সাবিনাদের ফ্রিজ পাওয়ার দিনে যে আশা বাটলারের
টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে সংবর্ধনা আর উপহারের জোয়ারে ভাসছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। সরকার, বাফুফেসহ বিভিন্ন তরফে প্রচুর আর্থিক পুরস্কার এরই মধ্যে নিশ্চিত হয়েছে সাবিনা–সানজিদাদের জন্য। গতকাল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে নারী ফুটবল দলের জন্য এক কোটি টাকা আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে।
বিভিন্ন করপোরেট হাউসের কাছ থেকেও তাঁরা পাচ্ছেন সংবর্ধনা ও উপহার। আজ যেমন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের প্রত্যেক সদস্যকে একটি করে ফ্রিজ উপহার দিয়েছে ইলেকট্রনিক সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন।
আজ বাফুফে ভবনে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নারী ফুটবল দলের হাতে এই উপহার তুলে দেওয়া হয়। ওয়ালটনের উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে আলোচনা হয়েছে মেয়েদের ফুটবলের আরও অনেক কিছু নিয়েই।
মেয়েদের ফুটবল লিগ আর প্রতিশ্রুত ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজন নিয়ে আশা প্রকাশ করেছেন বাফুফের নারী ফুটবল উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ, ‘আগামী বছর যেন মেয়েদের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজিত হতে পারে, আমরা সেটি নিয়ে ভাবছি। মেয়েদের প্রিমিয়ার লিগ যেন আরও জমজমাট হতে পারে, আশা করব সে জন্য দেশের শীর্ষ ক্লাবগুলো এবার এগিয়ে আসবে।’
সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের প্রধান কোচ পিটার বাটলারের কথা, ‘ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট—মেয়েদের কথাটা মনে রাখতে হবে। তাদের এ সাফল্যে অনেকেরই অবদান আছে। সাফ জিতে আসার পর আমাদের অনেকেই উপহার দিচ্ছেন, অভিনন্দিত করছেন। এটা খুব ভালো, এতে মেয়েরা অনুপ্রাণিত হবে। তবে ওদের মাটিতে পা রাখতে হবে।’
বাটলার এর সঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘আরও একটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে, একটি ফ্রিজ বা অন্য উপহার বাজারে গিয়ে আপনি কিনতে পারবেন। কিন্তু আপনি বাজার থেকে এক বাক্স সততা কিংবা নম্রতা বা শ্রদ্ধা কিনতে পারবেন না। এ ব্যাপারগুলো সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। সবাইকে মাটিতে পা রাখতে হবে।’
সাফের সময় কোচ বাটলারের সঙ্গে খেলোয়াড়দের একটু দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। বাটলার সিনিয়র ফুটবলারদের পছন্দ করেন না, তাঁদের খেলাতে চান না, নারী ফুটবলারদের কেউ কেউ এমন অভিযোগ তুলেছেন। তবে সব বিতর্ক পেছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন বাটলারের দলই। তারপরও নারী দলের কোচ হিসেবে তাঁকে রাখা হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত এখনো নেয়নি বাফুফে।
এ ব্যাপারে নারী ফুটবল উইংয়ের প্রধান বলেছেন, ‘বাটলারের সঙ্গে বাফুফের চুক্তি আছে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এখনো কিছু সময় বাকি। আমরা বিষয়টি নিয়ে পরে ভাবব।’
অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ওয়ালটনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘সংবর্ধনা পেতে সবারই ভালো লাগে, আমাদের সবারই ভালো লাগছে। তবে পৃষ্ঠপোষকেরা যদি নারী দলের ফুটবলারদের ব্যক্তিগত পৃষ্ঠপোষক হিসেবে এগিয়ে আসেন, তাহলে আমরা উপকৃত হই, দেশের ফুটবলও উপকৃত হয়।’