চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সার ৫০০, ৬০০, ৭০০: মেসি, রাকিতিচ ও লেভা

জোড়া গোলের পর লেভানডফস্কির উদ্‌যাপনএএফপি

‘আগে জানলে, তাকে তুলে নিতাম না।’

কথাটা হান্সি ফ্লিকের, সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন মজা করে। কিন্তু রবার্ট লেভানডফস্কির জন্য ব্যাপারটা এত হালকাও নয়। ফ্লিক তাঁকে মাঠ থেকে তুলে না নিলে হয়তো গতকাল রাতেই বসতেন লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পাশে।

আরও পড়ুন

চ্যাম্পিয়নস লিগে রেড স্টার বেলগ্রেডের মাঠে গতকাল রাতে কী ঘটেছে, তা নিশ্চয়ই জানা। সার্বিয়ান ক্লাবটিকে ৫–২ গোলে বিধ্বস্ত করেছে বার্সা। ৪৩ এবং ৫৩ মিনিটে গোল করেন বার্সার পোলিশ তারকা লেভানডফস্কি। ৭৮ মিনিটে তাঁকে তুলে নিয়ে তরুণ ফরোয়ার্ড পাউ ভিক্তরকে মাঠে নামান ফ্লিক। জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে জার্মান কোচকে জানানো হয়, লেভা আর একটি গোল করলেই চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসে তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ১০০ গোলের অভিজাত ক্লাবে নাম লেখাতেন। এই ক্লাবের পুরোনো দুই সদস্যের নাম আগেই বলা হয়েছে। সে যা–ই হোক, তথ্যটি জানার পর লেভাকে তুলে নেওয়ার জন্য মজা করে ওই কথাটি বলেন বার্সা কোচ।

লেভা শেষ পর্যন্ত থাকলে গোল পেতেও পারতেন, আবারও না–ও পেতে পারতেন। তবে এরই মধ্যে সব মিলিয়ে ১৬ ম্যাচে ১৯ গোল করে এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত বার্সার সর্বোচ্চ গোলদাতা এই পোলিশ তারকাই। রেড স্টারের বিপক্ষে গোল দুটি চ্যাম্পিয়নস লিগে তাঁর ৯৮তম ও ৯৯তম। ১২৪ ম্যাচ খেলে ম্যাচপ্রতি গড়ে ০.৮ গড়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের এ পথ পর্যন্ত এসেছেন লেভা। ১৮৩ ম্যাচে ১৪০ গোল নিয়ে সবার ওপরে থাকা রোনালদোর ম্যাচপ্রতি গোল ০.৭৭। মেসি ১৬৩ ম্যাচে ১২৯ গোল নিয়ে দুইয়ে। ম্যাচপ্রতি তাঁর গোল ০.৭৯।

অর্থাৎ ম্যাচপ্রতি গোলে লেভা দুই কিংবদন্তির চেয়ে এগিয়ে। ৩৯ বছর বয়সী রোনালদো এখন সৌদি ক্লাব আল নাসরে। ৩৭ বছর বয়সী মেসি খেলছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে। অবিশ্বাস্য কিছু না ঘটলে এই বয়সে ইউরোপে আর ফেরার সম্ভাবনা নেই তাঁদের। কিন্তু ৩৬ বছর বয়সী লেভার শুধু চ্যাম্পিয়নস লিগে গোলের সেঞ্চুরি নয়, মেসি–রোনালদোর সঙ্গে ব্যবধানও বেশ কমিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকছে।

আরও পড়ুন

রেড স্টারের বিপক্ষে একটি মাইলফলকের দেখাও পেয়েছেন লেভা। তাঁর দ্বিতীয় গোলটি ছিল ইউরোপের শীর্ষ লিগে বার্সার ৭০০তম গোল। রাফিনিয়া ও ফেরমিন লোপেজ পরে আরও দুটি গোল করেন।

বার্সার ৫০০তম গোলটি লিওনেল মেসির। ২০১৪ সালে ৩০ সেপ্টেম্বর করেছিলেন পিএসজির বিপক্ষে। চার বছর পর ইভান রাকিতিচের কাছ থেকে ৬০০তম গোলটি পায় কাতালান ক্লাবটি।

৬৫ বছর আগে ১৯৫৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ইউরোপিয়ান কাপে (বর্তমানে চ্যাম্পিয়নস লিগ) প্রথম মাঠে নেমেছিল বার্সা। বুলগেরিয়ান ক্লাব সিএসকেএ সোফিয়ার বিপক্ষে ২–২ গোলে ড্রয়ের সে ম্যাচে বার্সার প্রথম গোলটি করেছিলেন প্রয়াত ডিফেন্ডার হোয়ান সেগারা। মজার ব্যাপার, এই প্রতিযোগিতায় বার্সার ১০০তম গোলটিও এক বুলগেরিয়ানের। তাঁকে কিংবদন্তি বলাই ভালো—রিস্তো স্টইচকভ। ১৯৯৩ সালে শেষ ষোলোর ফিরতি লেগে ১০০তম গোলটি করেছিলেন ১৯৯৪ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোল করে যৌথভাবে গোল্ডেন বুট বিজয়ী। সেদিনের তারিখটা মিলে যায় বার্সার প্রথম গোলের তারিখের সঙ্গে—৩ নভেম্বর। শুধু মাস দুটি আলাদা।

চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সার ৭০০তম গোল এনে দেন লেভা
এএফপি

বার্সার ২০০তম গোলেও ‘৩’ সংখ্যাটি আছে, তবে সেটা ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০০ সালে। লিডসের বিপক্ষে বার্সার হয়ে ২০০তম গোলটি করেছিলেন সাবেক ডাচ ফরোয়ার্ড প্যাট্রিক ক্লুইভার্ট। ৬ বছর পর ২২ ফেব্রুয়ারি স্যামুয়েল ইতোর কাছ থেকে ৩০০তম গোলটি পায় বার্সা। এর চার বছর পর ২০১০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ডেভিড ভিয়ার কাছ থেকে ৪০০তম গোলটি পায় তারা। বার্সার ৫০০তম গোলটি লিওনেল মেসির। ২০১৪ সালে ৩০ সেপ্টেম্বর করেছিলেন পিএসজির বিপক্ষে। চার বছর পর ইভান রাকিতিচের কাছ থেকে ৬০০তম গোলটি পায় কাতালান ক্লাবটি।