ফিলিপসের বাড়তি ওজন নিয়ে মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন গার্দিওলা
ইংল্যান্ডের হয়ে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ খেলে ফেরার পর ক্যালভিন ফিলিপসের বাড়তি ওজন নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন ম্যানচেস্টার সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা। প্রায় ১৫ মাস হতে চললেও বিষয়টি নিয়ে এখনো আলোচনা হয়। নিজ দলের খেলোয়াড়কে নিয়ে সেই মন্তব্যের জন্য অবশেষে ক্ষমা চাইলেন গার্দিওলা।
২৮ বছর বয়সী ফিলিপস গার্দিওলার দলে একরকম ব্রাত্য হয়ে পড়েছিলেন। এ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সিটির হয়ে ১০ ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ পান, এর মধ্যে মাত্র ২ ম্যাচে ছিলেন শুরুর একাদশে। অনেকটা বাধ্য হয়েই গত মাসের শেষ সপ্তাহে এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ধারে যোগ দেন ওয়েস্ট হাম ইউনাইটেডে। লন্ডনের ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার পর ৪ ম্যাচের সব কটিতে মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছেন।
ওয়েস্ট হামে নিয়মিত সুযোগ পাওয়া ফিলিপস সিটিতে উপেক্ষিত থাকা নিয়ে সম্প্রতি বলেছেন, ‘বিশ্বকাপের পরের সময়টা আমার জন্য সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন ছিল, যখন পেপ (গার্দিওলা) এসে বললেন, আমার ওজন বেড়ে গেছে। এটা নিয়ে আমি দ্বিমত পোষণ করিনি। তবে তাঁর মন্তব্যে আমার আত্মবিশ্বাসে বড় চোট লেগেছিল।’
ফিলিপসের বাড়তি ওজন প্রকাশ্যে আনা নিয়ে কোনো অনুশোচনা আছে কি না—কাল রাতে সংবাদ সম্মেলনে গার্দিওলাকে এই প্রশ্ন করা হয়। সেই মন্তব্য নিয়ে গার্দিওলা বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি দুঃখিত। ওর (ফিলিপসের) কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। তবে মন্তব্যটি করার আগে ওর সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা না বলে আমি এখানে (সংবাদ সম্মেলনে) কখনোই কিছু বলি না।’
ডাগআউট থেকে খেলোয়াড়দের উদ্দেশে প্রায়ই চিৎকার-চেঁচামেচি করেন গার্দিওলা। পরে নিজেকে কীভাবে সামলান, সাংবাদিকেরা কাল এ ব্যাপারেও তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন। জবাবে ৫৩ বছর বয়সী স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘এটা আমার মেজাজের ওপর নির্ভর করে। শুনুন, বার্সেলোনায় থাকতে আমি হলুদ কার্ড দেখায় রেকর্ড গড়েছিলাম। প্রতিবারই (হলুদ কার্ড দেখার) একটাই কারণ ছিল—কথা বলা, কথা বলা এবং কথা বলা। কখনো কখনো আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করি আবার কখনো পাগলাটে আচরণ করি। লোকে বলে, “আহ, সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।” খেলোয়াড় হিসেবেও আমি এ রকম স্বভাবের ছিলাম।’
২০২২ সালের জুলাইয়ে ৫ কোটি ইউরোয় (৫৭৪ কোটি টাকা) লিডস ইউনাইটেড ছেড়ে ম্যানচেস্টার সিটিতে নাম লেখান ফিলিপস। কিন্তু গার্দিওলার একাদশে শুরু থেকেই তিনি ছিলেন উপেক্ষিত। কাতার বিশ্বকাপের বিরতি শেষে ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবল মাঠে ফেরার পর লিভারপুলের বিপক্ষে ইংলিশ লিগ কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলে সিটি। সে ম্যাচেও ফিলিপসকে দলে রাখেননি গার্দিওলা।
ম্যাচ শেষে স্বাভাবিকভাবেই সাংবাদিকেরা গার্দিওলার কাছে ফিলিপসকে বাদ দেওয়ার কারণ জানতে চান। জবাবে তিনি বিস্ফোরক তথ্য দেন, ‘আপনারা ভাবছেন চোটের কারণে ওকে বাদ দিয়েছি। সে রকম কিছু নয়। আসলে ও (বিশ্বকাপ থেকে) ওজন বাড়িয়ে এসেছে। খেলার মতো অবস্থায় নেই।’
কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হেরে ছিটকে পড়ে ইংল্যান্ড। পুরো আসরে ফিলিপস মাত্র ৪০ মিনিট খেলার সুযোগ পান। ইংল্যান্ডের খেলা পাঁচ ম্যাচের তিনটিতেই বেঞ্চ গরম করতে হয় তাঁকে।