গাছে উঠে আত্মহত্যার চেষ্টা, বুঝিয়ে নামানোর চেষ্টায় সুয়ারেজ
ফুটবলের বাইরে বিভিন্ন সময় নানা ধরনের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে সংবাদের শিরোনাম হতে দেখা যায় লুইস সুয়ারজকে। কখনো কামড় দিয়ে আবার কখনো কোচকে তুলাধোনা করে আলোচনায় এসেছেন তিনি। তবে সেই সুয়ারেজ এবার সংবাদের শিরোনাম হলেন দারুণ এক ইতিবাচক কারণে। আত্মহত্যা করতে যাওয়া এক ব্যক্তিকে সিদ্ধান্ত বদলাতে সাহায্য করেছেন উরুগুয়ের এই কিংবদন্তি ফুটবলার।
ঘটনাটি ঘটেছে উরুগুয়ের স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকেলের মধ্যে। জানা গেছে, শুক্রবার রাতে উরুগুয়ের কানেলোনেস ডিপার্টমেন্টের সিউদাদ দে লা কস্তা শহরে ৪৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ৬ মিটার উঁচ একটি গাছে উঠে আত্মহত্যার হুমকি দিতে শুরু করেন। লোকটির দাবি, যদি তাঁর সঙ্গী সেখানে এসে দেখা না দেন, তবে তিনি আত্মহত্যা করবেন।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে চলেছে নানা নাটকীয়তা। এ সময় জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী রিপাবলিকান গার্ডের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে উৎসুক অনেকেও জড়ো হন। উরুগুয়ের ফুটবল তারকা লুইস সুয়ারেজের বাড়ি কাছাকাছিই। স্ত্রী সোফি বালবিকে নিয়ে হাঁটতে বের হওয়ার পর একপর্যায়ে সুয়ারেজও সেখানে উপস্থিত হন।
পুলিশের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, স্থানীয় সময় আনুমানিক রাত ১১টার দিকে ঘটনাটির সূত্রপাত হয়। আত্মহত্যা করতে যাওয়া লোকটি বলছিলেন, তাঁর সঙ্গী যদি ঘটনাস্থলে না আসেন, তবে তিনি নিজের জীবন দিয়ে নেবেন। তাঁর গলায় দড়ি প্যাঁচানো ছিল। খবর পেয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে তাঁকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।
রাত গড়িয়ে সকাল হওয়ার পর সেখানে উপস্থিতির সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। অনেকেই আত্মহত্যার হুমকি দেওয়া ব্যক্তিকে নেমে আসার আহবান জানান। একপর্যায়ে সুয়ারেজও এক এনজিওকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন।
সামাজিক মনোবিজ্ঞান নিয়ে কাজ করা একটি এনজিওর সদস্য আন্দ্রেয়া সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘সুপরিচিত উরুগুইয়ান খেলোয়াড় সুয়ারেজ আমাদের কাছে এসেছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখার সময় আমরা যা করেছিলাম, তা হলো লোকটির সঙ্গে সহানুভূতিশীলতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে কথা বলার চেষ্টা, যাতে ব্যাপারটা দীর্ঘস্থায়ী না হয়। যদিও গতকাল (আগের দিন) থেকেই লোকটি নিজের জীবনের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল।’
শেষ পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টা চেষ্টার পর স্থানীয় সময় শনিবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে লোকটি গাছ থেকে নিচে নেমে আসতে রাজি হন। নিচে নামার পর তাঁকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পারিবারিক সহিংসতা বিভাগে নেওয়া হয়েছে, যেখানে তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা যাচাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।