয়েছে এবং এই কার্ডের ব্যবহার তারা আরও ছড়িয়ে দিতে চায়। ইংল্যান্ডের তৃণমূল ফুটবলেও এই কার্ডের পরীক্ষামূলক ব্যবহার করেছে আইএফএবি।
এফএ কাপেও নীল কার্ড পরীক্ষামুলকভাবে চালু করা যায় কি না, ইংল্যান্ড এফএ তা ভেবে দেখছে বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান। তবে ফিফা আগে থেকেই বলে আসছে, উঁচু স্তরের প্রতিযোগিতায় এই পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করলে সেটি ‘অপরিপক্ব’ সিদ্ধান্ত হবে। আর এই প্রস্তাব ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফার সমর্থনও পায়নি। তাই অন্যান্য খেলাধুলায় ‘সিন–বিনস’ নামে পরিচিতি পাওয়া এই কার্ড আগামী ইউরো কিংবা চ্যাম্পিয়নস লিগেও দেখার সম্ভাবনা নেই।
উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিন সিন–বিনসকে ‘ফুটবলের মৃত্যু’ বলেছেন। এমনিতেই ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) প্রযুক্তি নিয়ে কিছুদিন পরপরই বিতর্ক হচ্ছে। এর মধ্যে উঁচু স্তরে নীল কার্ড চালুর ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না ফুটবলের সংস্থাগুলো।
এফএ এর প্রধান নির্বাহী মার্ক বুলিংহাম আইএফএবির বোর্ডেও আছেন। তিনি অবশ্য এই উদ্ভাবনের পক্ষে, ‘তৃণমূল পর্যায়ে সিন–বিনসের সফলতা আসলে যতটা (সমস্যা) নিরাময়ের লক্ষ্যে, তার চেয়ে বেশি প্রতিরোধ। খেলোয়াড়েরা (ম্যাচে) একটি পর্যায়ে গিয়ে টের পাবে, সিন–বিনস থাকায় সীমালঙ্ঘন করা যাবে না। আশা করি, (উঁচু স্তরেও) পরিবর্তনটা আসবে।’ আইএফএবিতে এ নিয়ে মন্তব্য চেয়ে পায়নি গার্ডিয়ান।