ফ্রান্সের ম্যাচের আগে দেশের নির্বাচন ও রাজনীতি নিয়ে এমবাপ্পের মন্তব্যে তোলপাড়
আজ স্থানীয় সময় রাত নয়টায় ডুসেলডর্ফে ইউরো ২৪ চ্যাম্পিয়নশিপে মুখোমুখি হবে ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়া। গ্রুপ ‘ডি’-তে দুই দলেরই প্রথম ম্যাচ। আজ রাতে খেলা শুরুর আগেই কিলিয়ান এমবাপ্পের একটি কথা জার্মানি ও ফরাসি সংবাদমাধ্যমগুলো গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে।
কিলিয়ান এমবাপ্পে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে উদ্বোধনী ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। সম্প্রতি পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়া এমবাপ্পে বলেছেন তিনি ‘চরমপন্থী ও একদেশদর্শী ধারণার বিরোধী’।
এমবাপ্পে তাঁর প্রজন্মের কাছে ভোট দিতে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এখন তো আমরা দেখতে পাচ্ছি চরমপন্থীরা ক্ষমতা দখলের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের সুযোগটা আমাদের নেওয়া উচিত। আশা করছি ৭ জুলাইয়ের পরও গর্বের সঙ্গে এই জার্সি পরতে পারব।’
কিলিয়ান এমবাপ্পের এই অবস্থানকে সমর্থন দিয়েছেন ফরাসি জাতীয় ফুটবল দলের আরও কিছু তারকা খেলোয়াড়।
৯ জুন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচনে ডানপন্থী কট্টর জাতীয়তাবাদী দল মেরি লিপেনের রাসেম্বলমেন্ট ন্যাশনাল (আরএন) সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়ী হয়। এরপর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন আহ্বান করার পর থেকে ফ্রান্সে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ফরাসি পার্লামেন্টের নতুন নির্বাচন হবে ৩০ জুন এবং ৭ জুলাই। আর ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলা হবে ১৪ জুলাই। ফ্রান্স জাতীয় ফুটবল দলের লক্ষ্য ১৪ জুলাই ফাইনাল খেলা।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলেছে, কিলিয়ান এমবাপ্পেকে ঘিরে অন্য ফরাসি ফুটবল তারকারা স্পষ্টতই ডানপন্থী কট্টরবাদী দলটির বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান নিচ্ছেন এবং তাঁদের প্রভাব কাজে লাগিয়ে ফরাসি তরুণদের ভোট দিতে যাওয়াকে উৎসাহিত করছেন।
ফরাসি ফুটবল ফেডারেশনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফুটবল ফেডারেশন নির্বাচন নিয়ে খেলোয়াড়দের এই মতামত সমর্থনও করে। ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশমও বলেছে, মিডিয়ার উচিত এমবাপ্পে এবং তাঁর সতীর্থদের এই মুহূর্তে এ বিষয়ে চাপের মধ্যে না রাখা। তিন টুর্নামেন্টের পর এ বিষয়ে কথা বলা ভালো বলে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু সংবাদমাধ্যমগুলো বলেছে, তখন তা অনেক দেরি হয়ে যেতে পারে।
কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ফরাসি খেলোয়াড় উসমান দেম্বেলে, অলিভিয়ের জিরু ও বেঞ্জামিন পাভার ফরাসিদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। তাঁরা বলেছেন, ‘পরিস্থিতি খুবই দুঃখজনক এবং খারাপ।’
উল্লেখ্য, ফ্রান্সের রাসেম্বলমেন্ট ন্যাশনাল দলটি ইতিমধ্যেই শক্তিশালী দল হিসেবে ফ্রান্সে তাদের অবস্থান গড়ে নিয়েছে। ৯ জুন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে কট্টর রাসেম্বলমেন্ট ন্যাশনাল দলটি ৩১ শতাংশ ভোট পেয়ে নিজেদের শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। এর পরপরই প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। কট্টর রাসেম্বলমেন্ট ন্যাশনাল দলটি বর্ণবাদী, অভিবাসীও ইসলামবিদ্বেষী দল হিসেবে বহুল পরিচিত।